দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের প্রতিশ্রুতিতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা প্রায় ৩৫ ঘণ্টা পর তাদের অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন। তবে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, বুধবার অনুষ্ঠেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভায় এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম শাটডাউনের আওতায় থাকবে।
দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর, অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা এবং অস্থায়ী ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে আবাসন ভাতা প্রদানের দাবিতে রোববার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে অনশন শুরু করেন জবির শিক্ষার্থীরা। দীর্ঘ সময় অনশনে থাকার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েন অনেক শিক্ষার্থী।
সোমবার বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক থেকে পদযাত্রা শুরু করে সচিবালয়ের সামনে এসে পৌঁছান। অনশনরত অসুস্থ শিক্ষার্থীরা স্যালাইনের স্ট্যান্ডসহ রিকশায় চড়ে পদযাত্রায় অংশ নেন। পরে সন্ধ্যায় উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী একেএম রাকিব সংবাদ সম্মেলনে অনশন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন।
তিনি জানান, “আমাদের তিনটি দাবির মধ্যে দুটি ইতোমধ্যে মেনে নেওয়া হয়েছে। বুধবার মন্ত্রণালয়ের সভায় দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তরের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। এছাড়া, ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীকে আবাসন ভাতা প্রদানের বিষয়ে আলোচনার আশ্বাস পেয়েছি। তাই আমরা অনশন প্রত্যাহার করেছি। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।”
শাটডাউন কর্মসূচির আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক, শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনসহ বিভিন্ন ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে, কোনো ক্লাস বা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন বলেন, “আমাদের শিক্ষার্থীরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাবিগুলো আদায়ের চেষ্টা করেছে। আশা করছি, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, “শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের কারণে কাজের অগ্রগতি সহজ হয়েছে। বুধবারের সভায় প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা এবং অন্যান্য দাবিগুলো নিয়ে আলোচনা হবে।”
উল্লেখ্য, শিক্ষার্থীদের টানা আন্দোলনের কারণে দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ দ্রুত বাস্তবায়নের আশা করা হচ্ছে। বুধবারের সভা থেকে আসা সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করবে শিক্ষার্থীদের পরবর্তী পদক্ষেপ।