পরগাছায় কী থেকে যাবে সরাইল? এমন প্রশ্ন এখন স্থানীয় বিএনপি’র। অতিতেও বিএনপি আওয়ামী লীগ উভয় দলই এই আসনে পরগাছা প্রার্থী পেয়েছে। জাপাতেও মাঝে মধ্যে দেখা দিয়েছে এই রোগ। পরগাছা নামক রোগটি যেন কোন ভাবেই ছাড়ছে না সরাইলকে। আর জন্যই বারবার উন্নয়ন বঞ্চিত হচ্ছে সরাইল। অবশ্য সম্প্রতি বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশীদের দলীয় কার্যালয়ে ডেকে নিয়েছিলেন হাইকমান্ড। সেখানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সকলকে বলে দিয়েছেন, দল যাকে মনোনয়ন দিবে সকলে মিলে তার পক্ষেই কাজ করতে হবে। যদিও এই আসনে বিএনপি দলীয় জোটের প্রার্থী হিসেবে মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিবের নাম চাউর হচ্ছে। বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীরা বলছেন, জোটবদ্ধ নির্বাচন বা প্রার্থীর বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। গত ৫ই আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়িয়েছে সরাইল আশুগঞ্জের বিএনপি। তাদের মতে দীর্ঘ ১৫ বছর পর তাদের আকাশের সূর্য হাসছে। দেশ পরিচালনা করছে ড. ইউনুছের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। বিভিন্ন সেক্টরে চলছে সংস্কার কাজ। যেকোন সময় ঘোষণা আসবে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের। তবে লন্ডনে তারেক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টার বৈঠকের পর আগামী রমজানের আগে নির্বাচনের ঘোষণা হয়ে গেছে। তাই মাঠ পর্যায়ে মনোনয়ন প্রত্যাশীরা অনেকটা সক্রিয়। অতীত রেকর্ডে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ-বিজয় নগরের একাংশ) আসনে মূলত বিএনপি’র পাল্লাই ভারী। এছাড়া এবার এখন পর্যন্ত মাঠে নেই আওয়ামী লীগ। গ্রেপ্তার এড়াতে এখানে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সহযোগি সংগঠনের নেতা কর্মীরা রয়েছেন আত্মগোপনে। অনেকেই আছেন জেলহাজতে। বিব্রতকর পরিস্থিতিতে উদ্বেগ উৎকন্ঠায় সময় পার করছেন জাপা। সভা সেমিনার উঠান বৈঠক ও মিছিলে সরব স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য ইসলামী দল গুলো। তাই ফাঁকা মাঠ এখন অনেকটাই বিএনপি’র অনুকূলে। মূলত স্বাধীনতার পর গত ৫৪ বছরের মধ্যে এই আসনে বিএনপি’র পাল্লাই ভারী। আওয়ামী লীগের সাবেক তথ্যমন্ত্রী প্রয়াত তাহের উদ্দিন ঠাকুর, মহাজোট থেকে জিয়াউল হক মৃধা ছাড়া পেছনের বাকি সময়টায় এই আসনটি ছিল বিএনপি’র দখলেই। তাই বিএনপি দলীয় প্রার্থীর সংখ্যাও বেড়েই চলেছে। এই আসনে এখন পর্যন্ত বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশার ঘোষণা দিয়ে মাঠে কাজ করছেন ১০ জন। এর মধ্যে ৭ জনই সরাইলের আর ১ জন জেলা শহরের ও ১ জন প্রার্থী আশুগঞ্জের। আর ইতোমধ্যে জামায়াত, খেলাফত মজলিশ ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। দল নিরপেক্ষ ও বিএনপি দলীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, কোন কারণে জোটবদ্ধ নির্বাচন হলে সমীকরণ বদলে যেতে পারে।
সরজমিন অনুসন্ধান ও দলীয় একাধিক সূত্র জানায়, এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীর তালিকায় রয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নেত্রী ব্যারিস্টার রূমিন ফারহানা। বিজয়নগরের ইসলামপুর গ্রামের কৃতি সন্তান ভাষা সৈনিক প্রয়াত অলি আহাদের মেয়ে তিনি। তিনি বিএনপি’র সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক। দলটির প্রভাশালী ও সাহসী এই নেত্রী ২০১১ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পিতার স্বপ্ন পূরণে নাড়ির টানে নিয়মিত ছুটে আসছেন সরাইল আশুগঞ্জের মানুষের কাছে। স্বল্প সময় এমপি থাকাকালে এই আসনের মানুষের ভাগ্যন্নোয়নে কাজ করেছেন। নিয়মিত গ্রামে ইউনিয়নে উপজেলায় উঠান বৈঠক ও সভা সেমিনার করছেন। বিএনপি’র শাসনামলের উন্নয়ন সুখ শান্তি তুলে ধরছেন। মানুষের সামনে হাসিনা সরকারের অসহনীয় অত্যাচার অবিচার জেল জুলুম নির্যাতনের ব্যাখ্যা করছেন। অকপটে তুলে ধরছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নানা অনিয়ম। দ্রূত নির্বাচন দিয়ে জনগণের পছন্দের সরকারের হাতে ক্ষমতা দেয়ার জন্য বারবার আহবান করছেন। স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও অবহেলিত সরাইলের রাস্তা ঘাট ব্রীজ কালভার্ট সংস্কার ও নির্মাণসহ সকল ক্ষেত্রে দুই উপজেলার অবকাঠামো উন্নয়ন, শিক্ষা, চিকিৎসা ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রূতি দিচ্ছেন রূমিন ফারহানা। ইতিমধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কাজ করে এই আসনের মানুষকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন তিনি। রূমিন ফারহানাকে ঘিরে এই আসনের মানুষ মন্ত্রীত্বের স্বপ্নও দেখছেন। তাই নিকট ভবিষ্যতে রূমিন ফারহানার হাত ধরে সরাইল আশুগঞ্জের ব্যাপক উন্নয়ন আশা করছেন এই জনপদের সকল শ্রেণিপেশার লোকজন। জনগণের সরাসরি ভোটে এই আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হতে পারলে সর্ব ক্ষেত্রে উন্নয়নের মাধ্যমে অতীতের সকল রেকর্ড ভাংতে চান তিনি। গত বছরের ২৯ নভেম্বর সরাইল অন্নদা স্কুলের মাঠের রূমিন ফারহানার জনসভায় নারী পুরূষের স্রোত নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছেন। গত ২৮ জুন চুন্টায় প্রতিহতের পূর্ব ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েক সহস্রাধিক লোকের অংশ গ্রহণে কর্মী সভা করেছেন তিনি। এই আসনের বাসিন্দাদের কাছে রূমিন ফারহানার জনপ্রিয়তা স্পষ্ট হয়েছে। রাজনৈতিক কারণে হামলা মামলায় জর্জরিত দীর্ঘ সময় কারা নির্যাতিত নেতা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি’র কার্যনির্বাহী সদস্য ও সরাইল উপজেলা বিএনপি’র দীর্ঘ সময়ের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন মাস্টার দলীয় মনোনয়ন পেতে দৌঁড়ঝাঁপ করছেন। দলের দু:সময়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ছাত্রদল থেকে শহীদ জিয়ার আদর্শের রাজনীতি শুরূ করেছিলাম। পেছন ফিরে তাকায়নি আদৌ। সর্বাবস্থায় সকল নেতা কর্মীর পাশে ছিলাম, আছি ও থাকব। দেশ নায়ক তারেক রহমান ও আপোষহীন নেত্রী সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে মাঠে কাজ করছি। দলীয় কর্মকান্ড দ্বারা দেশ ও নিজ এলাকার সকল শ্রেণি পেশার মানুষের পাশে থাকতে চাই। মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন উপজেলার কালিকচ্ছ ইউনিয়নের বাসিন্দা বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য ফ্রন্টের মহাসচিব ও জেলা বিএনপি’র সদস্য এস.এন তরূন দে। তরূন দে দলের হাই কমান্ডের নির্দেশে দলীয় পাল্লা ভারী করতে সমগ্র বাংলাদেশ ঘুরে ফিরে কাজ করছেন একযুগেরও অধিক সময় ধরে। বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের আস্থাভাজন তরূন দে নিজ নির্বাচনী এলাকার সকল শ্রেণি পেশার মানুষের দ্বারে দ্বারেও ঘুরছেন। সকল প্রকার ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন তরূন দে। প্রত্যেকটি ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের নানা কর্মকান্ডে তিনি সরব। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা বিএনপি’র সদস্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের বিভিন্ন পরিষদের সাবেক সক্রিয় সদস্য আহসান উদ্দিন খান শিপন দলীয় মনোনয়ন পেতে ছুটছেন মাঠে। ১৯৯০ সালে নোয়াগাঁও ইউনিয়ন ছাত্রদলের সদস্য পদ দিয়ে বিএনপি’র রাজনীতি শুরূ করা শিপন দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে আওয়ামী লীগ সরকারের বিরূদ্ধে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামসহ নানা চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে এখন জেলা বিএনপিতে স্থান করে নিয়েছেন। স্বপ্ন দেখছেন এমপি হয়ে এলাকার মানুষের সেবা করার। নিজের নির্বাচনী এলাকায় দল ঘোষিত নানা কর্মকান্ড প্রচার করছেন নিরলস ভাবে। গত ৩৫ বছর ধরে তৃণমূল থেকে দলটির কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে কাজ করছেন শেখ মোহাম্মদ শামীম। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ও বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য তিনি। সরকার বিরোধী আন্দোলনে কারা নির্যাতিত এই নেতা তৃণমূলের সাথে সর্বক্ষণ যোগাযোগ রক্ষা করছেন। তিনি বলেন, দলের রাজনীতিতে আমার ত্যাগ ও কমিটমেন্ট বিবেচনায় এই আসনে দল ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে আমাকেই মনোনয়ন দিবেন। সরাইল উপজেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি, উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রত্নগর্ভা মায়ের সন্তান, শিক্ষানুরাগী এড. আব্দুর রহমান মনোনয়ন পেতে মাঠে দৌঁড়ঝাঁপ করছেন। তিনি বলেন, দীর্ঘ তিন যুগেরও অধিক সময় ধরে দলের জন্য কাজ করছি। দলের মূল্যায়ন পাওয়ার বিষয়ে আমি আশাবাদী। তবে দলীয় সিদ্ধান্তের বাহিরে কখনো যায়নি। ভবিষ্যতেও যাব না। সরাইলের প্রবীণ রাজনীতিবিদ উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মো. আনিছুল ইসলাম ঠাকুরও চাচ্ছেন দলীয় মনোনয়ন। উপজেলা বিএনপি’র ২৭ বছরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনিছ ঠাকুর যাত্রা শুরূ করেছিলেন উপজেলা যুবদলের পদ দিয়ে। একজন অভিজ্ঞ সমবায়ী ও সাংগঠনিক ব্যক্তি যৌবন জীবনের অধিকাংশ সময়ই দিয়েছেন বিএনপিকে। তাই তিনি একজন সেবক হয়ে এই আসনের মানুষকে সেবা করার স্বপ্ন দেখছেন। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়ে খুবই আশাবাদী সরাইল উপজেলা বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক এড. নুরূজ্জামান লস্কর তপু। কালিকচ্ছ লস্করবাড়ির সন্তান তপু ২০০০ সালে জেলা যুবদলের আইন বিষয়ক সম্পাদকের পদ দিয়েই শুরূ করেন বিএনপি দলীয় কার্যক্রম। আর পেছনে ফিরে তাকাননি তিনি। পরবর্তীতে জেলা যুবদলের পরবর্তী একধিক কমিটিতেও পদ পান। এক সময় জেলা আইনজীবী ফোরামের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক হন। তপু বলেন, ২০০৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত দলীয় সকল আন্দোলন সংগ্রাম ও কেন্দ্র নির্দেশিত কর্মসূচি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাস্তবায়ন করছি। হাসিনা সরকারের সকল হামলা মামলা ও নির্যাতনের শিকার দলীয় লোকদের আইনিসহ সকল প্রকার সহযোগিতা করে যাচ্ছি। সরাইল আশুগঞ্জের মানুষ যখন যে ভাবে ডাকছেন। দৌঁড়ে তাদের পাশে হাজির হওয়ার চেষ্টা করছি। উভয় উপজেলার সকল সামাজিক, সাংস্কৃতিক, রাজনৈতিক কর্মকান্ড ও খেলাধূঁলায় অংশ গ্রহণ করে সহযোগিতা করছি। ইনশাল্লাহ- ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসন থেকে ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়ন দল আমাকে দিবেন। আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মো. শাহজাহান সিরাজ বলেন, এক সাথে পাঁচ বছর আশুগঞ্জের একজন নাগরিক বা বাসিন্দাকে এমপি হিসাবে পেতে চাই এই জনপদের লোকজন। গত ৫৪ বছরের মধ্যে এই মাটির কাউকে এমপি হিসাবে পায়নি। মাঝখানে কয়েক ঘন্টা আর ছয় মাসের এমপি আরো জ্বালা বাড়িয়েছে। তাই সুযোগ এসেছে। যারাই এমপি হয়েছেন আশুগঞ্জের উন্নয়নে শুধু আশ্বাস দিয়েছেন। উন্নয়ন হয়নি। আর আশ্বাসের বাণী শুনতে চায় না কেউ। সরাইল আশুগঞ্জের মানুষের স্বপ্ন পূরণই আমার মূল লক্ষ্য সেই লক্ষ্য পূরণেই আমি বিএনপি দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশা করছি। সংবাদ সম্মেলন করে মনোনয়ন প্রত্যাশার কথা জানিয়েছেন বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি প্রয়াত ডা: মো. ফরিদুল হুদার ছেলে ডা: মো. নাজমুল হোসেন বিপ্লব।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলাম ইতোমধ্যে কর্মী সভা ডেকে এই আসনে জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মোবারক হোসেনকে তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। অনেক খর কোঠা পূড়ানো নেতা মোবারক হোসেন নরসিংদী ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক সফল নেতা। মোবারক হোসেন বলেন, সরকারি বেসরকারি সকল সেক্টরের অনিয়ম দূর্নীতি প্রতিরোধ করে স্বচ্ছতা জবাবদিহীতা সততা ন্যায়পরায়ণতা নিশ্চিত করে জনগণের মুখে হাঁসি ফুটানোই আমাদের লক্ষ্য। