রাজশাহী মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে ফের উত্তেজনা

প্রেস বিজ্ঞপ্তি | প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর, ২০২৫, ০৮:৪২ পিএম
রাজশাহী মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে ফের উত্তেজনা

রাজশাহী মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষকসহ অন্য শিক্ষকদের লাঞ্চিত করার ঘটনার জের ধরে রাজশাহী মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মচারী-অভিভাবকদের মাঝে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় স্কুলটির শিক্ষকরা দুপুরে জরুরী সভা করেন এবং সভা পরবর্তীতে স্কুলের সভাপতি ও রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক/যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষাৎ শেষে তাকে সভার রেজুলেশনের ফটোকপি কপি এবং একটি লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন। বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে এক শিক্ষার্থীর স্কুলে ‘ছাত্রত্ব’ নিয়ে সন্দেহ (যেহেতু সে কখনও স্কুলে ক্লাস করে নি, বিধায় সে স্কুলে ভর্তি হয়েছে কিনা) হলে বিষয়টি নিশ্চিত হতে প্রধান শিক্ষক একরামুল হককে বলেন স্কুলের কম্পিউটার ল্যাব এ্যাসিসটেন্ট মো. আব্দুল্লাহ ইবনে শরীফ। এ বিষয়কে কেন্দ্র করে বেলা ১২টার দিকে ঐ শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. খাইরুল আলম স্কুলের অফিস সহকারী ফরহাদ হোসেন এবং সেই ল্যাব এ্যাসিসটেন্ট মো. আব্দুল্লাহ ইবনে শরীফসহ স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল হামিমকে লাঞ্চিত করেন। এ সময় বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকরা সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করলে সেই অভিভাবক খাইরুল আলম তাদের উপরও চড়াও হয়। তাদেরকে লাঞ্চিত করার পাশাপাশি সকল শিক্ষক-কর্মচারীদের বিভিন্ন হুমকি-ধামকি প্রদান করেন। এ বিষয়টি স্কুলে ছড়িয়ে পড়লে সৃষ্টি হয় উত্তেজনা। এমন ঘটনায় শিক্ষক-শিক্ষার্থী, অভিভাবক-কর্মচারী সকলেই হতবাক হন। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে দুপুরে বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ স্কুলের টিচার্স রুমে জরুরী সভায় বসেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন, রাজশাহী মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল হামিম। সভায় উপস্থিত ছিলেন, সিনিয়র শিক্ষক যথাক্রমে মনিরা ফেরদৌসী, সাবিনা ইয়াসমিন, মোহা. তরিকুল ইসলাম, মো. ইস্তেকোয়ামুল এহসান (বিদ্যুৎ), সহকারী শিক্ষক যথাক্রমে মো. সিদ্দিকুর রহমান, মোসা. ফারহানা আফরোজ বানু, মোসা. সানুয়ারা খাতুন, মোসা. হাবিবা খাতুন, মো. ইব্রাহিম উদ্দীন, অফিস সহকারী মো. ফরহাদ হোসেন ও ল্যাব এ্যাসিসটেন্ট মো. আব্দুল্লাহ ইবনে শরীফ প্রমূখ। সভায় সকলে স্কুল প্রাঙ্গণে অভিভাবক খাইরুল আলম কর্তৃক শিক্ষক লাঞ্চিত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জ্ঞাপন করেন। ‘দশম শ্রেণীর শিক্ষার্থী’ মাসুদ রানাকে অভিভাবক খাইরুল আলম নির্বাচনী পরীক্ষায় পাশ করিয়ে দেয়ার প্রলোভন প্রদান করছেন যা স্কুলে শিক্ষার মান ক্ষুন্ন করছে যাতে প্রধান শিক্ষকের অবৈধ যোগসাজস রয়েছে; বিধায় প্রধান শিক্ষক অভিভাবকের দ্বারা শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করছেন, যা হতে দেয়া যাবে না সভায় এমন সিদ্ধান্ত সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়। প্রধান শিক্ষক একরামুল হক ও অভিভাবক খাইরুল আলমের মধ্যে গভীর সম্পর্ক আর তিনি (প্রধান শিক্ষক) তার (অভিভাবক) মাধ্যমে শিক্ষক-কর্মচারীদের লাঞ্চিত করেছেন বিধায় অভিভাবক খাইরুলকে প্রধান শিক্ষকের রুমে এমনকি বিদ্যালয়েও প্রবেশ করতে দেয়া হবে না বলেও সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। অভিভাবক খাইরুল আলমের নাতী আবদুল্লা আল রাফি বিদ্যালয়ে না আসলেও তিনি শ্রেণী শিক্ষকে জোরপূর্বক হাজিরা করান এবং আগামীতেও যেন হাজিরা দেন তার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন, বিধায় ঐ অনিয়মিত শিক্ষার্থীকে বিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র (টিসি) প্রদান করার সিদ্ধান্তও সভায় সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণ করা হয়। এছাড়াও সভায় গত ৪ নভেম্বর তারিখে প্রধান শিক্ষক মো. একরামুল হকের আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত দূর্নীতি, নারী সহকর্মীদের সাথে অশালীন আচরণ, প্রশাসনিক অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগে রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনারসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দফতরে যে অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে যেখানে প্রধান শিক্ষক একরামুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করা ও উচ্চতর তদন্ত কমিটি গঠনের মাধ্যমে তদন্ত করাসহ ৫ (পাঁচ) দফা দাবি দ্রুত বাস্তবায়নে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক/যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের সাথে সাক্ষাৎ ও তাকে আবেদন করার জন্য সর্বস্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী রাজশাহী মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল হামিমের নেতৃতে রাজশাহী মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা আজ বিকেল তিনটার দিক্বে রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে গিয়ে রাজশাহীর অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক/যুগ্মসচিব) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমানের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন। সাক্ষৎকালে শিক্ষকরা স্কুলের সার্বিক পরিস্থিতি তাকে মৌখিকভাবে জানান একই সাথে তারা সার্বিক সহযোগিতা চান। একইসাথে অবিলম্বে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক একরামুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করার জন্য দাবি জানান। সাক্ষাৎ শেষে শিক্ষকরা তারা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ ও সভার রেজুলেশনের ফটোকপি দাখিল করেন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে