গুম ও হত্যার অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউলের বিরুদ্ধে ফরমাল চার্জ

গুম ও শতাধিক হত্যাকাণ্ডের অভিযোগে সাবেক সেনা কর্মকর্তা মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করেছে প্রসিকিউশন। মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে কর্মরত সাংবাদিকদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে বিষয়টি নিশ্চিত করেন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম। একই দিনে সকালে প্রসিকিউটর শাইখ মাহদীর নেতৃত্বে একটি দল ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রারের কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে। দলে প্রসিকিউটর মঈনুল করিমসহ অন্যরাও উপস্থিত ছিলেন।

প্রসিকিউশনের ভাষ্য অনুযায়ী, গুমসহ শতাধিক হত্যার ঘটনায় জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ বিষয়ে ট্রাইব্যুনালে শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে আরও কয়েক শ মানুষের হত্যার অভিযোগের তদন্ত চলমান রয়েছে বলে জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।

প্রসিকিউশন সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে সংঘটিত গুম, নির্যাতন এবং শাপলা চত্বরে গণহত্যার ঘটনার সঙ্গেও জিয়াউল আহসানের সম্পৃক্ততার অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলার তদন্ত চলছে। তিনি বর্তমানে গ্রেপ্তার অবস্থায় রয়েছেন।

এর আগে গুমের একটি মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ট্রাইব্যুনাল-১ রোববার (১৮ জানুয়ারি) দিন ধার্য করেন। বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) এ আদেশ দেওয়া হয়। ওই মামলায় মোট ১১ জনকে আসামি করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তাঁর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানের নাম প্রকাশ করা হয়েছে। এই চারজনের মধ্যে গ্রেপ্তার রয়েছেন শুধু জিয়াউল আহসান।

এ ছাড়া শাপলা চত্বরে গণহত্যার অভিযোগে দায়ের করা আরেক মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ট্রাইব্যুনাল-১ সোমবার (১২ জানুয়ারি) সময়সীমা নির্ধারণ করেছেন। ওই মামলাতেও আসামির তালিকায় রয়েছেন জিয়াউল আহসান।

জিয়াউল আহসানকে গত বছরের আগস্টের মাঝামাঝি রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের আগে তিনি ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।