বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ছিল না অগ্নি শনাক্তকরণ ব্যবস্থা: ফায়ার সার্ভিস

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১৯ অক্টোবর, ২০২৫, ০৭:৫৩ পিএম
বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ছিল না অগ্নি শনাক্তকরণ ব্যবস্থা: ফায়ার সার্ভিস

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে অগ্নি শনাক্তকরণ ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা না থাকায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। সংস্থাটির পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী জানান, যদি অগ্নি শনাক্তকরণ (ফায়ার ডিটেকশন) ও প্রতিরোধ (প্রটেকশন) সিস্টেম থাকত, তবে এমন বড় বিপর্যয় হতো না।

রোববার (১৯ অক্টোবর) বিকেল ৫টার দিকে বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটের সামনে ফায়ার সার্ভিসের কার্যক্রম শেষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, কার্গো ভিলেজের কাস্টমস হাউস অংশেই আগুনের সূত্রপাত ঘটে। ভবনের ভেতরে প্রচুর দাহ্য ও বিপজ্জনক উপাদান ছিল, ফলে দাহ্য লোড বেড়ে যায় এবং নির্বাপণে দীর্ঘ সময় লাগে।

লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম বলেন, “ভবনে কোনো ফায়ার ডিটেকশন বা প্রটেকশন সিস্টেম ছিল না। এগুলো থাকলে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটতো না।” তিনি জানান, আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের মোট ৩৭টি ইউনিট কাজ করেছে। ভবনটি স্টিল স্ট্রাকচারে নির্মিত হওয়ায় তাপ দীর্ঘ সময় ধরে শোষিত ছিল, যা নির্বাপণ প্রক্রিয়াকে কঠিন করে তোলে।

আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের সময় লেগেছে প্রায় সাড়ে ২৬ ঘণ্টা। শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুর আড়াইটার দিকে আগুন লাগার পর রাতভর কাজ করে রোববার সকালে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে ভবনের ভেতর থেকে এখনো ধোঁয়া বের হচ্ছে। তাজুল ইসলাম বলেন, “ভবনের তাপমাত্রা অনেক বেশি থাকায় বাইরে থেকে ধোঁয়া দেখা যাচ্ছে, তবে নতুন করে আগুন লাগার আশঙ্কা নেই। চারটি ইউনিট সতর্ক অবস্থানে থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত ধোঁয়া দেখা যায়।”

ফায়ার সার্ভিস জানায়, কার্গো ভিলেজে আগুন নেভাতে বিলম্বের পাঁচটি প্রধান কারণ ছিল—ভবনের ভেতরে উচ্চমাত্রার দাহ্য পদার্থ, স্টিল স্ট্রাকচারে তাপ ধরে থাকা, গাদাগাদি ও অপরিষ্কার পরিবেশ, অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি, এবং সংকীর্ণ কম্পার্টমেন্টে প্রবেশে বাধা।

লে. কর্নেল তাজুল ইসলাম জানান, অগ্নিকাণ্ডে ফায়ার সার্ভিসের দুই সদস্য ও আনসার বাহিনীর কয়েকজন আহত হয়েছেন। ভবনের বিভিন্ন স্থানে ফাটল দেখা গেছে এবং কলাম দুর্বল হয়ে পড়েছে। তিনি বলেন, “তাপমাত্রা ও কাঠামোগত ক্ষতি বিবেচনায় ভবনটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ। আমরা কর্তৃপক্ষকে জরিপ করার পরামর্শ দিয়েছি।”

ফায়ার সার্ভিস আরও জানায়, ভেতরে থাকা কিছু কেমিক্যালজাত পদার্থ ও ওষুধ থেকে রাসায়নিক প্রতিক্রিয়া হতে পারে, তবে মিরপুরের কেমিক্যাল গোডাউনের মতো ভয়াবহতা দেখা যায়নি।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে