চিকিৎসক ও অন্যান্য জনবল সংকটের কারণে গাইবান্ধার স্নুদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন সাব সেন্টারগুলো নিজেরাই রুগ্ন হয়ে পড়েছে। এতে করে সুচিকিৎসা বঞ্চিত হচ্ছেন উপজেলার লাখও মানুষ। সুচিকিৎসা না পেয়ে রোগিরা শহরমুখি হচ্ছেন। দুস্থ্য, গরীব ও অসহায় রোগিরা অর্থাভাবে সুচিকিৎসা বঞ্চিত হয়ে ঘরে শুয়ে শুয়ে ধুঁকে ধুঁকে মরছেন।
উপজেলার ১৫ ইউনিয়ন ও এক পৌর এলাকার ৭ লক্ষাধিক মানুষের উন্নত ও সুচিকিৎসা দেওয়ার লক্ষে আশি দশকের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নির্মিত হয়। পরে ২০১৪ সালে ৫০ শয্যায় উন্নতি করা হয়। নির্মাণ করা হয় ইউনিয়ন সাব সেন্টার। তথ্য সূত্র মতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ইউনিয়ন সাব সেন্টারগুলোর জন্য মেডিকেল অফিসারের কাগজে কলমে পদ ২৪টি থাকলেও বর্তমানে রয়েছে ৯ জন। এর মধ্যে সংযুক্তিতে রয়েছেন ৩ জন, মাতৃকালিন ছুটিতে ও প্রশিক্ষণে রয়েছেন ২ জন। ফলে ৪ চিকিৎসক দিয়ে চলছে উক্ত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগিদের সেবা কার্যক্রম। এছাড়া কনসালটেন্ট এর ১১টি পদ থাকলেও রয়েছে মাত্র ২ জন। এর মধ্যে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে সংযুক্তিতে রয়েছেন ১ জন। ডেন্টাল সার্জনের পদ বরাবরে শুন্য। অপর দিকে উপ সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ১৭ জনের মধ্যে রয়েছে মাত্র ১ জন। তিনিও এ মাসেই অবসরে যাচ্ছেন। সব মিলে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সাব সেন্টারগুলো চিকিৎসা সেবা প্রদানের পরিবর্তে নিজেরাই রুগ্ন হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন গড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ রোগি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে সেবা নিতে গিয়ে যেমন পাচ্ছেন না তেমনি কর্মরত চিকিৎসকরাও সেবা প্রদানে হিমশিম খাচ্ছেন। রোগিরা দূর্ভোগের স্বীকার হয়ে বাড়ী ফিরে যাচ্ছেন। যদিও বিত্তশালী রোগিরা শহরমুখি হন কিন্তুু অসহায় দুস্থ্য ও গরিব রোগিরা অর্থাভাবে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক রোগী জানান, জনবল সংকটে এখানে ঠিকমত ডাক্তার থাকেনা। সকালে একবার ডাক্তার রাউন্ড দেয়। আর সারাদিন কোন ডাক্তার আসেনা। মাঝে মাঝে নার্স এসে খোঁজ খবর নেন। একজন রোগির স্বজন বলেন, একদিন আগে ভর্তি হয়েছি এখনো ডাক্তার দেখেনি। একজন নার্সকে ডাক্তারের কথা বলাতে তিনি উচ্চ বাক্যে বলেন ডাক্তারের কাছে যান আপনারা কোন খানে ভর্তি হয়েছেন সেখানে যান। এই হলো উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের হাল চিত্র। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: দিবাকর বসাক জানান, আমি কয়েকদিন আগেই যোগদান করেছি। লোকবল সংকটের কারণে চিকিৎসা সেবা ঠিকভাবে দেয়া যাচ্ছে না। উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের নিকট চাহিদা পাঠানো হয়েছে আশা করি দ্রুত এ সমস্যা সমাধান হবে। জেলা সিভিল সার্জন ডা: কানিজ সাবিহা মুঠোফোনে বলেন সারা বাংলাদেশের হাসপাতালগুলোর চিত্র প্রায় একই। এই মুহুর্তে কেবলমাত্র নতুন নিয়োগের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান সম্ভব।