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ (চরমোনাই পীর) শায়খ নেছার আহমাদ আন নাছিরীকে (হাতপাখা) প্রার্থী চুড়ান্ত করেছেন। দেশে ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কোরআনে হাফেজ গড়ার দক্ষ কারিগড় নাছিরী এমপি হতে পারলে সরাইল আশুগঞ্জকে শিল্প ও শিল্পের নগরী হিসেবে গড়ে তুলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশ এ আসনে মাওলানা মঈনুল হোসেন খন্দকারকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করেছেন। গত সরকারের রোষানলে পড়ে দীর্ঘদিন কারা নির্যাতিত নেতা মঈনুল দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির নির্বাহী সদস্য ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার নির্বাহী সভাপতি। সরাইল উপজেলা মসজিদের সাবেক খতিব সরাইল সদরের সৈয়দটুলা গ্রামের বাসিন্দা ইসলামিক কর্মকান্ড ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন সামাজিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। জমিয়তে ইলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর প্রার্থী মাওলানা জুনায়েদ আল হাবিব। তিনি দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি। হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ-এর সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্বও পালন করছেন তিনি। এ আসনে বিএনপি’র জোটের প্রার্থী হয়ে নির্বাচন করার চেষ্টা করছেন তিনি। ইতোমধ্যে বিএনপি’র কাছ থেকে আশ্বাস পাওয়ার কথাও চাউর হচ্ছে চারিদিকে। তবে মনোনয়ন প্রত্যাশী বিএনপি’র কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শেখ শামীম ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের বিভিন্ন পরিষদের সাবেক সক্রিয় সদস্য আহসান উদ্দিন খান শিপন বলেন, আমরা যতদূর জানি ঢাকা অফিসে যেতে ব্যারিষ্টার রূমিন ফারহানা, শেখ শামীম, আহসান উদ্দিন খান শিপন ও তরূন দে কে ফোন করেছিলেন। সেখানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান বলেছেন যাকে মনোনয়ন দিবেন তার পক্ষে সকলকে কাজ করতে বলেছেন। দল জোটবদ্ধ নির্বাচন করবেন কিনা এমন কোন আলোচনা বা সিদ্ধান্ত এখনো হয়নি। এই আসনটি বিএনপি’র। তাই আমরা বিএনপি দলীয় প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে অনুরোধ করেছি। তবে দেশ জাতি ও দলের স্বার্থে দলীয় হাইকমান্ডের যেকোন নির্দেশ মেনে চলব।
দল নিরপেক্ষ একাধিক ব্যক্তি জানান, দলীয় হাই কমান্ডের সিদ্ধান্তে এখানে যদি জোটবদ্ধ নির্বাচন হয় তবে প্রার্থীদের সমীকরণ পাল্টে যেতে পারে। ধানের শীষ না থেকে অন্যকোন প্রতীকের পক্ষে কাজ করতে হতে পারে বিএনপি’র সকল স্থরের নেতা কর্মীদের। তৃণমূল থেকে উপজেলা পর্যন্ত ১৬ ইউনিয়নের নেতা কর্মীদের প্রত্যাশা বিএনপি দলীয় প্রার্থী। আরেকটি সূত্র জানায়, বিএনপি’র দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত এই আসনে এবার দলীয় হেভিওয়েট প্রার্থী দেওয়ার সম্ভাবনাই বেশী। রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই। চুড়ান্ত দেখার জন্য অপেক্ষা করতে হবে আরো কিছু সময়।
প্রসঙ্গত: নির্বাচনী এলাকার ১৯ টি ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৯২ হাজার ৭৯৭। এরমধ্যে পুরূষ ২ লাখ ৬১ হাজার ৩৯ জন, মহিলা ২ লাখ ৩১ হাজার ৭৫৬ জন ও হিজড়া ২ জন। সরাইল উপজেলায় ৯ টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ২ লাখ ৮৫ হাজার ১৭৬। আশুগঞ্জ উপজেলায় ৮ টি ইউনিয়নে মোট ভোটার ১ লাখ ৫০ হাজার ৬৯৪ জন। সর্বশেষ সীমানা নির্ধারনে সংযুক্ত বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা ও বুধন্তী ইউনিয়নের মোট ভোটার সংখ্যা ৫৬ হাজার ৯২৭।