তিন সাঁওতাল হত্যায় সাবেক এমপি কালামের বিচার দাবি

এফএনএস (মোঃ শামিম উল হক শাহিন; গাইবান্ধা) : | প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৫:৩৫ পিএম
তিন সাঁওতাল হত্যায় সাবেক এমপি কালামের বিচার দাবি

গাইবান্ধার সাঁওতাল পল্লীতে সশস্ত্র হামলা, নিপীড়ন, অগ্নিসংযোগ, লুটপাট, হত্যার মামলায় আসামি সাবেক এমপি অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদকে গ্রেফতার ও সমপ্রতি ব্রিটিশ সরেনের বাড়িতে অগ্নিসংযোগকারী ভূমিদস্যুদের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবিতে গাইবান্ধা নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থার (গানাসাস) সামনে শনিবার আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের উদ্যোগে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। দশ বছরেও গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে তিন সাঁওতাল হত্যার বিচার হয়নি, বাস্তবায়িত হয়নি কোনো আশার বাণী। নির্যাতনের শিকার আদিবাসী সাঁওতালরা বর্তমানে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। উপরন্ত নতুন করে সাঁওতালদের বাড়িতে আক্রমণ করছে ভূমিদস্যুরা। ২০১৬ সালের ৬ নভেম্বরের ঘটনার করুণ কাহিনী উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, আহতরা উপযুক্ত চিকিৎসার অভাবে কেউ পগু, কেউ শরীরে গুলির স্প্রিন্টার নিয়ে অসহ্য যন্ত্রণায় কর্মক্ষমতা হারিয়ে জীবন অতিবাহিত করছেন।বক্তারা আরও বলেন, শ্যামল, মঙ্গল ও রমেশ হত্যাকান্ড ঘটনার পর থমাস হেমব্রম বাদী হয়ে স্থানীয় তৎকালীন সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদসহ ৩৩ জনকে আসামী করে একটি হত্যা মামলা করেন। কিন্ত বিচার হওয়া তো দূরের কথা মামলার আসামি সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বুলবুল আকন্দসহ অন্যান্য মূল আসামিদের কেউই গ্রেফতার হয়নি। এছাড়া সাহেবগঞ্জ বাগদা ফার্ম ইক্ষু খামারের সাঁওতালদের বসবাসকৃত ১ হাজার ৮শ’ ৪২ একর পৈত্রিক সম্পত্তি ফেরত দেয়ার ব্যাপারে কোনো অগ্রগতি হয়নি। বক্তারা  বলেন, ভূমিদস্যু রফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে দুর্বৃত্তরা অতি সমপ্রতি রাজাহার ইউনিয়নের রাজাবিরাট এলাকায় আদিবাসী সাঁওতাল পল্লীর ব্রিটিশ সরেনের বাড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে । তারা ব্রিটিশ সরেনের বৃদ্ধ মাকে মারপিট করে গুরুতর আহত করেন। কিন্তু রফিকুল চেয়ারম্যান গ্রেফতার হলেও অন্যান্য দুর্বৃত্তরা এখনও গ্রেফতার হননি। অবিলম্বে দুর্বৃত্তদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবি জানান বক্তারা। আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদের আহ্বায়ক এ্যাড. সিরাজুল ইসলাম বাবুর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সাহেবগঞ্জ-বাগদাফার্ম ভূমি উদ্ধার সংগ্রাম কমিটির সভাপতি ফিলিমন বাস্কে, পরিবেশ আন্দোলনের নেতা ওয়াজিউর রহমান রাফেল, বিশিষ্ট আইনজীবী মোহাম্মদ আলী প্রামাণিক, বাংলাদেশ প্রগতি লেখক সংঘ, জেলা সম্পাদক রজতকান্তি বর্মন, জনউদ্যোগের সদস্য সচিব প্রবীর চক্রবর্ত্তী, আদিবাসী-বাঙালি সংহতি পরিষদ, সদর উপজেলার আহ্বায়ক গোলাম রব্বানী মুসা, আইনজীবী কুশলাশীষ চক্রবর্ত্তী সাগর, সমাজ ও মানবাধিকার কর্মী মনির হোসেন সুইট, ফারুক কবির, কাজী আব্দুল খালেক , মোর্শেদ হাবীব দীপন, আদিবাসী নেতা ব্রিটিশ সরেন প্রমুখ। প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিলে তীর-ধনুক বাদ্যযন্ত্রসহ বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ফেস্টুন নিয়ে সাঁওতাল নারী-পুরুষরা অংশ নেন। 

আপনার জেলার সংবাদ পড়তে