বিলগঞ্জে হাজী ছামুছুদ্দিন এতিমখানা ও মসজিদের নামিরা উদ্বোধন

এফএনএস ( মো: রাজিবুল ইসলাম রক্তিম; বগুড়া) : | প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর, ২০২৫, ০৬:০২ পিএম
বিলগঞ্জে হাজী ছামুছুদ্দিন এতিমখানা ও মসজিদের নামিরা উদ্বোধন

সোনারগাঁও উপজেলার মোগড়াপাড়া ইউনিয়নের কাবিলগঞ্জ গ্রামে শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) এক ধর্মীয় ও সামাজিক পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় হাজী মোহাম্মদ ছামুছুদ্দিন এতিমখানা মাদ্রাসা ও মসজিদে নামিরা উদ্বোধন অনুষ্ঠান। এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশিত এই ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন মরহুম হাজী মোহাম্মদ ছামুছুদ্দিনের বড় ছেলে হাজী কুতুবউদ্দিন, মেজো ছেলে হাজী আশরাফ উদ্দিন ও ছোট ছেলে হাজী শাহাবুদ্দিন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাজী ছামুছুদ্দিন পরিবারের অন্যান্য সদস্যবৃন্দ, স্থানীয় মসজিদ কমিটির নেতৃবৃন্দ, গণ্যমান্য ব্যক্তি, যুবসমাজ, শিক্ষার্থী, ধর্মপ্রাণ মুসল্লি ও কাবিলগঞ্জ গ্রামের অসংখ্য মানুষ। হাজী ছামুছুদ্দিন এতিমখানা ও মসজিদে নামিরা উদ্বোধনের পর বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়-যেখানে দেশ, জাতি, মুসলিম উম্মাহ ও এলাকাবাসীর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। একটি মসজিদ প্রতিষ্ঠা মানেই সমাজে শান্তি, ন্যায় ও কল্যাণ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ। হাজী মোহাম্মদ ছামুছুদ্দিন ও তাঁর পরিবারের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে কাবিলগঞ্জসহ পুরো এলাকাবাসীর জন্য আশীর্বাদস্বরূপ।

হাজী ছামুছুদ্দিন ছিলেন কাবিলগঞ্জ এলাকার একজন সমাজসেবক ও দানশীল ব্যক্তিত্ব। তাঁর স্মৃতিকে ধারণ করে সন্তানেরা আজও মানবসেবার পথেই এগিয়ে চলেছেন। নতুন এই মাদ্রাসা ও মসজিদে ধর্মীয় শিক্ষা, নৈতিকতা ও সমাজসেবার আদর্শে নতুন প্রজন্মকে গড়ে তোলা লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই এমন উদ্যোগ হাতে নিয়েছে হাজী ছামসুদ্দিনের সন্তানেরা। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, আমরা আশা করি এই প্রতিষ্ঠান শুধু নামাজ বা দোয়ার স্থান নয়, বরং এখান থেকে ইসলামি শিক্ষা ও মানবতার বাণী ছড়িয়ে পড়বে।

মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের জন্য আধুনিক সুযোগ-সুবিধাসহ আবাসন ব্যবস্থা এবং স্থানীয় এতিম শিশুদের জন্য বিনামূল্যে শিক্ষার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে এই প্রতিষ্ঠানে হিফজুল কোরআন শাখা চালু করা হবে বলেও জানানো হয়।

এলাকাবাসীর দোয়া ও আশীর্বাদ নিয়ে অনুষ্ঠানের এক পর্যায়ে হাজী আশরাফ উদ্দিন বলেন, আমার পিতা হাজী মোঃ ছামুছুদ্দিন আজ আমাদের মাঝে নেই, কিন্তু তাঁর রেখে যাওয়া নৈতিকতা, দানশীলতা ও মানবসেবার পথ আমরা অনুসরণ করছি। এই মসজিদ ও মাদ্রাসা হবে মানুষের কল্যাণে নিবেদিত একটি কেন্দ্র। আমি কাবিলগঞ্জ ও মোগড়াপাড়া ইউনিয়নের মানুষের ভালোবাসা ও সহযোগিতার প্রতি চিরকৃতজ্ঞ। আগামীতেও এই এলাকাকে আধুনিক, শিক্ষিত ও উন্নত করে গড়ে তোলার জন্য কাজ করে যাব। সবাই আমার ও আমার পরিবারের জন্য দোয়া করবেন।

এই সময় তিনি আসন্ন মোগড়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তাঁর চেয়ারম্যান প্রার্থীতার বিষয়ে এলাকাবাসীর দোয়া ও সমর্থন কামনা করে তিনি বলেন, আমি জনগণের সেবা করতে চাই। এই ইউনিয়নের প্রতিটি মানুষ যেন শান্তি ও নিরাপত্তায় থাকতে পারে-এটাই আমার লক্ষ্য।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অনেকেই বলেন, হাজী আশরাফ উদ্দিনের মতো তরুণ ও শিক্ষিত সমাজসেবক মোগড়াপাড়ার উন্নয়নে নতুন অধ্যায় রচনা করতে পারবেন। কাবিলগঞ্জ গ্রামের প্রবীণ সমাজসেবক আব্দুল হালিম বলেন, আমরা বহুদিন ধরে এমন একজন নেতার অপেক্ষায় ছিলাম, যিনি উন্নয়ন ও মানবসেবাকে একসাথে ধারণ করবেন। আশরাফ উদ্দিন সেই সম্ভাবনার প্রতীক।

একইসঙ্গে উপস্থিত যুবসমাজের সদস্যরা জানান, হাজী ছামুছুদ্দিন পরিবার সবসময় এলাকার উন্নয়নমূলক কাজে পাশে থেকেছে, দরিদ্র পরিবারের সহায়তায় তাঁদের অবদান অনস্বীকার্য।

হাজী ছামুছুদ্দিন এতিমখানা ও মসজিদের নামিরা উদ্বোধনের এই অনুষ্ঠান কাবিলগঞ্জে পরিণত হয় এক আনন্দঘন মিলনমেলায়। ধর্মীয় পরিবেশে আয়োজিত এই অনুষ্ঠান শুধু একটি মসজিদ বা মাদ্রাসার উদ্বোধন নয়-এটি ছিল ঐক্য, ভালোবাসা ও মানবসেবার প্রতিচ্ছবি।

হাজী আশরাফ উদ্দিনের নেতৃত্বে এলাকার মানুষ নতুন করে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন, যে মোগড়াপাড়া ইউনিয়ন একদিন হবে শান্তি, শিক্ষা ও উন্নয়নের অনন্য উদাহরণ।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে