ধান ও সরিষার পাশাপাশি ভুট্টা চাষে ঝুঁকছেন দিঘলিয়ার কৃষকেরা। ফলে ভুট্টা চাষে নতুন সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। ভুট্টার দানা মানুষের খাদ্য হিসেবে এবং গাছ ও সবুজ পাতা গোলার হিসেবে ব্যবহার হয়। হাঁস-মুরগি ও মাছের খাদ্য হিসেবেও এর যথেষ্ট চাহিদা রয়েছে। তা ছাড়া জ্বালানি হিসেবে ভুট্টার গাছের রয়েছে চাহিদা। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি বছর ভুট্টা চাষে কৃষকেরা বেশ লাভবান হবেন। বাড়বে ভুট্টা চাষির সংখ্যাও। উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ মৌসুমে উপজেলার অল্প কিছু কৃষক ভুট্টা চাষের জন্য উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। তবে ভুট্টা চাষের জন্য কোনো প্রকার প্রণোদনা দেওয়া হয় নি এমনটাই জানিয়েছেন দিঘলিয়া উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এ উপজেলায় ৮ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও ৩ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২৫ মেট্রিকটন। উপজেলার ফরমাইশখানা গ্রামের ভুট্টা চাষি মোল্লা কামরুল ইসলাম বলেন, ‘ভুট্টা চাষ এ অঞ্চলের মানুষের মধ্যে আশার আলো জাগিয়েছে। গত বছরও অল্প জমিতে ভুট্টা চাষ করে আশানুরূপ ফল পেয়েছিলাম। এ বছর প্রায় এক একর জমিতে আগাম জাতের ভুট্টা চাষ করেছি। আমাদের এলাকায় ভুট্টা গরুর খাবার হিসেবেও বেশ জনপ্রিয়। একই গ্রামের কৃষক শফিকুর রহমান মোড়ল বলেন, কৃষি কার্যালয় থেকে প্রণোদনা পেয়ে এক বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছি। গাছের চেয়ারাও ভালো দেখা যাচ্ছে। সার ব্যবহার করলে গাছগুলো তাড়াতাড়ি বেড়ে উঠবে এবং মাস খানিক সময়ের মধ্যে ভুট্টা গাছগুলোতে ফলন চলে আসবে। ভুট্টার বাম্পার ফলনের আশা করছেন তিনি। এ নিয়ে উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ কামাল হোসেন জানান, বীজ, সার, পানি, জমি প্রস্তুত, চারা লাগানো, শ্রমিকের মজুরি, কাটা-মাড়াইসহ প্রতি বিঘায় চাষিদের খরচ হয় সর্বোচ্চ ৮ থেকে ৯ হাজার টাকা। এর মধ্যে কৃষক প্রতি বিঘায় উৎপাদন করবে গড়ে ৩০ থেকে ৩২ মণ ভুট্টা। প্রতি মণ শুকনা ভুট্টা বাজারে বিক্রি হচ্ছে কমপক্ষে ৭৬০ টাকায়। কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ফলে ভুট্টা চাষে এ উপজেলার কৃষকদের মাঝে আগ্রহ বাড়ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ কিশোর আহমেদ বলেন, কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে চাষিরা ভুট্টার ভালো ফলন ঘরে তুলতে পারবে। এ ছাড়া ভুট্টা চাষে খরচ কম, কিন্তু দাম অনেক ভালো। এ ছাড়া ভুট্টার গাছ গো-খাদ্য ও জ্বালানি হিসেবেও ব্যবহার করা যায়। বর্তমানে বাজারে ভুট্টার চাহিদাও বেশ।