রাজধানীর মহাখালীর কড়াইল বস্তিতে বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে এলাকাজুড়ে। মঙ্গলবার বিকেল থেকে আগুন দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকায় দুই ঘণ্টা পরও নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। প্রতিষ্ঠানটির ১৬টি ইউনিট একটানা আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল ৫টা ২২ মিনিটে প্রথম আগুন লাগার খবর যায় ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষে। দ্রুত কয়েকটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও যানজট এবং এলাকাজুড়ে পানির অভাব আগুন নেভানোর কাজে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। সন্ধ্যার পর পরিস্থিতি আরও জটিল হলে ইউনিট সংখ্যা বাড়ানো হয়।
ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া কর্মকর্তা তালহা বিন জসীম জানান, বস্তির ভেতরে পানি সংগ্রহ করা কঠিন হওয়ায় আগুন নেভাতে সময় লাগছে। তিনি বলেন, “পানির সংকটের কারণে আগুন দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না। ইউনিটগুলো সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।” একই তথ্য দেন নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রাশেদ বিন খালিদ। তিনি জানান, পানিসহ আরও ইউনিট পাঠানো হয়েছে।
বস্তির মাঝ বরাবর থেকে আগুন ছড়িয়ে পড়ে গুলশান এক নম্বর লেকের পাশের বড় অংশে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুন এতটাই দ্রুত ছড়িয়েছে যে অনেকের ঘর চোখের সামনে জ্বলতে দেখেও তারা কিছুই বাঁচাতে পারছেন না। আতঙ্কে বাসিন্দারা যার যা আছে নিয়ে দৌড়ে নিরাপদ স্থানে সরে যাচ্ছেন।
ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মোতায়েন রয়েছে। পুলিশ ভিড় নিয়ন্ত্রণ করছে, যাতে উদ্ধারকাজ ব্যাহত না হয়। বস্তির অভ্যন্তরে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না।
ফায়ার সার্ভিস এখনো আগুনের উৎস বা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সম্পর্কে নিশ্চিত কোনো তথ্য দিতে পারেনি। বড় এলাকাজুড়ে ঘরগুলো টিন, কাঠ এবং বাঁশে নির্মিত হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
গুলশান ও বনানী-সংলগ্ন প্রায় ৯০ একর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত কড়াইল বস্তিতে প্রায় ১০ হাজার ঘর রয়েছে। বছরের বিভিন্ন সময়ে এখানে অগ্নিকাণ্ড ঘটে। গত ২১ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে আগুনে পুড়ে যায় একাধিক ঘর। এর আগে গত বছরের ২৪ মার্চ ও ১৮ ডিসেম্বরও ভয়াবহ আগুন লাগে একই বস্তিতে। আগের প্রতিটি ঘটনায় সংকীর্ণ রাস্তা এবং জনবসতির ঘনত্বের কারণে উদ্ধারকাজ ব্যাহত হয় বলে জানায় ফায়ার সার্ভিস।