দেশের বিভিন্ন স্থানের ন্যায় চাঁদপুরেও ভয়াবহ ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে। শুক্রবার সকাল দশটা আটত্রিশ মিনিটের সময় হঠাৎ শক্ত ঝাঁকুনিতে কেঁপে উঠে ঘরবাড়িসহ সকল স্থাপনা।
চাঁদপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় ভূমিকম্পের রিখটার স্কেলে এর মাত্রা রেকর্ড করা হয় ৫ দশমিক ৭। এর উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাদবদী থেকে ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার দূরে।
ভূমিকম্পের সময় চাঁদপুর শহর এলাকাসহ মতলব দক্ষিণ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অনেকেই আতঙ্কে ঘর থেকে রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। ভূমিকম্পটি বেশ কয়েক সেকেন্ড স্থায়ী ছিল।
বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা রুবায়েত কবীর জানান, শুক্রবার সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে এ ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৫.৭ । ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল ঢাকা থেকে ১৩ কিলোমিটার দূরে নরসিংদীর মাধবদীতে, কেন্দ্র ছিল ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে। স্থায়ীত্ব ছিল ২৬ সেকেন্ড।
ভূমিকম্পের সময় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে লোকজন বাসা থেকে বের হয়ে আসে। ঝাঁকুনিতে অনেকের বাসার সুকেশ, আলমিরা, শেলফ ও টেবিল থেকে জিনিসপত্র পড়ে যায়।
চাঁদপুরের জ্যৈষ্ঠ সাংবাদিক প্রফেসর দেলোয়ার আহমেদ জানান,হাসপাতালে ফোন করে তিনি খবর নিয়েছেন ভূমিকম্পে আহত কেউ চিকিৎসা নিতে আসেননি। তবে বাসা বাড়ি কর্মস্থল থেকে অনেকে আতঙ্ক ভয়-ভীতিতে রাস্তায় বের হয়ে আসতে তাড়াহুড়ুতে আহত হয়েছে।
এদিকে, ভূমিকম্পের কারণে মতলব সরকারি কলেজের প্রধান ফটকের নাম ফলকের দুটি অক্ষর (‘মত’) ভেঙে পড়েছে, তবে কলেজের ভিতরের ভবনে কোনো ক্ষতি হয়নি। এছাড়া কিছু ঘরবাড়ীর দেয়ালে ফাটল দেখা গেছে।
এ উপজেলার নায়েরগাঁও উত্তর ও দক্ষিণ, খাদেরগাঁও, নারায়ণপুর, উপাদী উত্তর ও দক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা জানিয়েছেন, ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবাই হুড়োহুড়ি করে নিরাপদ স্থানে চলে এসেছেন। চাঁদপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মতলব দক্ষিণ জোনাল অফিসের ডিজিএম জানান, এখন পর্যন্ত কোথাও ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ পাওয়া যায়নি।
মতলব সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, কলেজের ভিতরের কোনো ভবনের ক্ষতি হয়নি, শুধুমাত্র প্রধান ফটকের নাম ফলকের দুটি অক্ষর ভেঙে গেছে।
মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সালেহ আহমেদ এবং উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুনতাহিনা পৃথুলা জানান, ভূমিকম্পের পর বিভিন্ন এলাকায় ফোর্স পাঠিয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে, কোথাও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
মতলব দক্ষিণ ফায়ার স্টেশনের সাব-অফিসার মেহেদী হাসান জানান, এ পর্যন্ত কোথাও বড় ধরেনের ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি, তবে কলেজের প্রধান ফটকের নাম ফলকের দুটি অক্ষর ভেঙে পড়েছে।