জেআইসি সেলে গুম ও নির্যাতন, শেখ হাসিনা ও ১২ সেনা কর্মকর্তার বিচার শুরুর আদেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশ: ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৪:৩৪ পিএম
জেআইসি সেলে গুম ও নির্যাতন, শেখ হাসিনা ও ১২ সেনা কর্মকর্তার বিচার শুরুর আদেশ

জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলে গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক বর্তমান ১২ সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। অভিযোগ গঠন শেষে আদালত মামলাটির বিচারিক কার্যক্রম শুরু করার নির্দেশ দেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) প্রসিকিউশন ও আসামিপক্ষের শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে প্রসিকিউশনের ওপেনিং স্টেটমেন্ট ও সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ১৯ জানুয়ারি দিন ধার্য করা হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষ জানায়, মামলায় ১৩ আসামির বিরুদ্ধে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আনা হয়েছে। শুনানিতে প্রসিকিউশন দাবি করে, জেআইসি সেলে শত শত মানুষকে আটক রেখে নির্যাতন করা হয়েছে। আবদুল্লাহিল আমান আযমী ও মাইকেল চাকমাসহ অন্তত ২৬ জন নির্যাতনের পর মুক্তি পান। রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য অনুযায়ী, গুমের নির্দেশনা দিতেন শেখ হাসিনা এবং সেই নির্দেশ বাস্তবায়ন করতেন তাঁর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ সংশ্লিষ্ট সেনা কর্মকর্তারা।

অন্যদিকে আসামিপক্ষ অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন জানায়। আদালত উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। এ মামলায় তিনজন সেনা কর্মকর্তা গ্রেপ্তার রয়েছেন। তারা হলেন ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভীর মাজাহার সিদ্দিকী। বৃহস্পতিবার সকালে তাদের ঢাকার সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

মামলার বাকি আসামিরা পলাতক রয়েছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন শেখ হাসিনার সাবেক প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ডিজিএফআইয়ের একাধিক সাবেক মহাপরিচালক ও পরিচালক এবং একজন সাবেক লেফটেন্যান্ট কর্নেল। পলাতক আসামিদের পক্ষে রাষ্ট্রনিযুক্ত আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলেও ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে।

প্রসিকিউশন জানায়, গত ৮ অক্টোবর ১৩ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করা হয়। অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন ট্রাইব্যুনাল। এরপর শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার বিচার শুরুর আদেশ এলো। আদালতের এই সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে জেআইসি সেলে গুম ও নির্যাতনের অভিযোগে বহুল আলোচিত মামলাটির বিচারিক প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে