ময়মনসিংহের ভালুকায় গার্মেন্ট শ্রমিক দিপু চন্দ্র দাসকে নারকীয় উৎসবের মধ্য দিয়ে পিটিয়ে হত্যা, বস্ত্রহীন করে গাছে ঝুলিয়ে আগুনে পোড়ানোর ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) বলেছে, দেশে প্রাণের অধিকার ও আইনের শাসন নেই। উপরন্তু সরকারের কোনো অস্তিত্ব আছে বলে মনে হচ্ছে না। সিপিবির সভাপতি কাজী সাজ্জাদ জহির চন্দন ও সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন শনিবার (২০ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে বলেন, ভালুকার হত্যাকাণ্ডটি শুধুই নিছক কোনো নৃশংস ঘটনা নয়। সমাজ থেকে মনুষ্যত্ববোধ ও যুক্তিবোধ উধাও হয়ে যাওয়ার নজির। হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া বা দাঁড়িয়ে প্রত্যক্ষ করা শতশত মানুষ যে পৈশাচিক অপরাধে সামিল হয়েছে সেটা এক ভয়াবহ সামাজিক মনোবৈকল্যকে নির্দেশ করে। যার অভিঘাত থেকে পুণ্যবান-পাপী, ধার্মিক-ধর্ম বিমুখ, মুসলিম-হিন্দু কেউ রক্ষা পাবে না। গুটি কয়েক উন্মত্ত ব্যক্তি ও উগ্র ডানপন্থী স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী ছাড়া আর কেউ এমন সমাজ চায় না। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, ভালুকাসহ সারা দেশে চলমান সকল বীভৎসতার প্রধান কারণ দেশে ন্যূনতম আইনের শাসন না থাকা। যার ফলে এখানে প্রাণের অধিকার বলেও কিছু নেই। নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন দেশের এই শোচনীয় অবস্থার দায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিতে হবে। নেতৃবৃন্দ অভিযোগ করেন, হয় দেশে কোনো সরকারের অস্তিত্ব নেই অথবা সরকারের মদদেই দেশে দ্বৈত শাসন চালু হয়েছে। অধ্যাপক ইউনূস সরকার যে সংবিধানের অধীনে শপথ নিয়েছে, বাস্তবে সেই সংবিধান ও আইনকে পাশ কাটিয়ে শরীয়া আইনের প্রচলন ঘটানো হয়েছে। মিথ্যা অপবাদ মাথায় নিয়ে যার নিষ্ঠুর শিকার হয়েছেন গার্মেন্ট শ্রমিক দিপু চন্দ্র দাস। নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সরকার যদি এখনো তার শপথের প্রতি সামান্য অঙ্গীকারবোধ করে ভালুকার ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষা তদন্ত করে দায়ীদের আইনের আওতায় আনে এবং একটি অসহায় মানুষের জীবন বাঁচাতে কিছুই না করার দায় নিয়ে দিপু চন্দ্র দাসের তিন বছরের কন্যা সন্তান ও পরিবারের দায়িত্ব নেয়; হয়তো তিনি ন্যায় বিচার পাবেন।