ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমীর ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম নিজে সরাসরি নির্বাচনে প্রার্থী না হলেও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার তিন ভাই চারটি আসনে দলীয় টিকিটে হাত পাখা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে-সাংগঠনিক প্রভাব, মাঠপর্যায়ের তৎপরতা এবং ভোটব্যাংকেও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের হাত পাখা মার্কার রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি। স্থানীয় সরকার রাজনীতিতেও চরমোনাই পীরের পরিবারের উপস্থিতি পুরনো। সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম ২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত টানা দুই মেয়াদে চরমোনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। পরবর্তীতে চরমোনাই ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্ব নেন তার ভাই সৈয়দ ইছহাক মুহাম্মদ আবুল খায়ের। তিনিও দুই মেয়াদে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন। বর্তমানে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পীরের আরেক ভাই সৈয়দ মুহাম্মদ জিয়াউল করিম।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভাগের মর্যাদার আসন বলেখ্যাত বরিশাল-৫ (সদর) আসনে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নায়েবে আমীর ও বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের সহ-সভাপতি মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম। তিনি (সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করিম) বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনেও নির্বাচন করবেন। এর আগে ২০২৩ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করিম মেয়র পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলেন। ওইসময় তাকে ভোটের মাঠে নাটকীয়ভাবে পরাজিত করা হয়।
সূত্রে আরও জানা গেছে, বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দীগঞ্জ-কাজিরহাট) আসনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সৈয়দ ইছহাক মুহাম্মাদ আবুল খায়ের। তিনি সংগঠনের সহকারী মহাসচিব এবং চরমোনাই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক দুইবারের চেয়ারম্যান। পাশাপাশি তিনি বাংলাদেশ কুরআন শিক্ষা বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ পাওয়ার টেকনোলজি লিমিটেডের চেয়ারম্যান।
এছাড়াও চরমোনাই পীরের আরেক ভাই মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাল আল মাদানী ঢাকা-৪ আসন থেকে দলের মনোনয়ন পেয়েছেন। তিনি সংগঠনের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং পীর সাহেবের মেজ ভাই। সম্প্রতি তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশের বোর্ড অব গভর্নরের সদস্য হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। একই সঙ্গে চরমোনাই আহছানাবাদ রশীদিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে ২০১৮ সালের নির্বাচনে একই আসনে তিনি প্রার্থী ছিলেন।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমীর ও বরিশাল-৫ এবং বরিশাল-৬ আসন থেকে দলের মনোনীত প্রার্থী মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেন, সারাদেশেই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীরা শক্ত অবস্থানে রয়েছেন। তিনি আরও বলেন-আট দলীয় জোটের শরিকদের তুলনায় দক্ষিণাঞ্চলে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীরা অনেক এগিয়ে রয়েছেন। ফলে ইসলামী আন্দোলনের বাহিরে অন্য শরিক দলগুলোর প্রার্থীদের জয়ের সম্ভাবনা তুলনামূলক কম।
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম আরও বলেছেন-এসব বাস্তবতা বিবেচনায় ২১টি আসনের মধ্যে ২/৩টি ছাড়া বাকি আসনগুলোতে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীরা অগ্রাধিকার পাবে। একইসাথে দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তিনি নিজেও দুটি আসনে হাতপাখা প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বলেও উল্লেখ করেন।