চাঁদপুর জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এর সভা

এফএনএস (মিজানুর রহমান; চাঁদপুর) : | প্রকাশ: ১৩ নভেম্বর, ২০২৫, ০৭:১২ পিএম
চাঁদপুর জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) এর সভা

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) চাঁদপুর ও এসিজি গ্রুপের সাথে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের মতবিনিময় সভা ১৩ নভেম্বর ২০২৫ অনুষ্ঠিত হয়। "স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক সেবা নিশ্চিতকরণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের করণীয় ও আমাদের প্রত্যাশা" শীর্ষক আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সনাকের সাবেক সভাপতি কাজী শাহাদাত। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায় ডা. একেএম মাহাবুবুর রহমান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায় ডা. একেএম মাহাবুবুর রহমান সনাক ও এসিজি গ্রুপ কর্তৃক উত্থাপিত প্রতিটি সমস্যা ও সুপারিশের জবাব দেন। তিনি বলেন, জনবল সংকট ও ঔষধ সীমাবদ্ধতা থাকা সত্তেও হাসপাতালের সেবার মানোন্নয়নে চেষ্টা করছি। হাসপাতালে ডাক্তারের সংখ্যা বরাদ্দ ও জনবল বৃদ্ধি করা খুবই জরুরি বলে তিনি মনে করেন। সনাকের পক্ষ থেকে সুপারিশগুলো হাসপাতালের সেবার মানোন্নয়নে ব্যাপক ড. মিকা পালন করবে। এজন্যে সনাক ও এসিজি গ্রুপকে তিনি ধন্যবাদ জানান। 

তিনি জানান, হাসপাতালে ডাক্তার, নার্স, পরিচ্ছন্নতা কর্মী থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ে জনবলের ঘাটতি রয়েছে ব্যাপক। স্বাস্থ্যখাতে কোন উন্নয়ন প্রকল্প নাই। যার কারণে ঔষধ থেকে শুরু করে সকল পর্যায়ে সমস্যা হচ্ছে এবং সেবা প্রদানে মারাত্মক বিঘ্ন হচ্ছে। হাসপাতালটি ২৫০ শয্যার। কিন্তু প্রতিদিন প্রায় ৪০০-৫০০ জন রোগী হাসপাতাল থেকে সেবা নিচ্ছেন। ২৫০ জনের জন্য যে বরাদ্দ বা লোকবল থাকার কথা তাও নেই। হাপাতালের কাঙ্খিত উন্নয়ন বা সেবা নিশ্চিত করতে হলে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ ও জনবল সংকট দূর করতে হবে। তিনি হাসপাতালের ওয়েব পোর্টাল, ঔষধের তালিকা, সিটিজেন চার্টার, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করবেন বলে জানান। তিনি জানান, হাসপাতালের বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে যা আমি ইচ্ছে করলেও সমাধান করতে পারবো না। আউটডোর, ইমার্জেন্সি ও হাসপাতালের জায়গার পরিমান কম হওয়ায় সেবা প্রদানে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তিনি এসিজি ও ইয়েস সদস্যদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা হাসপাতালে মনিটরিংয়ে এসে যেস কল সমস্যা পান সেগুলো তাৎক্ষণিক আমাকে জানাবেন। তাহলে সমস্যাগুলো তাৎক্ষণিক সমাধানের উদ্যোগ নিতে পারবো। একজন রোগীর সাথে একাধিক লোক আসার কারণে হাসপাতালের পরিবেশও বিনষ্ট হচ্ছে। এব্যাপারে জনগণকে আরও বেশি সচেতন হওয়ার আহবান জানান তিনি। লোকজনের চাহিদা ও প্রত্যাশা অনেক। আমাদের সীমাবদ্ধাতা থাকার কারণে আমরা তা পূরণ করতে পারছি না। তিনি আরও জানান, ডাক্তারা সকালে এসেই রাউন্ডে চলে যায়। তখন অনেকেই মনে করে ডাক্তার এখনো আসে নাই। তিনি ডাক্তারদের সঠিক সময়ে হাসপাতালে আসার আহান জানান। হাসপাতাল সম্পর্কিত সনাক ও এসিজি'র পর্যবেক্ষণসমূহ পর্যায়ক্রমে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। মতবিনিময় সভা আয়োজন করার জন্য তিনি সনাক-টিআইবিকে ধন্যবাদ জানান।

সভাপতির বক্তব্যে সনাকের সাবেক সভাপতি ও সদস্য কাজী শাহাদাত বলেন, ২০০৫ সাল থেকে সনাক এই হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবার মানোন্নয়নে কাজ করছে। বিগত দিনেও আমরা হাসপাতালের বেশ কিছু সমস্যা উত্থাপন করেছি। ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি সমস্যার সমাধানও হয়েছে। আশা করছি পর্যায়ক্রমে বাকীগুলোরও সমাধান হবে। রোগীদের চাহিদা ও প্রত্যাশার শেষ নেই। আমরা লক্ষ্য করছি হাসপাতালের সেবার মানের অনেক পরিবর্তন এসেছে। অনেক সীমাবদ্ধতা থাকা সত্তে ও তত্তা বিধায়ক খুবই আন্তরিকতার সাথে হাসপাতালের সেবার মানোন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন। তিনি হাসপাতালের ওয়েব পোর্টাল, ঔষধের তালিকা, সিটিজেন চার্টার আপডেট করার আহান জানান। মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হওয়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

টিআইবি'র এরিয়া কো-অর্ডিনেটর মো. মাসুদ রানার সঞ্চালনায় এছাড়াও বক্তব্য রাখেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আশরাফ আহমেদ চৌধুরী, সনাক সদস্য মোহাম্মদ আসিফ-উল-ইসলাম, এসিজির সহ-সমন্বয়কারী আশিক বিন রহিম ও গাজী মো. মুসা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, সনাক সদস্য পাপড়ি বর্মণ, মো. খোরশেদ আলম পাটওয়ারী কাঞ্চন, রমা সরকার, নার্সিং সুপারভাইজার মাকসুদা আক্তার, পরিসংখ্যান কর্মকর্তা নূরুদ্দিন মোঃ জাহাঙ্গীর, এসিজি সদস্য আয়েশা আক্তার রুপা, সুমি আক্তার, মোঃ আল আমিন হোসাইন, সুলতানা আক্তার, ইয়েস

দলনেতা অভি লোধ, সহ-দলনেতা দিগন্ত ঘোষ আকাশ ও জান্নাতুল ফেরদাউসসহ প্রমুখ। হাসপাতালে সেবাদাতাগণের সময়ানুবর্তিতা, প্রত্যাশিত জনবল নিশ্চিতকরণ, দৈনিক ঔষধ সরবরাহের তালিকার আধুনিকায়ন ও হালনাগাদকরণ, হাসপাতালের ওয়েব পোর্টাল হালনাগাদকরণ, সেবা প্রদানে আন্তরিকতা, পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা, চাহিদার তুলনায় ঔষধের অপর্যাপ্ততা, হুইল চেয়ার ও ট্রলির স্বল্পতা, জনগণের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা না নেওয়া, জনগণের চাহিদার ভিত্তিতে তথ্য প্রদান, খাবারের মান, হাসপাতালের সিটিজেন চার্টার হালনাগাদকরণ, তথ্যের উন্মুক্ত প্রকাশ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে