ফেলানীর নামে গুলশানে সড়ক, সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে ‘ফেলানী এভিনিউ’

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৬:৫৪ পিএম
ফেলানীর নামে গুলশানে সড়ক, সীমান্ত হত্যার প্রতিবাদে ‘ফেলানী এভিনিউ’

সীমান্তে হত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের বার্তা ছড়িয়ে দিতে কুড়িগ্রামে বিএসএফের গুলিতে নিহত কিশোরী ফেলানী খাতুনের নামে রাজধানীর গুলশানে একটি সড়কের নামকরণ করা হয়েছে। গুলশান–২ থেকে প্রগতি সরণি পর্যন্ত সড়কটির নতুন নাম দেওয়া হয়েছে ‘ফেলানী এভিনিউ’। বিজয় দিবসের দিনে এই নামফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে সীমান্ত হত্যার বিষয়টি আন্তর্জাতিক বিবেকের সামনে তুলে ধরার কথা জানিয়েছে সরকার।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) গুলশান–২ গোলচত্বরে নামফলক উন্মোচন করেন গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান। তিনি বলেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষ সীমান্ত হত্যা বন্ধ চায়। ফেলানীর ওপর যে নৃশংসতা হয়েছিল, তা প্রতিদিন স্মরণ করিয়ে দিতেই এই সড়কের নামকরণ। এর মাধ্যমে বিশ্ব বিবেকের কাছে জানানো হচ্ছে যে বাংলাদেশের সীমান্তে এখনো সীমান্ত হত্যার মতো জঘন্য পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

উদ্বোধনী বক্তব্যে উপদেষ্টা বলেন, “ফেলানীর নামে এই সড়ক বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির এক নতুন অবস্থানকে তুলে ধরে। বাংলাদেশ যে মাথা উঁচু করে নিজের সম্মান বজায় রাখতে পারে, তার প্রতীক এই সড়ক।” তিনি আরও জানান, বর্তমান সরকার সব ধরনের সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে চায় এবং সেই অবস্থান থেকেই বিজয় দিবসে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ বলেন, “দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে নিজেদের সম্মান রক্ষার প্রতীক ও প্রতিবাদ হিসেবেই ফেলানীর নামে এই সড়কের নামকরণ।” স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী বলেন, ফেলানী হত্যাকাণ্ড কোনো সাধারণ ঘটনা নয়, এটি একটি সুস্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন।

ফেলানী খাতুনের হত্যাকাণ্ড বাংলাদেশের সীমান্ত ইতিহাসে এক বেদনাদায়ক অধ্যায়। বাবার সঙ্গে ভারতের নয়াদিল্লিতে গৃহকর্মীর কাজ করা ফেলানী বিয়ের উদ্দেশ্যে দেশে ফিরছিল। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের অনন্তপুর–দিনহাটা সীমান্তের খিতাবেরকুঠি এলাকায় বিএসএফ সদস্যরা তাকে গুলি করে হত্যা করে। দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা তার মরদেহ কাঁটাতারে ঝুলে ছিল, যা দেশজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

নামফলক উন্মোচন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং ডিএনসিসির কর্মকর্তারা। অনুষ্ঠান শেষে ফেলানীর স্মরণে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে