ক্ষেতলাল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে খুদে খালেদা জিয়া

জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে খুদে বেগম খালেদা জিয়ার বেশে প্রধান অতিথির আসন গ্রহন করের সামিয়া আক্তার (৮) ও ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা আব্বাস আলী।

১১ই জানুয়ারী  রাত ৮ টায় ক্ষেতলাল পৌর এলাকার ভাসিলা স্পোর্টিং ক্লাব আয়োজিত   সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে  নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময়  করেন খুদে দেশনেত্রী বেগম জিয়া।

খুদে বেগম  জিয়া সামিয়া আক্তার (৮) পোশাক সাজ সজ্জা ঠিক যেন বেগম জিয়ার আদলে সেজে অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থিত হয়। শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি এদেশের  নাগরিক, বিদেশের মাটি আমার ঠিকানা নয়। বাংলাদেশই আমার ঠিকানা। বিদেশে আমার বন্ধু আছে, কোন প্রভু নেই। বিগত ১৫ বছর এই দেশকে নৈরাজ্য বানিয়ে জনগণের সকল অধিকার কেড়ে নিয়েছে।   ছাত্রজনতা ও দেশের মানুষের গণআন্দোলনের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে ওই খনি হাসিনার সাংঙ্গপাঙ্গ'রা । আপনারা সকলেই ভাল থাকবেন। আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত  আমার দলের নিবেদিত, সাহসী, মজলুম কর্মী ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রনেতা আব্বাস আলীর জন্য আপনারা  দোয়া করবেন। 

খুদে বেগম জিয়ার বক্তব্য শেষে ক্ষেতলাল উপজেলা বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি ফখরুজ্জামান চৌধুরী রুমির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথির আসন গ্রহণ করেন আব্বাস আলী ও তার নেতা কর্মীরা ।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আক্কেলপুর পৌর যুবদলের সাবেক সভাপতি এম কেরামত আলী,কালাই থানা  স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক মোল্লা , কালাই পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হেলাল উদ্দিন মন্ডল, সাইবার যোদ্ধা ডিএম জাকির হোসেন সহ আরও অনেকে। 

আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে  বক্তব্য রাখেন, ঢাকা মহানগর উত্তর জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রায়হান সিদ্দিক। আমাদের ক্ষেতলালের কৃতি সন্তান  আব্বাস আলীকে আমি কাছ থেকে দেখেছি তার উপরে আওয়ামীগের হায়েনারা কতটা নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে, তাকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে  নির্যাতন করে মৃতভেবে বস্তায় ভরে সাহাবাগ থানার সামনে ফেলে রেখে গিয়েছিল। ছাত্রলীগের উপেন চ্যালেঞ্জের মুখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মধুর ক্যান্টিনে তারেক রহমানের জন্মদিন পালন করতে গিয়ে কতটা নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছিল। এরকম হাজারো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে আপনাদের কাছে এসে দাড়িয়েছে। আব্বাস আলী  আপনাদের সন্তান তিনি আগামী জাতীয় নির্বাচনে জয়পুরহাট ২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী। আপনারা তাঁর জন্য দোয়া করবেন, সাথে থাকবেন ইনশাআল্লাহ। 

প্রধান অতিথির আব্বাস আলী বক্তব্যে বলেন, আমি ১৯৯৮ থেকে  জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত। ছাত্রদলের রাজনীতি করার কারণে ১৯৯৯সালে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসায় আওয়ামী সন্ত্রাসী দ্বারা নির্যাতন ও জেল জুলুমের  শিকার  হয়েছি। এর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে পড়াশুনার পাশাপাশি ছাত্রদলের রাজনীতি করার কারণে আমাকে আওয়ামীছাত্রলীগের  নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে রক্তাক্ত হয়েছি। তবুও বিএনপির রাজনীতি থেকে আমাকে সরাতে পারেনি।  দলের নির্দেশনা পালন করতে গিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাকিম চত্তরে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের আঘাতে আমার মেরুদণ্ডের উপরে লাফিয়ে লাফিয়ে নৃত্য করেছিল, ২০১৮ সালে নির্বাচনের নামে তামাশা করে নাটক সাজিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিনত করে রাষ্টীয়ভাবে ঘোষনা দিয়ে আমাকে ২১ দিন ডিবির অন্ধকার ঘরে গুম করে রেখেছিল, এরকম হাজারো রাজপথে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে হয়েছিল আমাকে, ২৮ শে  অক্টোবর  ২০২৩  ইতিহাস সাক্ষী সেদিন নয়া পল্টন বিএনপির কার্যালয়ের সামনে পুলিশ বাহিনী, আমাকে গুলি করে, মাথায় আঘাত করে মৃতভেবে ফেলে গিয়েছিল, আল্লাহর অশেষ দয়ায় ও ডাক্তারদের চিকিৎসা এবং দেশবাসির দোয়ায় আমি আপনাদের মাঝে ফিরে এসেছি আলহামদুলিল্লাহ। 

২৪ এর গণআন্দোলনের সময়ও আমি রাজপথে সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করি সেখানেও হাতে, পায়ে, শরীরে শত শত ছড়াগুলি লাগার পরেও বিজয় নিশ্চিত করেই ঘরে ফিরি।  

আগামী নির্বাচনে সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী জয়পুরহাট - ২ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী সবার কাছে দোয়া চেয়ে তার বক্তব্য শেষ করেন।  

তার এই সক্রিয়তা ও বড় শোডাউন জনসভায় উপস্থিত দলের কেন্দ্রীয় নেতাদেরও নজর কাড়ে। দলের একাধিক দায়িত্বশীল নেতা নাম প্রকাশ না করে বলেন, আব্বাস নিশ্চয় হাইকমান্ডের সবুজ সংকেত পেয়ে দলীয় কার্যক্রমে সক্রিয় হয়েছেন। স্থানীয় নেতাকর্মীরাও আব্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন। সূত্র মতে, কালাই ক্ষেতলাল আক্কেলপুর বিএনপি-জামায়াতের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবিলায় এই সময়ে আব্বাসের বিকল্প কেউ নেই।