নগরায়ণ ও পরিবেশ সংকট

টেকসই শহর গড়তে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি

এফএনএস
| আপডেট: ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৮:২৩ এএম | প্রকাশ: ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৮:২৩ এএম
টেকসই শহর গড়তে সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি

বাংলাদেশে নগরায়ণ দ্রুত গতিতে এগোচ্ছে। রাজধানীসহ বড় শহরগুলোতে জনসংখ্যার চাপ, যানজট, বায়ুদূষণ, জলাবদ্ধতা এবং অপরিকল্পিত ভবন নির্মাণ এখন নাগরিক জীবনের বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নগর পরিকল্পনার ঘাটতি ও অব্যবস্থাপনা শহরগুলোকে বসবাসের অযোগ্য করে তুলছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঢাকার বায়ুদূষণ বিশ্বে অন্যতম শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে। যানবাহনের ধোঁয়া, ইটভাটা, নির্মাণকাজের ধুলা—সব মিলিয়ে শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, হৃদরোগসহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ছে। একই সঙ্গে অপরিকল্পিত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়, যা জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তোলে। অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে কৃষিজমি ও জলাশয় দ্রুত হারিয়ে যাচ্ছে। শহরের চারপাশে নদী ও খাল দখল হয়ে যাচ্ছে, ফলে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। নগরায়ণের এই ধারা অব্যাহত থাকলে খাদ্য উৎপাদন কমে যাবে, পানির সংকট বাড়বে এবং পরিবেশের ভারসাম্য ভেঙে পড়বে। গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকা শহরে প্রতিদিন প্রায় ৬ হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হয়, যার বড় অংশই সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা যায় না। প্লাস্টিক ও রাসায়নিক বর্জ্য নদী ও খালে গিয়ে পানিদূষণ বাড়াচ্ছে। এর প্রভাব পড়ছে কৃষি, মৎস্য ও জনস্বাস্থ্যে। এই সংকট থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন বহুমাত্রিক উদ্যোগ। প্রথমত, টেকসই নগর পরিকল্পনা জরুরি। ভবন নির্মাণে সুনির্দিষ্ট নীতি, খাল ও জলাশয় রক্ষা, সবুজ এলাকা সংরক্ষণ করতে হবে। দ্বিতীয়ত, পরিবেশবান্ধব পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। গণপরিবহন উন্নয়ন, বৈদ্যুতিক যানবাহন প্রচলন এবং সাইকেলপথ তৈরি করতে হবে। তৃতীয়ত, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিক করতে হবে। পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্রযুক্তি, প্লাস্টিক কমানো এবং আধুনিক বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণে জোর দিতে হবে। চতুর্থত, নদী ও খাল পুনরুদ্ধার করতে হবে। দখলমুক্তকরণ ও পানি প্রবাহ সচল রাখা অপরিহার্য। পঞ্চমত, জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। নাগরিকদের পরিবেশবান্ধব জীবনধারায় উৎসাহিত করতে হবে।