চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর হোন

এফএনএস | প্রকাশ: ১৯ নভেম্বর, ২০২৫, ০৬:৪২ পিএম
চাঁদাবাজি বন্ধে কঠোর হোন

ব্যাবসা-বাণিজ্য এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে চলছে। এর মধ্যে চাঁদাবাজি ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করছে। কোথায় নেই চাঁদাবাজি! নিত্যপণ্যের বাজারে চাঁদাবাজির খবর সবার জানা। উৎপাদনস্থল থেকে শুরু করে বাজারে পৌঁছানো পর্যন্ত পথে দফায় দফায় চাঁদা দিতে হয়। এমনকি চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য পাইকারি ও খুচরা বাজারেও। দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে চাঁদাবাজির উৎপাত কিছুটা কমলেও তা চালুর ক্ষেত্র তৈরিতে সুযোগ সন্ধানীদের বিরাম নেই। আগে যেমন পুলিশের নামে, মালিক সমিতি ও শ্রমিক ইউনিয়নের নামে সড়কে চাঁদা নেয়া হতো, এখন তা আবার শুরুর লক্ষণ দেখা দিয়েছে। ফলে চাঁদাবাজির কারণে পণ্যের খরচ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পরিবহন খাতে ট্রান্সপোর্ট সেক্টরের চাঁদাবাজির বিষয়টি ভয়াবহ, এটি শুধু একটি স্থানে চাঁদা দিলেই হয় না, বিভিন্ন জায়গায় দিতে হয়। কাউকে দীর্ঘমেয়াদে চাঁদাবাজি করতে হলে তাকে কোনো একটি রাজনৈতিক দলের ছত্রছায়ায় থাকতে হয়। তাহলে কেউ তাকে ঘাঁটানোর সাহস রাখে না। চাঁদাবাজি বৈধ পেশা নয়। তাই তার পেছনে কেউ থাকতে হয়। পণ্য বহনকারী ট্রাক থেকে কয়েক ধাপে চাঁদা নেওয়া হয়। ট্রাক থেকে পণ্য আড়তে নেওয়া, আড়ত থেকে খুচরা ব্যবসায়ীদের গন্তব্যে যাওয়া পর্যন্ত স্তরে স্তরে চাঁদা দিতে হয়। এসব কারণে পণ্যেও দাম বেড়ে যায়। স্বৈরাচার উৎখাতের পর ঘুষ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ইত্যাদি বন্ধ হবে বলে জনগণ আশা করেছিল, যা পূরণ হয়নি। ঘুষ-দুর্নীতি নীরবে চললেও চাঁদাবাজি চলছে সরবে, প্রকাশ্য দিবালোকে। আওয়ামী চাঁদাবাজদের সঙ্গে বিএনপির চাঁদাবাজরা যোগসাজশ করে তাদের দৈনিক নগদ টাকার আগমকে অব্যাহত রেখেছে। নগদ টাকার লোভ সামলানো খুবই মুশকিল। আর নগদ টাকা পাওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো চাঁদাবাজি- তা পরিবহনেই হোক অথবা অন্য কোনো ক্ষেত্র বা সেক্টরেই হোক। গত দেড় বছরে পরিবহনে চাঁদাবাজি নিয়ে বহু খবর পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এসব খবরে এমন তথ্য এসেছে যে, আওয়ামী চাঁদাবাজদের স্থলে এখন বিএনপির চাঁদাবাজরা পুরো সেক্টর নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা এমনকি টেম্পুস্ট্যান্ড দখল করেও চাঁদাবাজি করছে। এসব তথ্য যাচাই এবং চাঁদাবাজি বন্ধ করার দায়িত্ব সরকারের। চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির বিধান থাকা সত্ত্বেও তা প্রয়োগ হচ্ছে না। আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা দরকার। সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজির ক্ষেত্রে শাস্তি আরও কঠোর করা যেতে পারে। চাঁদাবাজ ও তাদের পৃষ্ঠপোষক উভয়ের জন্য কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা। বর্তমান সরকারের যেহেতু কোনো দল নেই, জনগণই তাদের শক্তি। সরকার ও বড়ো রাজনৈতিক দলগুলো একটা ঐকমত্যে আসতে পারে যে, তারা কোনো চাঁদাবাজিকে প্রশ্রয় দেবেন না। এখানেও সংস্কার দরকার। এ সংস্কারের সুফল পাবে দেশের আপামর জনসাধারণ।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে