দিঘলিয়ার সবজির দামে স্বস্তি, মুরগি-চালে ম্লান

এফএনএস (সৈয়দ জাহিদুজ্জামান; দিঘলিয়া, খুলনা) : | প্রকাশ: ৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৭:৫১ পিএম
দিঘলিয়ার সবজির দামে স্বস্তি, মুরগি-চালে ম্লান

ভরা মৌসুমে বাজারে সরবরাহ বেড়েছে শীতের সবজির। পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকায় প্রত্যাশার বেশি স্বস্তি মিলছে বাজারে। তবে চাল ও মুরগির বাজারের অস্থিরতায় সেই স্বস্তি যেন অনেকটাই ফিকে হয়ে আসছে। শনিবার (৪ জানুয়ারি) দিঘলিয়ার পথের বাজার, সেনহাটি বাজারসহ বেশ কয়টি বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা যায়। গত ২ সপ্তাহে কোনো কোনো চাল কেজিতেই বেড়েছে ১০ টাকা। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, ধানের দাম বাড়ার ছুতা তুলে চালের দর বাড়াচ্ছেন মিলমালিকরা। এভাবে অযাচিত দাম বাড়ার কারণে বিপাকে সাধারণ ক্রেতারা। ফলে সস্তায় শীতকালীন সবজি কিনে তৃপ্তির ঢেকুর তুললেও ক্রেতার সাশ্রয়ের সেই টাকা খেয়ে ফেলছে চালের বাজার। সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে মিনিকেট ও নাজিরশাইলের। খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি করছেন ৭৮ থেকে ৮০ টাকায়। আর নাজিরশাইল বিক্রি করছেন ৮০ থেকে ৮৬ টাকায়। ১৫ দিন আগেও মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকায় এবং নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেই হিসাবে দুই জাতের চালের কেজিতে বেড়েছে যথাক্রমে ৫ থেকে ১০ এবং ৮ থেকে ১০ টাকা। বিআর-২৮ জাতের চালের কেজি দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। ২ থেকে ৫ টাকা দর বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। এ ছাড়া এ সময় মোটা চাল (গুটি স্বর্ণা) কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকার মতো। ১৫ দিন আগে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া মোটা চাল কিনতে এখন ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা। বাজারে ভারত থেকে আমদানি করা চালের সরবরাহও দেখা গেছে। মিনিকেট জাতের এ চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৬ থেকে ৭৮ টাকায়। দিঘলিয়ার বারাকপুর বাজারের জনৈক চাল বিক্রেতা জানান, মিলার ও করপোরেট প্রতিষ্ঠানের কারসাজিতে ঊর্ধ্বমুখী চালের বাজার। মিল পর্যায়ে দুর্বল তদারকির কারণে সরকারকে বিপদে ফেলতে মিলাররা কৌশলে দাম বাড়াচ্ছেন বলে মনে করেন দিঘলিয়ায় চাল ব্যবসায়ীগণ। তারা এ প্রতিবেদককে বলেন, ধানের দাম বাড়ছে এমন অজুহাতে মিলাররা চালের বাজার গরম করছেন। আসলে ধানের দর বাড়ছে কিনা, জানি না। সবজির দর কমে যাওয়ায় ডিমের দরও নেমেছে। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। তবে মুরগির দর আগের মতোই চড়া। প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৯০ থেকে ২০০ এবং সোনালি জাতের মুরগি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে সরবরাহ বাড়ায় কয়েক দিন ধরে বেশ সস্তায় বিক্রি হচ্ছে সবজি। দু-তিনটি ছাড়া প্রায় সব সবজির দর ৩০ টাকার কমে মিলছে। বিশেষ করে প্রতি কেজি মূলা ও শালগম ১০ টাকা থেকে ২০ টাকা, শিম প্রতি কেজি ২০ টাকা থেকে ৪০ টাকা, গাজর ৫০ টাকা থেকে ৫৫ টাকা, চিচিঙ্গা ৩৫ টাকা থেকে ৪০ টাকা, উচ্ছে ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকায় এবং বেগুন ৪০ টাকা থেকে ৫০ টাকায় কেনা যাচ্ছে। তবে প্রতি কেজি টমেটো মানভেদে ৫০ টাকা থেকে ৭০ টাকায়, বরবটি ৫০ টাকা থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বড় আকারের প্রতিটি ফুল ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে। লাউয়ের পিস কেনা যাচ্ছে ২০ থেকে ৪০ টাকায়। আলুর বাজারেও স্বস্তির খবর রয়েছে। বাজার ভরে গেছে নতুন আলুতে। ফলে দর কমে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে। তবে পুরোনো আলুর কেজি কিনতে খরচ হবে ৫০ টাকা বা তার চেয়ে কিছুটা বেশি। অনেকটাই কমেছে পেঁয়াজের দর। প্রতি কেজি দেশি নতুন পেঁয়াজ ৪০ থেকে ৫০ ও পুরোনো পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে কেনা যাচ্ছে। তবে কিছুটা বেড়ে দেশি রসুনের কেজি ২৩০ থেকে ২৪০ এবং আমদানি রসুন ২২০ থেকে ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া গরুর মাংসের কেজি কেনা যাচ্ছে ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকায়। অপরিবর্তিত দেখা গেছে মাছের বাজার।


আপনার জেলার সংবাদ পড়তে