দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে বানিজ্যিক ভাবে কমলার চাষ করে সফলতার আলো দেখছেন চাষী বদরুল আলম বুলু। তিনি কমলা চাষ করে এলাকার মানুষের নিকট রাতারাতি পরিচিতি পেয়েছেন। আমাদের দেশে কমলা চাষ নিয়ে সংশয় ছিলো কৃষি বিশেষজ্ঞসহ সাধারন মানুষের। কিন্তু সেই সংশয় দুর করে সমতল ভুমিতে কমলা চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন এবং সফল কমলা চাষী হওয়ার যোগ্যতা গড়েছেন বদরুল আলম বুলু। ঘোড়াঘাট উপজেলা ছাড়াও আশেপাশে ২০ থেকে ৩০ কিলোমিটার দুর থেকে লোকজন তার কমলা বাগানে এসে কমলার স্বাদ নেওয়া ছাড়াও বাগান থেকে কেমিক্যাল মিশ্রন ছাড়াই টাটকা কমলা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছেন। তার বাগানে গিয়ে দেখা যায় অনেকে পরিবার ছেলেমেয়েসহ কমলার বাগানে এসে ছবি তুলছেন। কেউ কেউ আবার হাত দিয়ে ছুয়েও দেখছেন। গত রোববার তার কমলার বাগানে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি গাছে সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে থোকায় থোকায় লাল টকটকে কমলা ঝুলছে। প্রথম দেখাতে কোন বিদেশি কমলার বাগান মনে হতে পারে। কিন্তু না বাগানটি গড়ে তুলেছেন ঘোড়াঘাট উপজেলার নুরজাহানপুর গ্রামের ডিপ্লোমা কৃষিবিদ যুবক বদরুল আলম বুলু। তিনি ডিপ্লোমা শেষ করে চাকুরী না খুজে সাত বিঘা জমিতে চাষ করেছেন কমলা ও আপেল কুল। এর মধ্যে সাড়ে তিন বিঘায় কমলা চাষ করেছেন। তিনি জানান, এবারেই তিনি প্রথমবারের মত বানিজ্যিভাবে কমলার চাষ করেছেন। আগে তিনি পরীক্ষামুলক মাত্র হাতেগনা কয়েকটি কমলার গাছ নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন। সেই গাছগুলি থেকে আশানুরুপ ফল পাওয়ায় ২০২৪ সালে বানিজ্যিকভাবে কমলার চাষ শুরু করেন। চাষকৃত কমলা চায়না, ভুটান ও দার্জিলিং জাতের। সাড়ে তিন বিঘার উপরে প্রায় ২শত ৫০টি কমলার গাছ লাগিয়েছেন। গাছ প্রতি দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা হিসেবে প্রায় সাড়ে ৪ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। তিনি আরো জানান, প্রতিটি গাছ থেকে থেকে ২০ থেকে ৩০ কেজি পরিপক্ক কমলা পাওয়া যাবে। যা বিক্রি করে ৭/৮ লাখ টাকা পাওয়ার আশা করছেন। কমলার পাশাপাশি তিনি ২৫০টাকা হিসেবে একেকটি কমলার চাড়াও বিক্রি করছেন। তার কমলা অর্গানিক পদ্ধতিতে চাষ করা হয়েছে। প্রতিটি গাছে অর্গানিক সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। বুলুর এই কমলার বাগানের খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ার পর কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা, মিডিয়া কর্মী, আগ্রহী চাষিসহ বিভিন্ন শ্রেনীর দর্শনার্থীদের ভিড় কমলা বাগানে লেগেই আছে। বুলুর এই কমলার বাগান ইতিমধ্যেই পরিদর্শন করেছেন ঘোড়াঘাট পৌর বি এন পির সভাপতি ও সাবেক মেয়র আব্দুস সাত্তার মিলন, তিনি বলেন, কমলা খেয়েছি, বেশ মিষ্টি। এ ছাড়াও ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার রফিকুল ইসলাম ও কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ কামরুজ্জামান কমলার বাগান পরিদর্শন করেছেন। কৃষি অফিস তাকে সব সময় টেকনিকেল সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছেন বলে তিনি জানান। অনেকেই বুলুর কমলার বাগানে এসে ভুয়সি প্রশংসা করছেন। বুলুর কমলা চাষে সফলতা দেখে পাশ্ববর্তি বিসমিল্লাহ নার্সারী ও আরিফুল নার্সারী সল্প পরিসরে কমলার চাষ শুরু করেছে।