জয়পুরহাট-২ আসনে দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে রোববার বিকেল ৪টায় জয়পুরহাট টু বোগ্রাগামী প্রধান সড়ক এর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় ব্যানার নিয়ে রাস্তায় শুয়ে পড়ে টায়ার জ্বালিয়ে ঘণ্টাব্যাপী বিক্ষোভ করেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। পরে তারা স্থানীয় দলীয় কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফার সমর্থিত তৃণমূল নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন-বছরের পর বছর ত্যাগী, পরীক্ষিত ও মাঠের রাজনীতিতে সক্রিয় নেতাদের মূল্যায়ন না করে তাদের মনোনয়ন বঞ্চিত করা হয়েছে। তাদের দাবি, তৃণমূলের মতামত উপেক্ষা করে ‘অতিথি পাখি’, অরাজনৈতিক, অসাংগঠনিক ও জনবিচ্ছিন্ন ব্যক্তি সাবেক ডিসি আব্দুল বারীকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে। তাই এই মনোনয়ন তারা “মানবেন না, মানা যাবে না”বলে ঘোষণা দেন। নেতাকর্মীদের এক দাবি- সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফাকেই পুনরায় মনোনয়ন দিতে হবে।
বিক্ষোভকারীরা বলেন, ঘোষিত প্রার্থী আব্দুল বারীকে এ আসনের সাধারণ মানুষ চেনেন না। তিনি স্থানীয়ভাবে গ্রহণযোগ্য নন এবং মাঠের রাজনীতির সঙ্গে তার সম্পৃক্ততাও নেই। তাদের মতে, তৃণমূলের মতামতকে গুরুত্ব দিলে দল আরও শক্তিশালী হবে-তাই দ্রুত মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করা প্রয়োজন।
জেলা যুবদল নেতা এফতাদুল বলেন, আমরা ১৭ বছর ধরে আন্দোলন করেছি- হুলিয়া মাথায় নিয়ে পালিয়ে থেকেছি, দুঃসময়ে রাজপথে ছিলাম। কিন্তু ডিসি বারী তো দলের কেউ নন। এই ১৭ বছর তিনি কোথায় ছিলেন? যখন আমরা লুকিয়ে ছিলাম, তিনি কি আমাদের খোঁজ নিয়েছেন? তার সমাবেশে বিভিন্ন জায়গা থেকে ৪০-৫০ জনের বেশি মানুষই আসে না। কালাই-আক্কেলপুরের মানুষও তাকে চেনে না-তিনিও এলাকাবাসীকে চিনেন না। জয়পুরহাট-২ আসনে আরও চারজন ত্যাগী ও যোগ্য নেতা আছেন সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক মৃত্যুঞ্জয়ী ছাত্রনেতা আব্বাস আলী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওবাইদুর রহমান চন্দন এবং লায়ন সিরাজুল ইসলাম বিদ্যুৎ। রাজপথের নেতারাই রাজপথে থাকে-‘অতিথি পাখি’কে আমরা মেনে নেব না।
তৃণমূলের ভোটার রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি বিএনপির সাধারণ কর্মী। কোনো পদ না থাকলেও আমাকে জেলে যেতে হয়েছে, বাড়িছাড়া হতে হয়েছে। আমাদের খবর নিয়েছেন স্থানীয় ত্যাগী নেতারাই। তাদের বাদ দিয়ে একজন আমলাকে কেন মনোনয়ন দেওয়া হলো? তিনি মাঠের রাজনীতির কিছুই বোঝেন না; এলাকার মানুষও তাকে চেনে না। তার সমাবেশে ৫০-৬০ জনের বেশি মানুষ থাকে না। তাই অবিলম্বে মনোনয়ন পরিবর্তন করতে হবে।
বিক্ষোভ চলাকালে নেতাকর্মীরা শান্তিপূর্ণভাবে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মনোনয়ন পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান। তবে এ বিষয়ে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।