ভুমিকম্প মোকাবেলায় প্রস্তুতি কোথায়?

এফএনএস
| আপডেট: ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৫:৪১ পিএম | প্রকাশ: ৩ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৫:৪১ পিএম
ভুমিকম্প মোকাবেলায় প্রস্তুতি কোথায়?

ভূ-অভ্যন্তরে যখন একটি শিলা অন্য একটি শিলার ওপরে উঠে আসে, তখন ভূমিকম্পন হয়। পৃথিবীপৃষ্ঠের অংশবিশেষের হঠাৎ অবস্থান পরিবর্তন বা আন্দোলনই ভূমিকম্পন। প্রকৃতির কাছে আমরা কতটা অসহায় তা বিভিন্ন প্রকৃতিক দুর্যোগের সময় বুঝতে পারি। দুর্যোগের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ংকর হলো ভূমিকম্প। দীর্ঘদিন ধরেই বাংলাদেশে শক্তিশালী ভূমিকম্প এবং সুনামির আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এর লক্ষণ হিসেবে প্রায়ই দেশের কোথাও না কোথাও মৃদু ও মাঝারি মাত্রায় ভূমিকম্প হচ্ছে। প্রশ্ন হলো, ভূমিকম্প মোকাবিলায় বাংলাদেশ কতটুকু প্রস্তুত? বাংলাদেশে সর্বশেষ ১৮২২ এবং ১৯১৮ সালে মধুপুর ফল্টে বড় ভূমিকম্প হয়েছিল। ১৮৮৫ সালে ঢাকার কাছে মানিকগঞ্জে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়েছিল। অর্থাৎ দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে বড় কোনো ভূমিকম্প হয়নি। সুতরাং আমরাও ভূমিকম্পের রেড জোনে আছি। তখন আমাদের অবস্থা কতটা ভয়াবহ হবে চিন্তা করা উচিত। সময় থাকতেই সতর্ক হওয়ার বিকল্প নেই। মহাতঙ্ক ছড়িয়ে দিচ্ছে ভূমিকম্প। বিশেষ করে ২১ নভেম্বর হয়ে গেছে শতবর্ষের ভিতরে সর্বোচ্চ মাত্রার ভূমিকম্প। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৫.৭। এই বড় ধরনের ভূমিকম্পের রেড জোনে এখন বাংলাদেশ। ভূমিকম্পে নেই আগাম পূর্বাভাসের কোন সুযোগ। হঠাৎ করেই ভূমিকম্প আঘাত হানে বলে কোন পূর্ব প্রস্তুতি সুযোগ মেলে না। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভূমিকম্প হয়ে থাকে। তাদের এই বিষয়ে সচেতনতা রয়েছে। বিশেষ করে ঘরবাড়ি নির্মাণে তারা ভূমিকম্পের বিষয়টি মাথায় রেখে সেই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার মতো তাদের স্থাপনা তৈরি করে। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা এই ভূমিকম্পের মাত্রা যদি রিখটার স্কেলে ৬ হতো তাহলে মহাবিপর্যয় ঘটে যেতে পারত। ভূমিকম্পের কারণে এই সব স্থাপনা এখন মানুষের জীবনহানির কারণ হয়ে উঠেছে বলে তারা মন্তব্য করেছেন। এদিকে ভূমিকম্পের সময়ে আমাদের করণীয় কি সে বিষয়ে সচেতনতার অভাব রয়েছে বলে তারা যোগ করেন। আমরা ঝড় বন্যার প্রস্তুতি কইলে বিষয়ে ধারণা রাখলেও ভূমিকম্প থেকে নিরাপদ থাকার বিষয়টি আমাদের কাছে একেবারেই অজানা। তাই প্রাকৃতিক এই খেয়ালি আচরণে আমাদের জন্য মহাবিপর্যয় ডেকে আনার হুমকি সৃষ্টি করছে। এখনই আমাদের জাতীয় স্বার্থে নতুন এই প্রাকৃতিক দুর্ঘটনার বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে হবে। ভূমিকম্পসংক্রান্ত প্রশিক্ষণের বিষয়টি এখন থেমে আছে। এটি চলমান রাখতে হবে। আর প্রতিবছরই মহড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। মোট কথা, প্রশিক্ষণ, মহড়া, ভূমিকম্প সহনীয় স্থাপনা-এসবই হচ্ছে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির রক্ষাকবচ।