রাজশাহীর বাঘায় স্ত্রী মুন্নি খাতুনের (২৮) শরীরে ডিজেল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী সুরুজ আলীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রোববার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মুন্নির বড় ভাই মিঠু হোসেন বাদি এই মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে স্বামী পলাতক রয়েছে। মুন্নি খাতুন বাঘা পৌরসভার চক নারায়নপুর গ্রামের সুরুজ আলীর স্ত্রী ও মিলিক বাঘা গ্রামের মাসুদ রানার মেয়ে। তাদের ৮ বছরের জিহাদ আলী ও চার বছরের সাবা খাতুন নামে দুটি সন্তান রয়েছে। এ বিষয়ে সুরুজ আলীর ভাতিজা সাব্বির আলী বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যায় পারিবার বিষয় নিয়ে চাচা-চাচির মধ্যে ঝগড়া হয়। এরপর তারা রাতে ঘুমিয়ে যায়। ভোর রাতে জমিতে সেচ দেওয়ার মেশিনের ডিজেল তেল নিজের গায়ে ঢেলে আগুন দেয় মুন্নি। এরপর তার চিকৎকারে চাচা ঘুম থেকে উঠে প্রতিবেশিরা এগিয়ে এসে আগুন নেভাতে সাহায্য করে। পরে তাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তার অবস্থা বেগতিক দেখে ডা. রামেক হাসপাতালে রেফর্ড করা হয়। পরে রামেক হাসপাতালের ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে (বার্ন) ভর্তি করা হয়। দুপুরের দিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার জন্য হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের দায়িত্বরতদের জানিয়ে ছাড়পত্র নিয়ে হাসপাতালের বাইরে নেওয়া হয়। রোগীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আবার বিকেলে হাসপাতালে জরুরী বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এরপর মরদেহ ময়না তদন্ত শেষে বাঘা কেন্দ্রীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়। মুন্নির মা মনোয়ারা বেগম বলেন, আমার মেয়ের শরীরে ডিজেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পুড়িয়ে মেরেছে। এর আগে ৩১ অক্টোবর মেয়ের সাথে শেষ কথা হয়েছিল। এ সময় মেয়ে জানায় আমি আর নির্যাতনের যন্ত্রনা সইতে পারছিনা। পরের দিন সকালে জানতে পারে মেয়ের শরীরে ডিজেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ বিষয়ে মুন্নির বাবা মাসুদ রানা বলেন, ১০ বছর আগে মেয়ের ইচ্ছায় বিয়ে হয়। জামাই সুরুজ মাদক সেবনে আসক্ত ছিল। এ নিয়ে সংসারে দীর্ঘদিন থেকে বিবাদ ছিল। বিয়ের পর যৌতুকের দাবি করতেন সুরুজ। নানান কারণে মেয়ের শরীরে ডিজেল ঢেলে পুড়িয়ে মেরেছে। সুরুজ আলী চক নারায়নপুর গ্রামের শহিদুল মাঝির ছেলে। সোমবার (৩ নভেম্বর) সকালে সুরুজ আলীর মা হাজেরা বেগম বলেন, তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব ছিল। তবে তাকে মারা হয়নি। বাড়িতে রাখা মেশিনের ডিজেল তেল নিজের শরীরে ঢেলে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করে। বাঘা থানার ওসি আ.ফ.ম আসাদুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। আসামীকে গ্রেফতার অভিযান চলছে।