জামায়াতে যোগদানের পর নিজ এলাকায় কৈফিয়ত সভা আখতারুজ্জামানের

এফএনএস (মোঃ রফিকুল হায়দার টিটু; কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ) : | প্রকাশ: ২১ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৫:২৯ পিএম
জামায়াতে যোগদানের পর নিজ এলাকায় কৈফিয়ত সভা আখতারুজ্জামানের

বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সদ্য জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করা মেজর (অব.) আখতারুজ্জামান রঞ্জন শনিবার সন্ধ্যায় উপজেলার গচিহাটা কলেজ মাঠে কৈফিয়ত সভা ও জুলাই যোদ্ধা শহীদ শরিফ ওসমান হাদির শোক সভার আয়োজন করেন। সভায় বক্তব্য রাখার পূর্বে ‘ নদীর এ কুল ভাঙে ও কুল গড়ে, এই তো নদীর খেলা’ গানটি বাজিয়ে শুনিয়ে তিনি তার বক্তব্য শুরু করেন।  

তিনি বলেছেন, জামায়াতে যোগদান করায় বিএনপির অনেক বন্ধু ফেসবুকে আমাকে নিয়ে লেখা লেখি করছে। তারা এখন বুঝতে পারছে আমি তাদের ঘরের একটি মোটা খুঁটি ছিলাম। আমি নিজে থেকে ঘর ছাড়িনি। আমাকে বের করে দিয়েছেন। গত তিন বছর আমার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখেননি, আজ আমাকে গালাগালি করছেন এতেও ভালো লাগে, কারণ আপনারা আমাকে নিয়ে ভাবছেন। জামায়াতে ইসলাম আমাকে আশ্রয় দিয়েছে। এখন আমি জামায়াতের ঘরে। এতে আমি শুকরিয়া জানাই। আমি জামায়াতের বিরুদ্ধে আর সমালোচনা করবো না। জামায়াতের কাছে তিনটি আবদার তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘প্রথমত, আমি চাই দুর্নীতিমুক্ত, চাঁদাবাজিমুক্ত, সন্ত্রাস ও দখলদারমুক্ত বাংলাদেশ। আমরা আর চাঁদা দিতে চাই না, রাস্তাঘাটে নিরাপদে চলতে চাই। দ্বিতীয়ত, সত্য প্রকাশ ও শান্তি প্রতিষ্ঠা চাই, বিশৃঙ্খলা নয়। শান্তির মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হোক। তৃতীয়ত, সামাজিক ন্যায়বিচার ও মর্যাদা চাই, মানুষ মানুষকে সম্মান করবে।’

এসময় তিনি ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির হত্যার বিচার চেয়ে বলেন, আমরা একজন ত্যাগী হাদিকে হারিয়েছি। আমরা এই হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। যারা এই হত্যার সাথে জড়িত প্রয়োজনে পাতাল থেকে তুলে এনে বিচার করতে হবে। আমরা শুধু বিচারই চাই না শরিফ ওসমান হাদির রেখে যাওয়া কাজ বাস্তবায়ন করতে চাই।

সভায় আখতারুজ্জামানের ভক্ত-সমর্থকসহ স্থানীয় লোকজন অংশ নেন। সভা শেষে শরিফ ওসমান হাদির রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। এ সময় কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসনের জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী মাওলানা শফিকুল ইসলাম মোড়ল, উপজেলা আমির অধ্যাপক মোজাম্মেল হক জোয়ারদার, সেক্রেটারি মাওলানা মাহমুদুল হাসানসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। 

উল্লেখ্য, আক্তারুজ্জামান রঞ্জন ১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) থেকে প্রার্থী হয়ে কিশোরগঞ্জ-২ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। সে সময় কেবল কটিয়াদী উপজেলা নিয়েই এ আসন গঠিত ছিল। ২০০৮ সাল থেকে কটিয়াদীর সঙ্গে পাকুন্দিয়া উপজেলাকে যুক্ত করা হয়। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ধানের শীষ প্রতীকে কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি পুলিশের সাবেক আইজি নূর মোহাম্মদের কাছে পরাজিত হন। পরে ২০২২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বিএনপি থেকে বহিষ্কার করা হয়। এ নিয়ে তিনি বিএনপি থেকে পাঁচবার বহিষ্কার হন। এছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কিশোরগঞ্জ-২ (কটিয়াদী-পাকুন্দিয়া) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ট্রাক প্রতীকে নির্বাচন করে তিনি পরাজিত হন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে