নওগাঁর মহাদেবপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ফসলী জমিতে অবৈধ পুকুর খননকারীর ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়া নিয়ম ভেঙ্গে নদী থেকে বালু উত্তোলন করায় ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সংশ্লিষ্টরা জানান, উপজেলার ভীমপুর ইউনিয়নের ঝাড়িরা গ্রামের মাঠে ২২ বিঘা ফসলী জমি নষ্ট করে বিশাল পুকুর খনন করা হচ্ছিল। শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বিকেলে বিষয়টি স্থানীয় একজন সাংবাদিক মহাদেবপুর দর্পণ নামক ফেসবুক আইডি থেকে লাইভ প্রচার করেন ও এই পুকুর খননের কয়েকটি ছবি পোষ্ট করেন। বিষয়টি জানতে পেরে শনিবার সকালে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রিফাত আরা থানা পুলিশসহ দুর্গম ওই এলাকায় পৌঁছে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনার সময় ঘটনার সত্যতা পান। সেখানে ওই গ্রামের উপেন্দ্রনাথ হাজরার ছেলে শ্রী আশীষ কুমার হাজরা নামে এক ব্যক্তি মাটি কাটার কাজে ব্যবহৃত ভ্যেকু মেশিন চালাচ্ছিলেন। ২০১০ সালের বালু মহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনের ৪ (খ) ধারা লঙ্ঘন করায় ১৫ (১) ধারায় ওই ব্যক্তির সর্বনিম্ন ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা পরিশোধ না করায় তাকে আটক করে উপজেলা সদরে আনা হয়। বিকেলে পুকুর খননকারী জরিমানার টাকা পরিশোধ করে তাকে ছাড়িয়ে নিয়ে যান।
এর দুদিন আগে বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো: আরিফুজ্জামান এবং সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রিফাত আরা উপজেলার হাতুড় ইউনিয়নের মহিষবাথান বালুর পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় খেলার মাঠ ও ফসলী জমি নষ্ট করে বালু উত্তোলন করায় উপরোক্ত আইনে মহিষবাথান গ্রামের মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে গোলাম মোর্শেদের ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।
চলতি মৌসুমে উপজেলার সর্বত্র মাটিখেকো ও বালুখেকোদের ব্যাপক তান্ডব শুরু হয়েছে। অবৈধ মাটি ব্যবসায়ীরা তিন ফসলী জমি কেটে পুকুর খনন ও ফসলী জমির টপ সয়েল কেটে নিয়ে খোলা ট্রাকে করে পরিবহণ করে ইটভাটাগুলোতে সরবরাহ করছে। ফলে কমছে ফসলী জমি। এভাবে চলতে থাকলে খাদ্যে উদ্বৃত্ত এই এলাকায় খাদ্য সংকট দেখা দিবে। এছাড়া পুরনো মজাপুকুর সংস্কার করে খোলা ট্রাক্টরে করে কাদামাটি পরিবহণ করায় উপজেলা সদরের সব পাকা রাস্তা মাটিতে সয়লাব হয়ে থাকে। সামান্য পানি, শিশির অথবা হালকা বৃষ্টিপাতে রাস্তা পিচ্ছিল হয়ে সারাদিন অসংখ্য যানবাহান দূর্ঘটনার শিকার হয়। বালু ব্যবসায়ীরা অবৈধ খননযন্ত্র ব্যবহার করে নিয়ম ভেঙ্গে ভূগর্ভস্থ বালু উত্তোলন করায় ভূমিধ্বসের সৃষ্টি হচ্ছে। যত্রতত্র টাক্টরে বালু পরিবহণ করায় নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ রাস্তাঘাট। এসবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় খুব সামান্যই। এই অবস্থায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের দুটি অভিযানকে সাধুবাদ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।