মহাদেবপুরে অবৈধ মৎস্য ঘের ভেঙ্গে দিল প্রশাসন

এফএনএস (রওশন জাহান; মহাদেবপুর, নওগাঁ) : | প্রকাশ: ১৩ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৭:২৮ পিএম
মহাদেবপুরে অবৈধ মৎস্য ঘের ভেঙ্গে দিল প্রশাসন

নওগাঁর মহাদেবপুরে কথিত সাংবাদিক পরিচয়ে আত্রাই নদীতে দেয়া অবৈধ মৎস্য ঘের ভেঙ্গে দিলেন প্রশাসন। সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার খাজুর ইউনিয়নের মধুবন গ্রামে আত্রাই নদীর পশ্চিম পাড়ে দেয়া ঘেরটি ভেঙ্গে দেয়া হয়।

স্থানীয়রা জানান, ফ্যাসিবাদের সময় উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের কথিত নেতা এশিয়ান টিভির মহাদেবপুর প্রতিনিধি মোখলেছুর রহমান এবং গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থীর মহাদেবপুর সদর সেন্টারের নির্বাচনী সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করা দৈনিক যুগান্তরের মহাদেবপুর প্রতিনিধি আইনুল হোসেন বিভিন্ন স্থানের ভূয়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক পরিচয় দিয়ে বেশ কয়েকটি বিরোধীয় পুকুর লিজ নেয়। এসব পুকুরের দখল নিতে বিভিন্ন সময় স্থানীয় প্রকৃত মৎস্যজীবীদের সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়ে। ওইসব পুকুরে তারা কোনরকম মাছের পোনা না ছাড়লেও আগের মালিকদের ছাড়া কয়েকশ’ মণ মাছ সন্ত্রাসী কায়দায় তুলে নেয়। এমনকি তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা ও হামলা করে আসছে। তারা একই পরিচয়ে প্রভাব বিস্তার করে আত্রাই নদীর বিভিন্ন স্থানে অবৈধভাবে কাঠা দিয়ে রাখে। স্থানীয় প্রকৃত মৎস্যজীবীদের সেসব কাঠা দেয়া স্থানে ঢুকতে না দিয়ে নিজেরাই মাছ ধরার প্রস্তুতি নেয়। নদীর পানি বেশি থাকার সময় এসব কাঠা দেয়া হয়। কাঠা দেয়া স্থানে অসংখ্য গাছের গুল, জঙ্গল প্রভৃতি দিয়ে মাছের কৃত্রিম আবাসস্থল গড়ে তোলা হয়। মাছ ধরে রাখতে নানা কৌশল অবলম্বন করা হয়। পরে নদীর পানি কমে আসলে কাঠা দেয়া স্থানের চারিদিকে জাল দিয়ে ঘিরে লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ অবৈধভাবে ধরে বিক্রি করে।

সোমবার সকালে মধুবন এলাকায় দেয়া বিশাল কাঠায় মাছ ধরার সময় স্থানীয় একজন সাংবাদিক মহাদেবপুর দর্পণ নামক ফেসবুক আইডি থেকে লাইভ প্রচার করেন। বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা শিল্পী রায় এবং তাঁর আমন্ত্রণে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রিফাত আরা দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে অবৈধ মৎস্য ঘেরটি ভেঙ্গে দেন। তাঁরা আত্রাই নদী ঘিরে রাখা জালগুলো কেটে দেন। এসময় মাছ ধরা লোকজন পালিয়ে যায়। এসময় উপজেলা মৎস্য অফিসের ক্ষেত্র সহকারি আব্দুস ছালাম, রুবেল হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয়রা জানান, কথিত সাংবাদিক মোখলেছুর রহমান তার গ্রামের বাড়ি মান্দা উপজেলার পাঁজরভাঙ্গা থেকে লোকজন ডেকে এনে মাছগুলো ধরছিলেন। ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ অভিযানে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রকৃত মৎস্যজীবীরা।

এদিন সকালে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রিফাত আরা ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনা করে ফিজিশিয়ানস্ স্যাম্পল ওষুধ বিক্রির জন্য মজুদ রাখায় ওষুধ ও কমমেটিকস আইন ২০২৩ এর ৪০ (গ) ধারায় উপজেলা সদরের হাসপাতাল এলাকার মেসার্স অধিকারী ফার্মেসীর মালিক শ্রীরামপুর গ্রামের যোগেশ চন্দ্র অধিকারীর ছেলে শ্রী ইন্দ্রজিত অধিকারীর তিন হাজার টাকা এবং মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধ মজুদ রাখায় একই আইনের ৪০ (খ) ধারায় আলেয়া ফার্মেসীর মালিক খোর্দকালনা গ্রামের মৃত নাসের আলী মন্ডলের ছেলে রফিকুল ইসলামের পাঁচ হাজার টাকা ও মেসার্স মহি মেডিকেল স্টোরের মালিক মহাদেবপুর ঘোষপাড়ার সিরাজুল ইসলামের ছেলে জহুরুল ইসলামের তিন হাজার টাকা জরিমানা করেন।

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে