রাজধানীর রামপুরায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় ঘটে যাওয়া হত্যাকাণ্ডের মামলায় দুই সেনা কর্মকর্তাকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে। চব্বিশের জুলাই ও আগস্টে ২৮ জন নিহত হওয়ার অভিযোগে দায়ের করা এই মামলার শুনানি সোমবার সকাল থেকে ট্রাইব্যুনাল চত্বরে কড়া নিরাপত্তার মধ্যেই শুরু হয়।
সোমবার সকাল প্রায় সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সবুজ রঙের প্রিজন ভ্যানে করে লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলাম ও মেজর রাফাত বিন আলমকে ট্রাইব্যুনালে আনা হয়। সেনা হেফাজতে থাকা দুজনকে গত ২২ অক্টোবর প্রথমবার ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছিল। সেই শুনানির পর তাদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল–১।
এই মামলার শুনানি চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–১ এ। চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর সমন্বয়ে তিন সদস্যের বেঞ্চ শুনানি গ্রহণ করছেন।
তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, গত জুলাই ও আগস্টে ছাত্র–জনতার আন্দোলনের সময় রামপুরায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে ২৮ জন নিহত হন এবং অনেকে আহত হন। অভিযোগপত্রে বলা হয়, আন্দোলনকারীদের ওপর গুলি ছোড়ার ঘটনায় লেফটেন্যান্ট কর্নেল রেদোয়ানুল ইসলামকে সরাসরি দেখা গেছে এবং অন্যান্য আসামিরাও ওই সময় নেতৃত্বে ছিলেন।
মামলায় মোট চারজনকে আসামি করা হয়েছে। ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত রেদোয়ানুল ও রাফাত ছাড়াও দুজন পলাতক আছেন। তারা হলেন, ডিএমপির খিলগাঁও অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার রাশেদুল ইসলাম এবং রামপুরা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মশিউর রহমান। পলাতকদের হাজিরে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ আগেই দেওয়া হয়েছিল, যা ইতোমধ্যে বাস্তবায়ন হয়েছে। আজকের শুনানিতে তাদের জন্য স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে।
ট্রাইব্যুনাল এলাকায় সোমবার সকাল থেকেই নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। হাইকোর্টের প্রবেশপথ, ট্রাইব্যুনালের ফটক এবং সুপ্রিম কোর্ট এলাকার আশপাশে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব ও বিজিবির পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সদস্যরাও টহলে ছিলেন।