হেমন্ত পেরিয়ে শীতের আগমনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে পাহাড়-অরণ্য ও হ্রদে। সকাল থেকে সন্ধ্যা প্রকৃতি সাজছে তার নিজস্ব রূপে। শীতের শুরুতেই রূপের রাণী পার্বত্য জেলা রাঙামাটির পাহাড়-অরণ্যে নেমে এসেছে সৌন্দর্যের নতুন সাজ। নীল আকাশ, কুয়াশায় ঢাকা সকাল আর হেমন্তের মনোরম আবহাওয়ায় রাঙামাটি এখন পর্যটকে ভরপুর। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে যেমন পর্যটকেরা ছুটে আসছেন, তেমনই বাড়ছে বিদেশি ভ্রমণপিপাসুদের উপস্থিতিও।
পর্যটন সংশ্লিষ্টরা জানান, হেমন্ত মৌসুম তাদের ব্যবসার জন্য সবচেয়ে অনুকূল সময়। ঝুলন্ত সেতু, সুবলং ঝর্ণা, কাপ্তাই হ্রদ থেকে শুরু করে সাজেকের পাহাড়-সবখানেই বেড়েছে পর্যটকের পদচারণা। হোটেল-মোটেলগুলোতে আগাম বুকিংও বাড়ছে।
হ্রদ পাহাড় দেখতে আসা যুবক রাগীব বলেন, ‘রাঙামাটির পাহাড়, হ্রদ এতটা সুন্দর হবে ভাবিনি। এখন ঝুলন্ত সেতুর পর কাপ্তাই হ্রদ ও সুবলং ঝর্ণা দেখে সাজেকে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছি।’ তার সঙ্গী তাবাসসু যোগ করেন, ‘পাহাড়ি সৌন্দর্য সত্যিই মন ভরে দেওয়ার মতো। এতে অন্যরকম একটা মোহ সৃষ্টি করে।’
টুরিস্ট বোট মালিক সমিতি জানিয়েছে, কয়েকদিন ধরে পর্যটকের সংখ্যা বাড়ায় নৌকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে। রাঙামাটি পর্যটন কর্পোরেশনের ব্যবস্থাপক আলোক বিকাশ চাকমা জানান, গত কয়েকদিনে পাঁচ-ছয় শতাধিক পর্যটক এসেছে এবং হোটেলের প্রায় ৩০ শতাংশ বুকিং হয়ে গেছে। ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে পর্যটকের ঢল নামবে বলেও তিনি আশা করছেন।
অন্যদিকে সাজেকেও বেড়েছে পর্যটকের সমাগম। কটেজ মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, কয়েকদিনে প্রায় তিন হাজার পর্যটক সেখানে ভ্রমণ করেছেন। ফলে খাগড়াছড়ির পর্যটনও পুরোদমে চাঙা হয়েছে।
পর্যটনের এই উচ্ছ্বাসে নতুন মৌসুম নিয়ে ব্যবসায়ীরা যেমন আশাবাদী, তেমনি পর্যটকেরাও রাঙামাটির অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগে মুগ্ধ। এ যেন নিজ জন্মভূমিতে ভিন দেশের আবহ্।