সিলেট নগরীতে ব্যাটারি চালিত যানবাহন চলাচল বন্ধের সিদ্ধান্তকে ‘সম্পূর্ণ অযৌক্তিক’ বলে দাবি করেছে রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়ন, সিলেট জেলা শাখা।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এ দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির আহ্বায়ক মাসরুখ জলিল। তিনি বলেন,
“ব্যাটারি চালিত রিকশা একটি জৈব জ্বালানিবিহীন, পরিবেশবান্ধব বাহন। শুধু সিলেট মহানগরীতেই প্রায় ৩০ হাজার শ্রমিক এই পেশার সঙ্গে যুক্ত। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় এসব রিকশা এম্বুলেন্সের ভূমিকা পালন করেছে। আন্দোলনকারীদের সহায়তা করতে গিয়ে ২৪ জন রিকশা চালক শহীদ হয়েছেন।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, “আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগে প্যাডেলের পরিবর্তে ব্যাটারি ব্যবহৃত হওয়ায় কিছু মহল অপপ্রচার চালাচ্ছে। অথচ প্রশাসন শ্রমিকদের উচ্ছেদ করে তাদের রুটি-রুজি বন্ধের চেষ্টা করছে।”
সংবাদ সম্মেলনে মাসরুখ জলিল ১২ দফা দাবি তুলে ধরেন এবং বলেন, এসব দাবি আদায়ে আগামী মঙ্গলবার সকাল ১১টায় সিলেট মহানগরীর চৌহাট্টা পয়েন্টে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সভাপতি কমরেড আব্দুল্লাহ ক্বাফি রতন।
সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় নেতারাও এতে অংশ নেবেন।
সংগঠনের ১২ দফা দাবি: ব্যাটারি চালিত যানবাহন চলাচল বন্ধের আদেশ প্রত্যাহার করা এবং আটককৃত যানবাহন ফেরত দেওয়া। যেসব গ্যারেজের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে, তা পুনঃসংযোগ দেওয়া। বিআরটিএ কর্তৃক দ্রুত নীতিমালা প্রণয়ন ও যানবাহনের লাইসেন্স প্রদান। লাইসেন্স প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত নগরীর গলি ও প্রয়োজনীয় সড়কে চলাচলের অনুমতি দেওয়া। সুশৃঙ্খল সড়কব্যবস্থা গঠনে সকল অংশীজনের সমন্বয়ে কমিটি গঠন। জরিপের মাধ্যমে এলাকাভিত্তিক অটোরিকশার সংখ্যা ও মালিকানা নির্ধারণ। শ্রমিক নেতা আবু জাফরসহ গ্রেফতারকৃত শ্রমিকদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহার। সড়ক উপযোগী মডেল সবার জন্য উন্মুক্ত করে যানবাহনের আধুনিকায়ন। শ্রমিকদের ওপর জুলুম-নির্যাতন ও চাঁদাবাজি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া। ব্যাটারি চালিত যানবাহন গ্যারেজের ট্রেড লাইসেন্স প্রদান। রিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক ও সাইকেলের জন্য পর্যায়ক্রমে সব সড়কে সার্ভিস লেন নির্মাণ। শ্রমিকদের জীবিকা সুরক্ষায় শ্রম সংস্কার কমিশনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন এবং রিকশা-ভ্যান-ইজিবাইক শ্রমিকদের নাগরিক অধিকার ও সামাজিক মর্যাদা নিশ্চিত করা। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম নাদিম, চা শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়নের সংগঠক মনীষা ওয়াহিদ প্রমুখ।