তেঁতুলিয়ায় সরকারি জমিতে দোকান ঘর নির্মাণের অভিযোগ

এফএনএস (এম এ বাসেত; তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়) :
| আপডেট: ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম | প্রকাশ: ৪ জানুয়ারী, ২০২৫, ০২:১৭ পিএম
তেঁতুলিয়ায় সরকারি জমিতে দোকান ঘর নির্মাণের  অভিযোগ

পঞ্চগড়ের ৪নং শালবাহান ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের সরকারি জমিতে দোকান ঘর নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে।  জানা যায় ৪নং শালবাহান ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মরহুম জমির আলী এস এ-৬১ নং খতিয়ানভুক্ত ৮ একর ৭২ শতক জমি নিলামে ক্রয় করেন।  উক্ত খতিয়ানে  ২৩৪০ ও ২৩৪২ দাগে ১ একর ৪২ শতক জমি এবং এস এ- ৮৪ নং খতিয়ানে ২০০৯ ও ২৩৪৪ নং দাগে ৬৭ শতক মোট ২টি তফসিলে ২ একর ৯ শতক জমি ৪নং ইউনিয়ন শালবাহান ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে বিগত ১৫ জুলাই ১৯৭৫ ইং ১৮৫৫৭ নং রেজিস্ট্রি দানপত্র দলিলমূলে প্রদান করেন। তখন হাসপাতালের জমির সীমানা প্রাচীর না থাকায় মাঠের ফাঁকা জায়গায় সাপ্তাহিক দু’দিন কালান্দিগজ পুরাতন  বাজার হাট বসে। পরবর্তীতে হাসপাতালের জমি থেকে কয়েক দফায় উক্ত হাট বিলুপ্তি হয়ে যায়। এই সুযোগে আওয়ামীলীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর দলীয় কিছু নেতা-কর্মী ও সমর্থক  দখল করে।   জমির আলী নাতী মো. সোরওয়ার্দী এ  প্রতিবেদকে জানান, শালবাহান ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে ২ একর ৯ শতক জমির মধ্যে বর্তমানে ৫০ শতক জমির দখলে আছে। বিগত সরকার দলীয় নেতা-কর্মীরা রাজনৈতিক ছত্র ছায়ায় ১ একর ৫৯ শতক জমি দখলে নিয়ে ভুয়া ও জাল দলিল সৃজন করে পাকা দোকান ও গুদামঘর সহ বাড়ি নির্মাণ করেছে। আমি সরকারি সম্পত্তি রক্ষা ও বেদখলকৃত জমি উদ্ধারের জন্য উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমি, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে একাধিকবার আবেদন করেছি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার অফিসে দরখাস্তের অনুলিপি প্রদান করেছি। কিন্তু উক্ত আবেদনের এখনো কোন সুরাহা হয়নি।  সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় ৪নং শালবাহান ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র ভবনের অনুমান ১০ গজ উত্তরে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা নুরুল ইসলাম লালু টিনশেড পাকা দোকান ও গুদাম ঘর নির্মাণ করেছে। সেখানে ছেলের নামে মেসার্স সবুজ ট্রেডার্স সার ও কীটনাশক দোকান দিয়ে বসেছে। এছাড়াও অন্যপাশে মেসার্স শাহনাজ ট্রেডার্স নামে সার ও কীটনাশক ব্যবসায়ী মো. শাহাবুদ্দিনকে ভাড়া দিয়েছে। বাকী অংশে মালামালের গুদাম ঘর করেছে। এরপাশে তাহেরুল চা স্টোর নামে টিনশেড দোকান করছে। এছাড়া হাসপাতালের প্রবেশের মূলফটকের উত্তর পশ্চিশ পাশে আরও ১০-১৫টি অন্যান্য লোকের দোকান পাট আছে। হাসপাতাল ভবনের পূর্ব পাশে কয়েকজনের বাড়ি ঘর আছে এবং পশ্চিম পাশে কালান্দিগজ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন ও মাঠ আছে। কালান্দিগজ গ্রামের বাসিন্দা মামুন, বড়দলুয়াগছ গ্রামের হাসিনা, নিজাম উদ্দীন বলেন, হাসপাতালের বাউন্ডারী ওয়াল না থাকায় জমাজমি বেদখল হয়েছে। সরেজমিন জরিপ করে হাসপাতালের জমি উদ্ধার করে বাউন্ডারী ওয়াল নির্মাণ সহ প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার নিয়োগ দিলে চিকিৎসাসেবা গ্রহণে উপকৃত হবো। পত্নিপাড়া গ্রামের হায়দার আলী বলেন, হাসপাতালের সংগে হাট সেটের জমাজমি বিরোধ বিষয়টি নিস্পত্তি হওয়া দরকার। সীমানা প্রাচীর না থাকা কোনটি হাটের জমি আর কোনটি হাসপাতালের জমি তা বুঝে উঠা যায় না। তাহেরুল চা স্টোরের ব্যবসায়ী,  তাহেরুল ইসলাম বলেন প্রায় ১৮ আগে এখানে হাট বসত আর তখন থেকে চা দোকান করে আসছি। এখানে হাট আগেই থেকেই বসত পড়ে হাসপাতাল নির্মাণ হয়েছে। অন্যান্যদের মত তিনিও হাসপাতাল ও হাটসেটর জমির বিরোধ নিস্পত্তির দাবী করেন। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের নেতা মো. নুরুল ইসলাম লালু বর্তমানে পঞ্চগড় জেল হাজতে থাকায় সরাসরি তার বক্তব্য নেয়া সম্ভাব হয়নি। তার ছেলে শেখ ফরিদ সবুজ বলেন, হাসপাতালের জমিতে কোন দোকান ঘর নির্মাণ করিনি। আমাদের ক্রয়কৃত ৬১ নং খতিয়ানভুক্ত জমির উপর দোকান নির্মাণ করেছি।  এবিষয়ে সদ্য যোগদানকৃত উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি আমার জানা ছিল না; আমি কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে সরকারি বেদখলকৃত  জমি উদ্ধারের জন্য উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় উদ্ধার করা হবে।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে