বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২
বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২
বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২
গণঅভ্যুত্থানের পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া জাতীয় নির্বাচনকে ‘নতুন বাংলাদেশ’ গড়ার এক বিরল সুযোগ হিসেবে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি জানিয়েছেন, নির্বাচন শুধু আরেকটি দায়িত্ব নয়, বরং দেশের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ, যা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে হবে।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনা থেকে দেশের সব উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচন প্রস্তুতি বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। এ সময় বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কর্মকর্তারা অনলাইনে যুক্ত ছিলেন।
ড. ইউনূস বলেন, “ইতিহাস আমাদের এমন একটি সুযোগ দিয়েছে যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ভাগ্যে নাও জুটতে পারে। যদি আমরা এই সুযোগ কাজে লাগাই, তবে আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব, না হলে জাতিকে বড় মূল্য দিতে হবে।” তিনি অতীতের নির্বাচনগুলোকে উদাহরণ দিয়ে বলেন, “বিগত নির্বাচনের অনেকগুলো প্রকৃত নির্বাচন ছিল না, তা ছিল প্রতারণা।”
তিনি ইউএনওদের উদ্দেশে বলেন, নির্বাচন অন্যান্য দায়িত্বের মতো নয়, এটি একটি ঐতিহাসিক দায়িত্ব। আপনারা যদি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন, তাহলে সরকারও সফলভাবে তার লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে। তিনি ভোট ও গণভোটকে দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ উল্লেখ করে বলেন, “নির্বাচন আগামী পাঁচ বছরের জন্য, আর গণভোট শত বছরের জন্য। গণভোটের মাধ্যমে আমরা স্থায়ীভাবে নতুন বাংলাদেশের ভিত্তি স্থাপন করতে পারব।”
প্রধান উপদেষ্টা সদ্য যোগ দেওয়া ইউএনওদের নির্দেশ দেন, প্রতিটি পোলিং স্টেশন পরিদর্শন করতে এবং সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ ও এলাকাবাসীর সঙ্গে আলোচনা করে শান্তিপূর্ণ ও আনন্দমুখর নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তুতি নিতে। তিনি ভোটারদের সচেতন করার ওপর গুরুত্ব দেন এবং বলেন, ভোটের দিন ভোটারদের বোঝাতে হবে, তারা ‘হ্যাঁ’ নাকি ‘না’-তে ভোট দেবেন—মন ঠিক করে আসুক।
ড. ইউনূস কর্মকর্তাদের ধাত্রীর সঙ্গে তুলনা করে বলেন, “ধাত্রী ভালো হলে শিশুর জন্মও ভালো হয়। তেমনি আপনারা দায়িত্ব ঠিকভাবে পালন করলে নির্বাচনও ভালো হবে।” এছাড়া তিনি অপতথ্য ও গুজব প্রতিরোধে সক্রিয় থাকার, সৃজনশীলভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার এবং নারীদের নিরাপদে ভোটকেন্দ্রে উপস্থিতি নিশ্চিত করার নির্দেশ দেন।
তিনি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ার আগেই পরিকল্পনা ও প্রস্তুতি নেওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেন, “নির্বাচন সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত কখন, কীভাবে, কোন কাজ করবেন—এর প্রস্তুতি এখন থেকেই নিন।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার মুখ্য সচিব এম সিরাজ উদ্দিন মিয়া, মন্ত্রিপরিষদ সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম এবং জনপ্রশাসন সচিব মো. এহছানুল হকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বৃন্দ।
