গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা নদীর উপর নির্মিত ১৪’শ ৯০ মিটার দীর্ঘ হরিপুর-চিলমারী সদরের সাথে সংযোগ রক্ষাকারী সেতু অদুর ৯৬ মিটার দীর্ঘ আর্চ ব্রীজ (দৃষ্টি নন্দর ব্রীজ)। নির্মাণে ঠিকাদারের গাফিলতিতে ক্রটি দেখা দেয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ঠিকাচুক্তি বাতিল করলেও ওই ঠিকাদারই নির্মাণ কাজ চালিয়ে যাওয়ায় ব্রীজটির স্থায়ীত্ব নিয়ে জনমনে সংশয় দেখা দিয়েছে। সরেজমিন দেখা গেছে, মুল সেতু থেকে মাত্র কয়েক মিটার অদূরে আর্চ ব্রীজ নির্মাণ চলছে। ব্যয় বরাদ্দ ধরা হয়েছে ৯ কোটি ৬৬ লাক্ষ ৬৬ হাজার ৬’শ ৮২ টাকা ৭৩৩ পয়সা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এলজিইডির সার্বিক তত্ত্বাবধানে ব্রীজটি নির্মাণের জন্য ১০ নভেম্বর/২১ ইং চট্টগ্রামস্থ নিপা এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ৩০ জুন/২৪ ইং নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ করা শর্তে চুক্তিবদ্ধ হয়। কিন্তু ঠিকাদার ব্রীজের ৫৫ দশমিক ৯০ ভাগ কাজ সম্পূর্ণ করতে না করতেই নির্মাণ কাজে ক্রটি ধরা পড়ে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আসলে নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়া হয়। পরে ব্রীজটির ক্রটি পরির্দশন করেন এলজিইডির ডিজাইন ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী (সেুত ডিজাইন) তাপস চৌধুরী। তিনি সরেজমিন পরিদর্শন করে ক্রটি খুজে পান এবং ১৯ মার্চ/২৪ ইং প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনের আলোকে ব্রীজ সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী আব্দুল মালেক ১১ নভেম্বর/২৪ইং ৪৬.০২.০০০০.৭৩৬.০০৪.০০৭.২৪-৫৫৫ স্মারকে ঠিকাদারকে নির্বাহী প্রকৌশলী গাইবান্ধা ৮ মে/২৪ ইং স্মারক নং ১৫১৬ এবং ৩ জুন/২৪ইং ২৮১ স্মারকের পত্র মোতাবেক কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। ঠিকাদার কারণ দর্শানোর নোটিশের জবাব না দেয়ায় প্রকল্প পরিচালক প্রধান প্রকৌশলীর অনুমোদন সাপেক্ষে ৩ জুন/২৪ ইং ৪৬.০২.০০০০.৭৩৬.০০৪.০০৭.২৪-২৮১ স্মারকে নির্বাহী প্রকৌশলী গাইবান্ধাকে ঠিকাচুক্তি বাতিল করার জন্য পত্রাদেশ দিয়ে ঠিকাচুক্তি বাতিল করেন। এদিকে ঠিকাচুক্তি বাতিল হলেও গত ১৪ ডিসেম্বর/২৪ইং ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি ব্রীজটির অসম্পূর্ণ কাজ শুরু করলে একদিকে যেমন ব্রীজের স্থায়ীত্ব নিয়ে বির্তকের সৃষ্টি হয় অপরদিকে দেখা দেয় মুল সেতু চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা। ঠিকাদার উপজেলা প্রকৌশলীকে অবগত না করে ব্রীজটির ঢালাই কাজ শুরু করার প্রতিবাদ জানালে উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মান্নাফকে লাঞ্চিত করেন ঠিকাদারের কনসালটেন্ট সাবেক পিডি সহিদুল ইসলাম প্রামানিক। উপজেলা প্রকৌশলী আব্দুল মান্নাফ জানান, তাকে না জানিয়ে কনসালটেন্টের পরামর্শে ঢালাই কাজ চালিয়ে যান। যেখানে এলজিইডি ব্রীজটি নির্মাণ কাজের তদারকি করছে সেখানে ব্রীজের ঢালাই কাজ হবে অথচ জানানো হলো না এটি প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছি। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে কনসালটেন্টকে মুঠোফোনে পাওয়া গেলেও তিনি হাতে সময় নেই বলে মুঠোফোন কেটে দেন। নির্বাহী প্রকৌশলী এলজিইডি ছাবিউল ইসলাম জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি ব্রীজটির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আশাকরছি দ্রুত সময়ের মধ্যে ব্রীজটির কাজ সম্পূর্ণ হবে। ঠিকাচুক্তি বাতিল প্রসঙ্গে তিনি জানান, ওই ঠিকাদার নির্মাণ কাজ করছে। জনস্বার্থে অনেক সময় অনেক কিছু এড়িয়ে চলতে হয়। প্রকল্প পরিচালক এলজিইডি প্রকৌশলী আব্দুল মালেক জানান, আমি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটির ঠিকাচুক্তি বাতিলের জন্য পত্রাদেশ দিয়েছি। পরে কি হয়েছে তা আমার জানা নাই।