উদ্বোধন থমকে দিচ্ছে সেতু সংলগ্ন নির্মাণাধীন আচঁ ব্রীজ

সুন্দরগঞ্জে ১৪’শ ৯০ মিটার দীর্ঘ তিস্তা সেতুর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ

এফএনএস (মোঃ ইমদাদুল হক; সুন্দরগঞ্জ, গাইবান্ধা) :
| আপডেট: ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ১২:৩৫ পিএম | প্রকাশ: ৪ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৪:৩৪ পিএম
সুন্দরগঞ্জে ১৪’শ ৯০ মিটার দীর্ঘ তিস্তা সেতুর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলা ও কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলাবাসীর মধ্যে সেতু বন্ধন রচনার লক্ষে তিস্তা নদীর উপর হরিপুর-চিলমারী সদর দপ্তরের সাথে যোগাযোগ রক্ষাকারী ১৪’শ ৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি গার্ডার সেতুর নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখন শুধু উদ্বোধনের উপেক্ষায় থাকলেও তা থমকে যাচ্ছে সেতু সংলগ্ন সুন্দরগঞ্জের হরিপুর ইউনিয়নের শহরের মোড়ে নির্মাণাধীন ৯৬ মিটার দীর্ঘ আর্চ ব্রীজ। ব্রীজটির নির্মাণ কাজ কবে নাগাদ শেষ হবে এই নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। দুই উপজেলাবাসী তথা গাইবান্ধা ও কুড়িগ্রাম জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্নের সেতু ১৪’শ ৯০ মিটার দীর্ঘ হরিপুর-চিলমারী পর্যন্ত তিস্তা নদীর উপর নির্মিত সাড়ে ৮০০’শ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত পিসি গার্ডার সেতুটি সৌদি সরকারের অর্থায়নে এলজিইডির সার্বিক তত্ত্বাবধানে নির্মাণ করেন চীনের একটি কন্ট্রাকশন ফার্ম। কিন্তু সেতু সংলগ্ন শহরের মোড়ে ৯৬ মিটার দীর্ঘ অপর একটি আর্চ ব্রীজ নির্মাণ জরুরী হয়ে পড়ায় চট্টগ্রামস্থ নিপা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয় এলজিইডি কর্তৃপক্ষ। কার্যাদেশ প্রদান ও চুক্তি মোতাবেক ব্রীজটির নির্মাণ কাজ শুরুর তারিখ ছিল ১০ নভেম্বর/২১ ইং ও সমাপ্তির তারিখ ৩০ জুন/২৪ ইং বেধে দেওয়া হয়। ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয় ৯ কোটি ৬৬ লাখ ৬৬ হাজার ৬৮২ টাকা ৭৩৩ পয়সা। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি ব্রীজটির কাজ শুরু করলেও আর্চ রীব, হেঙ্গার বার এবং ক্রোস ব্রাচিং এর ঢালাই এর কাজ সম্পুন্ন না করেই মাঠ পর্যায়ের দায়িত্বরত এলজিইডি ও পরাশর্মক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাগণের অগোচরে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি ব্রীজের লং গার্ডার, ক্রোস গার্ডার ও ডেক স্লাবের স্টেজিং সিষ্টেম হতে কিছু সাপোর্ট সরিয়ে ফেলে। এতে করে আর্চ-১ (স্পেন এ১-পি১) এর লং গার্ডার ও ডেক্স স্লাবে স্যাংগিং ডিফেলেকশনের উদ্ভব হয়। বিষয়টি নজরে আসলে এলজিইডির ডিজাইন ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী (সেতু ডিজাইন) তাপস চৌধুরী ব্রীজটি সরেজমিন পরিদর্শন করে ১৪ মার্চ/২৪ইং প্রতিবেদন দাখিল করেন। সে অনুযায়ী পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জেভি অফ সিনিয়াম-ডিইউসিটি, চীন-বাংলাদেশ কর্তৃক রেট্রোফিটিং কাজের নকশা প্রদান করে। কিন্তু ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি তা কর্ণপাত না করে মাত্র ৫৫ শতাংশ কাজ করে ব্রীজটির নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখেন। এছাড়া অন্য দুইটি স্পেনের কাজও বন্ধ রাখায় আর্চ ব্রীজ নির্মাণ প্রকল্পটি আগামী ৩০ জুনেও সম্পন্ন হবে না বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সংশয় প্রকাশ করছেন। ফলে তিস্তা নদীর উপর নির্মিত ১৪’শ ৯০ মিটার দীর্ঘ পিসি সেতুটি আগামী জুনের মধ্যে চলাচলের জন্য খুলে দেয়ার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এদিকে এলজিইডি কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সাথে ঠিকা চুক্তি বাতিল করেন। স্মারক নং ৪৬.০২.০০০০.৭৩৬.০০৪.০০৭.২৪-২৮১ তারিখ: ০৩ জুন/২৪ইং। কিন্তু ঠিকা চুক্তি বাতিল করা হলেও ওই ঠিকাদার গত ১৪ ডিসেম্বর/২৪ইং থেকে ব্রীজটির অসমাপ্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে ব্রীজের স্থায়ীত্ব নিয়ে জনমনে সংশয় দেখা দিয়েছে। এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। ব্রীজ নির্মাণের জন্য নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট কনসালটেন্ট এলজিইডির সাবেক পিডি প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম প্রামানিকের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে হাতে সময় নাই, কথা বলতে পারবো না বলে মুঠোফোন কেটে দেন। উপজেলা প্রকৌশলী সদ্য বদলীকৃত আব্দুল মান্নাফ জানান, ওই ঠিকাদার কাজ করছে এর প্রতিবাদ করায় আমাকে বদলী হতে হয়েছে। নির্বাহী প্রকৌশলী এলজিইডি ছাবিউল ইসলাম জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি ব্রীজটির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আশাকরছি দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্রীজটির কাজ সম্পুর্ণ হবে। ঠিকা চুক্তি বাতিল প্রসঙ্গে তিনি জানান, ওই ঠিকাদার নির্মাণ কাজ করছে। জনস্বার্থে অনেক সময় অনেক কিছু এড়িয়ে চলতে হয়। প্রকল্প পরিচালক এলজিইডি আব্দুল মালেক জানান, আমি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির ঠিকা চুক্তি বাতিলের জন্য নির্বাহী প্রকৌশলীকে পত্রাদেশ দিয়েছি। তবে এখন কি হচ্ছে তা আমার জানা নাই। 

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে