অভয়নগরে খেজুরের গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত গাছিরা

 যশোরের যশ খেজুরের রস। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও যশোরের অভয়নগর উপজেলার গাছিরা শীতের শুরুতেই খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য ব্যস্ত হয়ে উঠেছে। প্রাচীন বাংলার ঐতিহ্য এ উপজেলা এক সময় খেজুরগুড়ের জন্য পরিচিত ছিলো। শীত শুরু হবার সাথে সাথে খেজুর গাছ (তোলা)কাটার প্রতিযোগিতা পড়েছে গাছিদের মধ্যে। সেই সাথে রসও। গৌরব আর ঐতিহ্যের প্রতীক এ অঞ্চলের খেজুর গাছ। অনেকে এটা শখের বসে বলে থাকেন মধুবৃক্ষ। উপজেলায় প্রায় প্রতিটি গ্রামের ঘরে ঘরে শুরু হবে গুড় পাটালির উৎসব, বাড়িতে বাড়িতে চলবে খেজুরের রস জ্বালিয়ে পিঠা পায়েস সহ হরেক রকমের খাবারের ধুম। মৌসুম শুরু হতে না হতেই গাছিরা দড়ি, দা, ঠুঙ্গি সহ গাছ তোলার প্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে গাছ তোলায় ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। রস সংগ্রহের পূর্ব প্রস্তুতি হিসাবে খেজুর গাছের আগায় তোলা দেওয়ার কাজ চলছে। গাছি দা দিয়ে খেজুর গাছের মাথার সোনালি অংশ বের করা হয়। যাকে এ অঞ্চলের ভাষায় বলা হয় গাছ তোলা।

নবান্নের শীতের আমেজ শুরু হয়েছে। তাই প্রতি বছরের মতো উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের প্রায় আট শত গাছীরা গাছতোলা শুরু করেছেন। ৮ থেকে ১৪ দিন পর নোলন স্থাপনের মাধ্যমে শুরু হবে সুস্বাদু খেজুর রস আহরণের মূল কাজ। এর কিছু দিন পরই গাছে দেওয়া হবে মাটির পাতিল। সংগ্রহ করা হবে মিষ্টি খেজুরের রস। খেজুরের রস ,গুড় পাটালির জন্য বিখ্যাত হওয়ায় গর্ববোধ করে স্থানীয়রা।

এই মৌসুমে খেজুরের রস দিয়ে গ্রামিন জনপদে শুরু হয় শীতের আমেজ। শীত যত বাড়বে ,খেজুর রসের মিষ্টি ও ততো বাড়বে। শীতের সবচেয়ে বড় আকর্ষন দিনের শুরুতে খেজুরের রস, সন্ধার রস ও খেজুরের গুড় পাটালি। পিঠা ও পায়েস তৈরিতে আবহমান কাল থেকে খেজুরের গুড় অতপ্রত ভাবে জড়িতো।

অভয়নগর উপজেলার বাগদা গ্রামের হাসান ফকির বলেন, দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে খেজুরের রস সংগ্রহ করি। আমাদের যশোরের খেজুরের রস খুব নাম করা। শহর থেকে আমার রস ও গুড় কিনতে অনেক মানুষ ছুটে আসে। এতে করে আমার অনেক লাভ হয়। সিদ্ধিপাশা গ্রামের নজরুল ঢালী বলেন, গত বছর আমি ৩০০ খেজুরের গাছ কেটে ছিলাম। অনেক লাভ হয়েছিলো আমার। এই জন্য এই বছর আরো বেশি গাছ কাটবো।

অভয়নগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. লাভলী খাতুন বলেন, অভয়নগর উপজেলায়  ৩৩ হাজার রস আহরণ কারি খেজুরের গাছ রয়েছে। যা থেকে প্রায় ৪০০ মেট্রিক টন গুড় উৎপাদন হবে।