চরভদ্রাসন পদ্মার ঘাটে নাব্যতা সংকটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ

এফএনএস (চরভদ্রাসন, ফরিদপুর) : | প্রকাশ: ১২ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৫:২৭ পিএম
চরভদ্রাসন পদ্মার ঘাটে নাব্যতা সংকটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ

ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা পদ্মা নদীর ঐতিহ্যবাহী গোপালপুর ঘাটে নাব্যতা সংকটে গত ক’দিন ধরে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। উক্ত ঘাটের প্রায় এক কি.মি এলাকার জলমহালের পানি শুকিয়ে চর জেগে ওঠার কারনে যাত্রাবাহী লঞ্চগুলো গোপালপুর ঘাট পয়েন্টে ঢ়ুকতে পারছে না। তাই কিছু দিন ধরে উক্ত ঘাটের পাশের পদ্মার বালুচর থেকে যাত্রীদের ট্রলারে করে প্রায় দেড় কি.মি দুরত্বের মাঝ পদ্মায় অবস্থানরত লঞ্চে তুলে দেওয়া হচ্ছিল যাত্রীদের। সেখান থেকে পদ্মা নদীর অপর প্রান্ত চর মৈনট ঘাটে পারাপার হয়ে আসছিল শত শত ঢাকাগামী যাত্রী। কিন্তু গত দু’দিন ধরে পদ্মার পানি এতোই শুকিয়ে গেছে যে, উক্ত নৌরুটে লঞ্চ চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে এ নৌরুটের যাত্রীরা এখন চরম ভোগান্তি শিকার করে জাগায় জাগায় ঠেকে ঠেকে ষ্পিডবোট করে পদ্মা নদী পারাপার হয়ে যাতায়াত করছেন বলে জানা যায়।

যদিও গত ক’বছর আগে উপজেলা গোপালপুর ঘাট পয়েন্টে পদ্মা পারে চর জেগে ওঠে। পরে উক্ত চরের মাঝখান দিয়ে ড্রেজিং করে লঞ্চ ও ষ্পিডবাট চলাচলের জন্য একটি ক্যানেল বের করেন আনেন বিআইডাব্লিউটিএ। প্রতি বছর শুস্ক মৌসুমে দপ্তরটি ড্রেজিং কার্যক্রম করে থাকেন। কিন্ত চলতি শুস্ক মৌসুমে এখন পর্যন্ত পদ্মার নদীর উক্ত ঘাটে ড্রেজিং কার্যক্রম পরিচালনা হয় নাই। ফলে এ নৌরুটের যাত্রীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এ ব্যাপারে শুক্রবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার জালাল উদ্দিন বলেন, “পদ্মা নদীর ড্রেজিং পুরোপুরি বিআইডাব্লিউটিএ দপ্তরের আওতাভুক্ত। আমরা বিষয়টি তাদের জানিয়েছি”। একই দিন বিআইডাব্লিউটিএ দপ্তরের ফরিদপুর জেলার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর ফরিদ আহমেদকে জিজ্ঞেস করলে তিনি জানান, “ গোপালপুর ঘাটে নাব্যতা সংকটের বিষয়টি আমরা অবগত হয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠানো হয়েছে। আশা করি খুব শীগ্র কাজ শুরু হবে”।

সরেজমিনে উপজেলার গোপালপুর ঘাট ঘুরে জানা যায়, দীর্ঘকাল ধরে উপজেলা পদ্মা নদীর গোপালপুর-মৈনট নৌরুট দিয়ে আশপাশের নগরকান্দা, সদরপুর ও ভাঙ্গা উপজেলা সহ অত্র এলকার হাজার হাজার যাত্রী প্রতিদিন রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে যাতায়াত করে থাকেন। এ নৌপথ দিয়ে খুব সহজে পদ্মা পারি দিয়ে ঢাকা যাতায়াত করতে পারেন।

কিন্তু চলতি শুস্ক মৌসুমে পদ্মার পানি বেশী শুকিয়ে যাওয়ার কারনে উক্ত ঘাটের লঞ্চ ও ষ্পিডবোট চলার জন্য এক কি.মি যে ক্যানেলটি করা হয়েছিল সেই ক্যানেলের পানিও শুকিয়ে হাটুর নিচে এসে দাড়িয়েছে। ফলে যাত্রীরা এখন তাদের ল্যাকেস, ব্যাগ ও শিশু বাচ্চাদের নিয়ে দুর্গম বালুচরে হেঁটে হেঁটে গিয়ে ট্রলারে করে মাঝ পদ্মায় অবস্থানরত লঞ্চে উঠে পদ্মা পারাপার হচ্ছে। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রী সহ যান চালকরা। 

শুক্রবার উক্ত নৌরুটের এক ঢাকাগামী যাত্রী শামসুন্নাহার (৪৭) জানায়, “আমাদের লঞ্চে উঠানোর জন্য গোপালপুর ঘাট থেকে ট্রলারে উঠিয়ে মাঝ পদ্মায় নিয়ে আবার ফেরত আনা হয়েছে। পরে মালপত্রর বোঝা নিয়ে আবার অনেক কষ্টে ষ্পিডবোটে পদ্মা পার হয়ে ঢাকায় আসতে সারাদিন লেগে গেছে”। আর উক্ত ঘাটের লঞ্চ ইজারাদাররা জানায়, “পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে চর জেগে উঠেছে বিধায় ঠেকে ঠেকে লঞ্চ চলাচল করছে। অনেক চরে লঞ্চ ঠেকে গিয়ে ঘন্টার পর ঘন্টা বিলম্ব হচ্ছে”। এ অবস্থায় পদ্মা নদীর উক্ত ঘাটে দ্রুত ডেজিং কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এলাকার সর্ব মহল জোর দাবী তোলেছেন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে