স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্নে নাটোরের বড়াইগ্রামের বেকার যুবক ফরজ আলী গড়ে তুলেছিলেন হাঁসের খামার। খামারে একদিনের বাচ্চা কিনে বড় করেছিলেন। বর্তমানে ৬৭০ টি হাঁসের মধ্যে সাড়ে চারশ’টি ডিম দেয়। আশা ছিল হাঁসের ডিম বিক্রি করে সংসারে স্বচ্ছলতা ফিরিয়ে আনবেন। কিন্তু চিকিৎসকের ভুলের কারণে খামারের ৩শ’ হাঁস ইতিমধ্যেই মারা গেছে, অবশিষ্টগুলোও অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এতে তার স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থ খামারী রোববার বিকালে থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। ভুক্তভোগী খামারীর অভিযোগ, স্থানীয় পল্লী পশু চিকিৎসক শরীফুল ইসলামের ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় ইতিমধ্যেই তার পাঁচ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে। অবশিষ্ট হাঁসগুলো মারা গেলে ক্ষতির পরিমাণ কমপক্ষে ১০ লাখে দাঁড়াবে বলে তার দাবি। জানা যায়, উপজেলার মাঝগাঁও ইউনিয়নের পারকোল গ্রামের আব্দুস সোবহানের ছেলে ফরজ আলী ৭-৮ মাস আগে একদিনের বাচ্চা কিনে বাড়িতেই হাঁসের খামার গড়ে তোলেন। ১৫-২০ দিন আগে হাঁসগুলো ডিম দেয়া শুরু করে। প্রচন্ড শীতে হাঁসগুলোর হালকা স্বর্দি লাগে। এতে তিনি ওষুধ দেয়ার জন্য বনপাড়া এলাকার পল্লী চিকিৎসক শরীফুল ইসলামের কাছে যান। কিন্তু শনিবার সন্ধ্যায় তিনি ভবিষ্যতেও আর স্বর্দি লাগবে না জানিয়ে তার বাড়িতে গিয়ে সবগুলো হাঁসকে এন্টিবায়োটিক ওষুধ দেন। ওষুধ দেয়া শেষ হতেই হাঁসগুলো অসুস্থ হয়ে একে একে মরতে শুরু করে। পরে তিনি দ্রুত সেখান থেকে চলে যান। রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই খামারের তিনশ’ হাঁস মারা যায়। ক্ষতিগ্রস্থ খামারী ফরজ আলী জানান, খামারের সাড়ে চারশ’ হাঁস ডিম দিচ্ছিল। ইতিমধ্যে তিনশ’টি মারা গেছে। উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা নিজে এসেও অবশিষ্টগুলোরও কোন চিকিৎসা দিতে পারেননি। এতে সেগুলোও হয়তো সারা রাতে মারা যাবে। আমি একেবারে পথে বসে গেলাম, আমি ক্ষতিপূরণ চাই। পল্লী চিকিৎসক শরীফুল ইসলাম জানান, আমি হাঁসগুলোকে ‘জেন্টামাইসিন সালফেট’ নামের অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েছিলাম। হয়তো হাঁসগুলো এই অ্যান্টিবায়োটিক সহ্য করতে না পেরে মারা গেছে। উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নুর আলম সিদ্দিকী জানান, খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি এবং হাঁসের মরদেহ এনে ময়নাতদন্ত করেছি। হাঁসের শরীরে কোন রোগ ছিল না। অ্যান্টিবায়োটিকের মাত্রার কারণে হয়তো হাঁসগুলো মারা গেছে। এছাড়া ইনজেকশন পুশ করায় মাংসে ছড়িয়ে পড়ার কারণে অসুস্থগুলোরও কোন ওষুধ দিয়ে কাজ হচ্ছে না। বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।