রাজনগর উপজেলা বিএনপির দীর্ঘ দিনের গ্রুপিংয়ের আবসান

দীর্ঘ দিন যাবত চলে আসা রাজনগর  উপজেলা  বিএনপির গ্রুপিংেেয়র নিরসন করল জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটি । 

জানা গেছে, মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর  উপজেলায় জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি নাসের রহমান  গ্রুপ ও  সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান গ্রুপিং ছিল দীর্ঘ দিনের দুটি গ্রুপের আলেদা আলেদা কমিটিও ছিল। মিজান গ্রুপের কমির সভাপতি  ছিলেন  এমরান লতিফ খোকন সাধারণ সম্পাদক  ছিলেন আসরাফুজ্জামান খান নাহাজ। এদিকে

জেলা কমিটি কর্তৃক  অনুমোদিত আরেকটি কমিটি এ কমিটি নাসের রহমান গ্রুপ নামে পরিচিত ছিল এমিটির সভাপতি ছিলেন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো.জিতু মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মো.আব্বাস আলী মাষ্টার। এ কমিটি চলমান থাকলেও দলের একটি বৃহৎ অংশ কে নিষ্ক্রিয় করে রাখা হয়। এক পর্যায়ে এ কমিটি থেকে ৪৭ জন পদত্যাগ করেন এতে আরেকটি গ্রুপ তৈরী হয়। অংশের নেতৃত্বে ছিলেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাকিম সুন্দর বক্স। ফলে দলীয় কোন্দল বা গ্রুপিংয়ের  কারনে  স্থবির হয়ে পড়ে  রাজনগর উপজেলা বিএনপি কার্যক্রম। এমন অবস্থা চলে আসায়  সর্বশেষ ২৮ নভেম্বর বৃহস্পতিবার   সকাল ১১টায় মৌলভীবাজার  জেলা বিএনপির নতুন কমিটির  আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন এর বাসভবনে বিবাদমান  তিনটি পক্ষকে নিয়ে দীর্ঘ  বৈঠকে বসেন।  বৈঠকে তিনি সকল পক্ষের বক্তব্য দীর্ঘ সময় ধৈর্য সহকারে শুনেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। এসময় তিনি  দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সাংগঠনিক দিক নির্দেশনার ওপর শ্রদ্ধাশীল থেকে যথাযথ ভাবে তা মেনে চলার জন্য দলীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি  আহবান জানান। বৈঠকে দলীয় নেতৃবৃন্দের প্রতি উদ্দেশ্য  জেলা বিএনপির আহবায়ক ফয়জুল করিম ময়ূন বলেন,আপনারা ইতিমধ্যে জেনেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জেলা বিএনপির নতুন আহবায়ক কমিটি গঠন করেছেন । আমি এ জেলা বিএনপির আহবায়ক এর দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে জেলা কৃষকদল,মহিলা দলের কোন্দল বিরোধ নিরসন করে ঐক্যবদ্ধ করেছি।  এরই মধ্যে রাজনগর উপজেলা সহ জেলার অন্যান্য উপজেলা ও পৌর বিএনপির নতুন আহবায়ক কমিটি গঠনের লক্ষ্যে  জেলা কমিটির নেতৃবৃন্দের দিয়ে সাংগঠনিক টিম গঠন করে দিয়েছি। কর্মী সভা আহবানের জন্য  সভার তারিখ ও সময় বেঁধে হয়েছে। তিনি দলীয় নেতৃবৃন্দকে অতীতের দু:খ বেদনা ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে নব উদ্যোমে ঐক্য বদ্ধ হয়ে দলের কাজ করে যেতে নেতাদের প্রতি আহবান জানান। ফয়জুল করিম ময়ূন আরোও বলেন-  অতীতে যারা দলের জন্য জীবন বাজি রেখে রাজপথে আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় ছিলেন।  দলের জন্য জেলে গেছেন। মামলা হামলার শিকার হয়েছেন। এসব ত্যাগী নেতৃবৃন্দের   মাধ্যমেই দলের প্রতিটি স্তরের কমিটি গঠন করা হবে। ত্যাগী ও দুর্দিনের রাজপথের নেতৃবৃন্দদেরই  কমিটিতে স্থান করে দেওয়া হবে। এতে কোনও স্বজনপ্রীতির আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়া হবে না।

তিনি বলেন- অতীত অতীতই।অতীতকে টানাটানি না করে  সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে তারেক রহমান এর ডাকে সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশ নিয়ে দলকে তৃণমূল থেকে শক্তি শালী করার অনুরোধ জানান।  এ আহবানে সকল গ্রুপের নেতৃবৃন্দ খুশি হন এবং সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্য বদ্ধ থাকার ঘোষণা দেন। বৈঠকে অংশ নেন- জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জেলা কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, বিএনপির নেতা আব্দুল কাদির মিয়া,সাবেক মেম্বার মোস্তফা মিয়া,জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য আশরাফুজ্জামান খান নাহাজ, রাজনগর উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ হাকিম সুন্দর বক্স, এনামুল হক চৌধুরী, (১) এনামুল হক চৌধুরী (২),আব্দুল মুত্তাকিন মুক্তা,জগলু তালুকদার, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য মো.জিতু মিয়া,সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্বাস আলী মাষ্টার, নুরুল ইসলাম সেলুন,সাবেক চেয়ারম্যান কবির মিয়া, এমরান লতিফ খোকন, সুরুক আহমেদ ও সাবেক চেয়ারম্যান বরকতুজ্জামান প্রমুখ৷

           এবিষয়ে  প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে  উপজেলা  বিএনপির  সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম এ হাকিম সুন্দর  বকস বলেন জেলা বিএনপির এই উদ্যােগকে সাধুবাদ জানাই ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা অতীতের সকল ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার অংগিকার ব্যাক্ত করছি।

সদ্য বিলুপ্ত হওয়া উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক আব্বাস আলী  বলেন আমি সব সময় ঐক্যবদ্ধের পক্ষে ছিলাম জেলা বিএনপির উদ্যাগ সফল হয়েছে আমাদের মধ্যে আজ থেকে কোনো গ্রুপিং নেই। 

উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা বিএনপির বর্তমান আহবায়ক কমিটির সদস্য আসরাফুজ্জামান খান নাহাজ বলেন  তিন গ্রুপে বিভক্ত হওয়া উপজেলা বিএনপি  জেলা আহবায়ক কমিটির সফল উদ্যাগে গ্রুপিংয়ের নিরসন হওয়ায় তৃনমুল বিএনপি উচ্চাসিত। আগামী ৯ ডিসেম্বর উপজেলা বিএনপির  কর্মী সমাবেশে সকল ঐক্যবদ্ধ হয়ে সফল করবে।