আজকের ডিজিটাল যুগে আমরা দিনে দিনে অসংখ্য অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করি- ই-মেইল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, ব্যাংকিং বা অনলাইন শপিং। মনে রাখার সুবিধার জন্য অনেকেই সব জায়গায় একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন। কিন্তু এই অভ্যাসটি আপনার ডিজিটাল নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে। একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার সাইবার নিরাপত্তার সবচেয়ে সাধারণ কিন্তু মারাত্মক ভুল। একবার একটি তথ্য ফাঁস হয়ে গেলে হ্যাকাররা সেই পাসওয়ার্ড দিয়ে আপনার অন্য সব অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করতে পারে। এর ফলে ক্রিডেনশিয়াল স্টাফিং, ফিশিং ও পরিচয় চুরির ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। হ্যাকাররা চুরি হওয়া ইউজারনেম ও পাসওয়ার্ড স্বয়ংক্রিয় বট দিয়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইটে পরীক্ষা করে। গবেষণা দেখায় প্রায় ৮০% তথ্য ফাঁস হয় পাসওয়ার্ড চুরির কারণে। তাই একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার মানে আপনি হ্যাকারদের হাতে আপনার ডিজিটাল জীবনের ‘মাস্টার চাবি’ তুলে দিচ্ছেন। আবার দেখা যায় একাধিক অ্যাকাউন্টে একই রিকভার ই-মেইল বা ফোন নম্বর ব্যবহার করলে এক প্ল্যাটফর্মের তথ্য ফাঁস অন্য প্ল্যাটফর্মকেও প্রভাবিত করতে পারে। একই নিরাপত্তা প্রশ্ন বা ব্যক্তিগত তথ্য ব্যবহারের কারণে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়। তাছাড়া একই পাসওয়ার্ড ব্যবহারে ফিশিং আক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। হ্যাকাররা ভুয়া ওয়েবসাইট বানিয়ে ব্যবহারকারীদের লগইন করতে প্রলুব্ধ করে। একবার কেউ সেই ফাঁদে পড়লে, চুরি হওয়া পাসওয়ার্ড দিয়ে হ্যাকাররা অন্যান্য অ্যাকাউন্টেও প্রবেশ করতে পারে। একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার শুধু ব্যক্তিগত তথ্যের জন্যই ঝুঁকি তৈরি করে না, বরং অফিসের নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও সমস্যা তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে ফ্রিল্যান্সার বা রিমোট কর্মীদের ক্ষেত্রে, ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্ট হ্যাকড হলে গ্রাহকের তথ্য বা ব্যবসায়িক টুলও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
সুরক্ষিত থাকার সহজ উপায়-
পাসওয়ার্ড ম্যানেজার ব্যবহার করুন : প্রতিটি অ্যাকাউন্টের জন্য শক্তিশালী ও আলাদা পাসওয়ার্ড তৈরি ও সংরক্ষণ করে।
টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন (২ঋঅ) চালু রাখুন : পাসওয়ার্ড ফাঁস হলেও একটি বাড়তি স্তর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
নিয়মিত পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করুন : সময়ের সঙ্গে পাসওয়ার্ড পরিবর্তন করলে আগের তথ্য ফাঁসের প্রভাব কমে যায়।
একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার মানে হ্যাকারদের জন্য আপনার ডিজিটাল জীবনের দরজা খোলা রাখা। আলাদা, শক্তিশালী পাসওয়ার্ড এবং ২ঋঅ ব্যবহার করে আপনি নিজের তথ্যকে অনেক বেশি সুরক্ষিত রাখতে পারেন।