চাঁদপুর সড়কের ওপর একাধিক ড্রেজার পাইপ, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি

এফএনএস (মিজানুর রহমান; চাঁদপুর) : | প্রকাশ: ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৫:৫৫ পিএম
চাঁদপুর সড়কের ওপর একাধিক ড্রেজার পাইপ, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি

চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের হাইমচর অংশে গত একমাসেরও অধিক সময় সড়কের ওপর একাধিক ড্রেজার পাইপ রেখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে স্থানীয় বালু ব্যবসায়ীরা। যার ফলে প্রায় সময়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে ছোট বড় যানবাহন। ৫ আগস্টের আগে এই ব্যবসায়ী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জড়িত থাকলেও এখন ব্যাক্তির পরিবর্তন হয়েছে। যুবদলের স্থানীয় এক নেতাকে যুক্ত করা হয়েছে ড্রেজার ব্যবসায়। তবে স্থানীয়দের অভিযোগ আর্থিক সুবিধা নিয়ে পানি উন্নয়নবোর্ডের কর্মকর্তারা এই কাজে জড়িত রয়েছেন। সরেজমিন দেখা গেছে, হাইমচর উপজেলার আলগী নয়ানি সড়কের মোড়ে দীর্ঘ লাইনে বসানো হয়েছে ড্রেজার পাইপ। এখানে প্রায় সময় সিএনজি চালিত অটোরিকশা, অটোবাইক ও মালবাহী ট্রাক দুর্ঘটনার শিকার হয়। স্থানীয় অটোবাইক চালক জাহাঙ্গীর বলেন, ড্রেজার পাইপে সড়ক উঁচু হওয়ার কারণে প্রায় সময় দুর্ঘটনার শিকার হই। কিছুদিন আগে দুর্ঘটনার শিকার হয়ে আমার গাড়ী সামনের অংশ ভেঙে যায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে নয়ানীর স্থানীয় একজন ব্যবসায়ী বলেন, এই ড্রেজার পাইপ এক সময় একস্থানে বসানো হয়। বতর্মানে নয়ানি ও তার কিছু দক্ষিণে দুটি পাইপ সড়কের ওপরে বসানো হয়েছে। এসব ড্রেজার ব্যবসার নেতৃত্ব দেন আবুল কালাম পাটওয়ারী। তিনি আওয়ামী লীগের লোক হওয়ার কারণে বতর্মানে যুবদলের কয়েকজনকে একাজে যুক্ত করে ড্রেজার পাইপ সন্ত্রাসের মাধ্যমে বালুর ভরাট বাণিজ্য চালু রাখা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এইস্থান ছাড়াও বাংলা বাজার ও নয়ানী এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধ সুরুঙ্গ করে বসানো হয়েছে ড্রেজার পাইপ। কিছুদিন আগে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসব ড্রেজার মালিককে ডেকে নিয়ে কাগজে লিখিত রেখেছেন। সড়কের ক্ষতি হলে এর দায়িত্ব ড্রেজার ব্যবসায়ীরা নিবেন বলে অঙ্গীকার করেন। অভিযুক্ত ড্রেজার ব্যবসায়ী আবুল কালাম পাটওয়ারী বলেন, আমি কারো কাছে অনুমতি নেইনি। নিজেই ড্রেজার পাইপ বসিয়েছি। আমার কারো কাছ থেকে অনুমতি নেয়া লাগে না। যেখান থেকে অনুমতি নেয়া দরকার সেখান থেকে নেয়া আছে। একই সাথে অভিযুক্ত এই ব্যাক্তি এ বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলে গণমাধ্যম কর্মিদেরও হুমকি ধমকি প্রদান করেন এবং তিনি সড়কে ড্রেজার পাইপ বসিয়ে এই ব্যবসা চালিয়ে যাবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে । এই বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড চাঁদপুর পওর শাখা-৩ হাইমচরের উপ-সহকারী প্রকশেলী মুহাম্মদ হাসান গাজী বলেন, যারা সড়কের ওপরে এবং সড়ক সুরুঙ্গ করে ড্রেজার পাইপ বসিয়েছে তাদের বিষয়ে গত বছরও থানায় অভিযোগ দিয়েছি। এ বছর আবারও তাদের তথ্য নেয়া হবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ড্রেজার ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সুবিধা নেয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। হাইমচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উম্মে সালমা নাজনীন তৃষা বলেন, সড়কের ওপরে ড্রেজার পাইপ বসানোর বিষয়টি আমার অবগত নেই। জেলা প্রশাসকের সাথে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। চাঁদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকেশৗলী মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, সড়কে সুরুঙ্গ করে পাইপ বসানো হলে সমস্যা নেই। তবে সড়কের ওপরে পাইপ বসানো হয়েছে বিষয়টি ওই সড়কের দায়িত্বরত কর্মকর্তাকে বলে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হবে।  উল্লেখ্য যে, চাঁদপুরে দীর্ঘদিন বছর যাবত পুকুর ডোবা নালা জলাশয় বালু দিয়ে ভরাট করে জমি ক্রয় বিক্রয়ের ব্যবসা চলে আসছে। এই কারণে শহর বন্দর গ্রামের এক শ্রেণীর বালু ব্যবসায়ীরা আনলোড ড্রেজারের মাধ্যমে  অনেক দূর থেকে আনলোড ড্রেজার সংযুক্ত পাইপ টেনে শহর কিংবা গ্রামের রাস্তার উপর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। এই ড্রেজার পাইপ সন্ত্রাস থেকে বাদ যাচ্ছে না গ্রামীণ জনপদের রিং বাঁধ ও সেচ প্রকল্প বেড়িবাঁধও। রাস্তা সুরঙ্গ করেও টানা হচ্ছে ড্রেজার পাইপ। চরম  জনদুর্ভোগ হলেও  প্রশাসনের দৃষ্টি নেই সেখানে। 

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে