হাসিনার মৃত্যুদন্ডে ছাত্র-জনতার উচ্ছাস, মিছিল-সমাবেশে উত্তাল শহীদ মিনার

এফএনএস (এইচ এম শহীদুল ইসলাম; সিলেট) : | প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর, ২০২৫, ০৬:১৯ পিএম
হাসিনার মৃত্যুদন্ডে ছাত্র-জনতার উচ্ছাস, মিছিল-সমাবেশে উত্তাল শহীদ মিনার

মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার সহযোগী সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁনের বিরুদ্ধে রায় ঘোষণার দিনে সোমবার সকাল থেকেই সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় বিপুল জনসমাগম দেখা যায়। ছাত্রজনতা, বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সাধারণ মানুষ সকাল থেকেই সেখানে অবস্থান নেন। রায় ঘোষণার অপেক্ষায় তারা ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠেন।

সকাল ১১টায় রায় দেওয়ার কথা থাকলেও দুপুর ১২টা ৩৪ মিনিটে রায় পড়া শুরু হয় এবং ২টা ৫০ মিনিটে ফ্যাসিস্ট হাসিনা ও কামালকে মৃত্যুদন্ডের রায় ঘোষণা করা হয়। রায়ের খবর ছড়িয়ে পড়তেই শহীদ মিনার এলাকা স্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে। “এই মুহূর্তে খবর এলো, ফ্যাসিস্টের ফাঁসি হলো”-এমন স্লোগান দিতে দিতে উপস্থিত জনতা একে অপরকে মিষ্টি বিতরণ করেন। অনেকে শুকরিয়া আদায় করে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেন।

মৃতুদন্ডের রায় ঘোষণার খবর নিশ্চিত হওয়ার পর সর্বস্তরের মানুষের খণ্ড খণ্ড মিছিল শহীদ মিনারে পৌঁছায়। মিষ্টিমুখ করিয়ে ও মাটিতে বসে অনেকে আনন্দ ভাগাভাগি করেন। বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে এনসিপির নেতৃবৃন্দ ও বিপুল সংখ্যক মানুষ মিছিলসহ জিন্দাবাজার এলাকা প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শহীদ মিনারে ফিরে সমাবেশ করেন।

অন্যদিকে সিলেট ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে শতাধিক নেতাকর্মীর একটি মিছিল আম্বরখানা, চৌহাট্টা, জিন্দাবাজার হয়ে কোর্ট পয়েন্টসহ নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

রায়কে ঘিরে সকাল থেকেই সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শহরের বিভিন্ন মোড়ে অবস্থান নেন। বর্ধিত নিরাপত্তার মধ্যেও বিকেল পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। রায় কাভার করতে গণমাধ্যমের বিপুল সংখ্যক সাংবাদিকও সকাল থেকে শহীদ মিনারে উপস্থিত ছিলেন।

মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের আন্দোলন চলাকালে বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক দমন-পীড়নের নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা হয়। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, রাষ্ট্রীয় বাহিনী এবং আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন-বিশেষ করে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সশস্ত্র ক্যাডারদের মাধ্যমে এই দমনপীড়ন চালানো হয়। এর ফলে দেড় হাজারের বেশি মানুষ নিহত এবং প্রায় ২৫ হাজার মানুষ আহত বা নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ রয়েছে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে