ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে গোপনে গ্রাহকদের বৈদ্যুতিক ট্রান্সমিটার গায়েবের চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে পিডিবি’র উপসহকারি প্রকৌশলী হারূনুর রশিদের বিরূদ্ধে। গতকাল রোববার সকাল ৭টার দিকে হঠাৎ সরাইল সদরের বড়দেওয়ান পাড়ার গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেন। পরে কাউকে কিছু না বলেই গায়েব করার জন্য গত ৮-১০ ধরে চলমান ট্রান্সমিটারটির সকল ক্যাবল খুলে ফেলেন। সিঁড়ি লাগিয়ে পাশে নিজসরাইল গ্রামের ট্রান্সমিটারে বড়দেওয়ান পাড়ার গ্রাহকদের সরবরাহের ক্যাবল সংযুক্ত করতে গিয়ে ধরা পড়েন। বড়দেওয়ান পাড়ার লোকজন তখন তীব্র প্রতিবাদে ফেটে পড়েন। বাধ্য হয়ে কাজ গুটিয়ে অফিসের দিকে চলে যান। আর নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন এই বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।
প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় লোকজন জানায়, গতকাল রোববার সকাল ৭ টার দিকে বড়দেওয়ান পাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও পিডিবি’র যৌথ প্রচেষ্টায় প্রায় ৮-১০ আগে ট্রান্মমিটারটির সকল ক্যাবল খুলে ফেলেন উপসহকারি মো. হারূনুর রশিদ। এর আগে তিনি বড়দেওয়ান পাড়ার কারো সাথে কোন ধরণের কথাবার্তা বা পরামর্শ করেননি। পাশেই নিজসরাইল গ্রামের গ্রাহকদের সুবিধার্থে স্থানীয় পিডিবি ও গ্রামবাসীর যৌথ প্রচেষ্টায় আরেকটি ট্রান্সমিটার বসানো আছে। গতকাল সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিজসরাইল গ্রামের ওই ট্রান্সমিটারে বড়দেওয়ান পাড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহের সংযোগ দেওয়ার কাজ শুরূ করেন। বিষয়টি জেনে তড়িৎ ঘটনাস্থলে হাজির হন বড়দেওয়ান পাড়ার বাসিন্দারা। তারা নিজসরাইল গ্রামবাসীর ট্রান্সমিটারের সংযোগ দেয়া ও বড়দেওয়ান পাড়ার গ্রাহকদের ট্রান্সমিটার গয়েবের কাজে কঠিন ভাবে বাঁধা দেন। এই ঘটনায় গ্রামবাসীর তীব্র প্রতিবাদ ও বাঁধার কারণে পিছু খটতে বাধ্য হন সহকারি প্রকৌশলী। বড়দেওয়ান পাড়ার কারো সাথে কোন ধরণের কথা না বলেই কার স্বার্থে ও কেন ট্রান্সমিটারটি কেন গায়েব করার চেষ্টা করছিলেন? বড়দেওয়ান পাড়া ও নিজ সরাইল গ্রামের কারো সাথে কোন ধরণের এ বিষয়ে কোন কথা বলেছেন কিনা? হঠাৎ করে নিজ সরাইল গ্রামের ট্রান্সমিটারে বড়দেওয়ান পাড়ার গ্রাহকদের বিদ্যুৎ সরবরাহের সংযোগ দেওয়ার পরামর্শ বা নির্দেশ আপনাকে কে দিয়েছেন? এমনসব প্রশ্নের উত্তরে একেবারেই নীরব থাকেন প্রকৌশলী হারূনুর রশিদ। বড়দেওয়ান পাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি মো. আনিছুল ইসলাম ঠাকুর, মো. ফরহাদ উদ্দিন ঠাকুর, মো. জাহাঙ্গীর ঠাকুরসহ অনেকেই বলেন, শুধু বড়দেওয়ান পাড়ার জন্য পিডিবি ও আমাদের যৌথ উদ্যোগে এই ট্রান্সমিটারটি বসাতে আমাদের অনেক অর্থ ব্যয় হয়েছে। এখন আমাদেরকে কিছু বলেই ট্রান্সমিটারটি গায়েব করার চেষ্টা মোটেও ভালো কাজ না। কার নির্দেশে? ও কেন? প্রকৌশলী এই কাজটি করছিলেন এটা গ্রাহকরা জানতে চায়। নিজ সরাইল গ্রামের বাসিন্দা মো. দুলাল মিয়া, মো. কালু মিয়া ও মাসুদ মিয়া বলেন, আমাদের ট্রান্সমিটারে আমাদেরই হয় না। আবার বড়দেওয়ান পাড়ার সংযোগ দিবেন কিভাবে? আর বিষয়টি আমাদের কাউকে উনারা জানাননি। তবে অভিযুক্ত উপসহকারি প্রকৌশলী মো. হারূনুর রশিদ গ্রাহকদের কারো সাথে কোন কথা না বলার কথা স্বীকার করে বলেন, গায়েব নয়। ট্রান্সমিটারটিতে ধারণকৃত পুরো বিদ্যুৎটা বড়দেওয়ান পাড়ার গ্রাহকদের লাগে না। তাই একজন সহকারি প্রকৌশলীর পরামর্শে এটি খুলে অফিসে নিয়ে যেতে চাইছিলাম। গ্রাহকদের কাউকে কিছু না জানিয়ে কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে একেবারে নীবর থাকে প্রকৌশলী। সরাইল পিডিবি’র নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) মো. শামীম আহমেদ বলেন, একটি পাড়ার ট্রান্সমিটার সরিয়ে ফেলার বিষয় আমার জানা নেই। আমি এ বিষয়ে খুঁজ খবর নিয়ে দেখছি।