কাহারোলে আমন ধানের ফলন বিপর্যয়, মিলছে না কাঙ্খিত দাম

এফএনএস (মোঃ আব্দুল্লাহ; কাহারোল, দিনাজপুর) :
| আপডেট: ২৫ নভেম্বর, ২০২৫, ০৭:০৬ পিএম | প্রকাশ: ২৫ নভেম্বর, ২০২৫, ০৬:৪৪ পিএম
কাহারোলে আমন ধানের ফলন বিপর্যয়, মিলছে না কাঙ্খিত দাম

দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলায় ৬টি ইউনিয়নে মাঠে মাঠে চলছে আমন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের মহোৎসব। আমন চাষীরা সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমন ধান ঘরে তোলার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছেন। 

বাধ সেধেছে অসময়ে বৃষ্টি ও বৈরী আবহাওয়ার কারণে দিনাজপুরের কাহারোল উপজেলার আমন ফলনে বড় ধরণের বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। পাশাপাশি বাজারে আমন ধানের দাম কম থাকায় ব্যাপক লোকসানের মুখে পড়েছেন আমন চাষীরা। উৎপাদন খরচ তোলাই তাদের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। কৃষিবিভাগ লোকসান কাটাতে মৌসুমের শেষে ধান বিক্রির পরামর্শ দিচ্ছেন ধান চাষীদের। কাহারোল উপজেলার বলরামপুর গ্রামের আমন চাষী তোফাজ্জল বলেন, আমি ৪  বিঘা জমিতে ৫১’ধান আবাদ করেছি। এবার বৃষ্টি ও বাতাসের কারণে ধান পড়ে যাওয়ায় ফলন কমে গেছে। প্রতি বিঘা ৫০ শতক জমিতে ২৫ মণ ধান হয়েছে। ডাবর ইউপি’র ডাবর গ্রামের স্কুল শিক্ষক নরেশ চন্দ্র রায় জানান, তিনি ১৮ বিঘা জমিতে স্বর্ণজাতের ধান চাষ করেছিলেন। ধান পড়ে যাওয়ার কারণে ফলন বিপর্যয় হয়েছে। একই এলাকার কৃষক রবীন্দ্রকুমার রায় বলেন, ৫১’ধান গুটিস্বর্ণ, সুমন স্বর্ণ - এই জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। ধান পড়ে যাওয়ার কারণে ফলন খুব খারাপ। যে সকল ধান পড়ে গেছে সেগুলি ১৫ থেকে ১৬ মণ প্রতি বিঘায় হয়েছে। বিনাধান’৩৪ বাতাসে পড়ে গেছে যেগুলো দাড়িয়ে আছে সেগুলোতে ব্যাক হারে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ দেখা গেছে।

কাহারোল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় ১৫ হাজার ৭৪০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৭৫ ভাগ জমির ধান কাটা হয়েছে। গতবছরের তুলনায় এবার প্রতি বিঘায় ৬ থেকে ৭ মণ ধান কম হয়েছে। বর্তমান বাজারে ধানের প্রকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ১১ শত থেকে ১২ শত টাকা মণ। কৃষকেরা জানায়, হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে শ্রমের ধান এই দামে বিক্রি করে লাভ তো দূরের কথা উৎপাদন খরচ উঠছে না। জমির দাম সহ খরচ পড়েছে প্রায় ২৫ হাজার টাকা। ধান বিক্রি করে সর্বোচ্চ দাম পাওয়া যাচ্ছে ২৪ থেকে ২৫ হাজার টাকা। কৃষকেরা আরো বলেন, সার সহ কৃষির উপকরণ এর দাম বেড়েই চলেছে। এই অবস্থায় পরবর্তী ফসল আবাদ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষকেরা। 

কাহারোল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মল্লিকা রানী সেহানবীশ জানান, এবার উপজেলায় ৫১ হাজার ২শত ৬৫ ম্যাট্রিক টন চাল উৎপাদন আশা করা হচ্ছে। তিনি কৃষকদের হতাশ না হয়ে মৌসুমের শেষে ধান বিক্রির মাধ্যমে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন। 

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে