মাদ্রাসা সুপারকে শারীরিক হেনস্থা ও প্রাণ নাশের হুমকি, থানায় মামলা

গাজীপুরের কাপাসিয়ার সিংহশ্রী ইউনিয়নের বড়িবাড়ি বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় কর্মরত তিনজন জাল সনদধারী ভুয়া শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ায় ওই শিক্ষকদের লোকজন ও জালিয়াত চক্র ভারপ্রাপ্ত সুপারকে শারীরিকভাবে হেনস্থা করেছে এবং প্রাণ নাশের হুমকি দিয়েছে। এ বিষয়ে শুক্রবার ভারপ্রাপ্ত সুপার মোঃ আবুল হাসেম আকন্দ বাদি হয়ে ছয়জনের নামে কাপাসিয়া থানায় একটি মামলা করেছেন।

ভারপ্রাপ্ত সুপার মোঃ আবুল হাসেম আকন্দ জানান, উপজেলার সিংহশ্রী ইউনিয়নের বড়িবাড়ি বালিকা দাখিল মাদ্রাসায় স্থানীয় একটি জালিয়াতচক্র ওই মাদ্রাসার সাবেক ভারপ্রাপ্ত সুপার মোঃ মেজবাহউদ্দিনের যোগসাজশে প্রয়োজনীয় সনদ, বিভিন্ন ধরণের কাগজ ও স্বাক্ষর জাল করে অবাধে নিয়োগ বাণিজ্য করে আসছিল। গত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সিংহশ্রী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি মোজাম্মেল হক মিন্টু ২০১০ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ওই মাদ্রাসার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। এ সময় সনদ জালিয়াতি করে ২০১৫ সালের ২৫ ডিসেম্বর জুনিয়র শিক্ষক মোসা.হাছিনাকে এবং ২০১৬ সালের ২০ আগস্ট ইবতেদায়ী প্রধান পদে মোঃ রফিকুল ইসলামকে নিয়োগ দেয় ওই চক্রটি। অপরদিকে ২০২৩ সালে সিংহশ্রী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আলাউদ্দিন আকন্দ ওই মাদ্রাসার সভাপতি নির্বাচিত হয়ে ২০২৩ সালের ১৯ অক্টোবর জালিয়াতি করে সহকারী মৌলভী পদে শফিকুল ইসলামকে নিয়োগ দেন। তারা তিনজন নিয়োগের পর থেকে এমপিওভুক্ত হয়ে নিয়মিত বেতনÑভাতা ভোগ করে আসছিলেন। কিন্তু গত বছর কাপাসিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ভারপ্রাপ্ত সুপার ওই মাদ্রাসায় কর্মরত ৮ জন নিবন্ধন সনদধারী শিক্ষকের সনদ যাচাইয়ের আবেদন করলে ৩ জন শিক্ষকের সনদ জাল বলে প্রতিবেদন দেয় এবং নাজমা বেগম নামে একজন শিক্ষকের কাগজপত্রের কোন হদিস পাওয়া যায়নি। পরে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর গত ৭ জানুয়ারি তাদের এমপিও বন্ধ করে এক প্রতিবেদনে তিন ভুয়া শিক্ষকসহ তাদের নিয়োগদাতাদের বিরুদ্ধে ভারপ্রাপ্ত সুপারকে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করে বেতনভাতা বাবদ উত্তোলিত মোট ১৭ লাখ ৫৬ হাজার ৮৩৮ টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ফেরত দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়। এ প্রতিবেদন পাওয়ার পর থেকে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্দ হয়ে বুধবার সন্ধ্যায় ভুয়া শিক্ষক হাসিনার ভাসুর মোঃ আফাজউদ্দিন বড়িবাড়ি চৌরাস্তা এলাকায় ভারপ্রাপ্ত সুপারকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং তার জীবন নাশের হুমকি দেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গতকাল তার গালিগালাজ সংক্রান্ত এ ভিডিওটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় শুক্রবার ভারপ্রাপ্ত সুপার বাদী হয়ে তিনজন ভুয়া শিক্ষক, সাবেক ভারপাপ্ত সুপার মোঃ মেজবাহউদ্দিন ও সাবেক দুই সভাপতিকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার পরিদর্শক তদন্ত মাহমুদুল হাসান জানান, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।