বাংলা একাডেমির আমূল সংস্কার, ফ্যাসিবাদী দোসরদের অপসারণ এবং সাহিত্য পুরস্কার কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বাংলা একাডেমির সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ‘বিক্ষুব্ধ কবি-লেখক সমাজ’ ও ‘জাতীয় সাংস্কৃতিক বিপ্লব’ নামের দুটি সংগঠন।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী বিক্ষুব্ধ লেখক-কবি সমাজের সদস্যরা একাডেমির সামনে অবস্থান নিয়ে তাদের দাবির পক্ষে স্লোগান দেন। সমাবেশে বক্তারা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজমের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ফ্যাসিবাদীদের অপসারণ না করা পর্যন্ত বাংলা একাডেমি সংস্কারের কাজ এগোবে না।”
বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক এহসান মাহমুদ, লেখক আবিদ আজম, মামুন সারওয়ার, এবিএম সোহেল রশিদ সহ বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট লেখক-কবি। তারা দাবি করেন, বাংলা একাডেমির পুরস্কার ‘ফ্যাসিবাদের দোসরদের’ দেওয়া হয়েছে, যা তাদের জন্য অপমানজনক। তারা আরও বলেন, “যারা এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন, তাদের মধ্যে অনেকে যোগ্য হলেও, কিছু অযোগ্য ব্যক্তিকে পুরস্কৃত করা হয়েছে, যারা সরকারের সমর্থক ছিল।”
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারের ঘোষিত তালিকা স্থগিত করার পর এই ঘেরাও কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। একাডেমি কর্তৃপক্ষ শনিবার (২৫ জানুয়ারি) পুরস্কার তালিকা স্থগিত করার ঘোষণা দেয় এবং পরবর্তী তিন কর্মদিবসের মধ্যে পুনর্বিবেচনার পর নতুন তালিকা প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেয়।
বিক্ষুব্ধ লেখক-কবি সমাজের আহ্বায়ক আবিদ আজাদ বলেন, “ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় বাংলা একাডেমিতে অনেক অযোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাদের অপসারণ করা উচিত।” কবি শামস মুসা বলেন, “বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক মোহাম্মদ আজমের সংস্কৃতির বিপ্লবের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হয়নি, তিনি সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মূল লক্ষ্য থেকে সরে গেছেন।”
এদিকে, পুরস্কারের ঘোষিত তালিকায় থাকা সাহিত্যিকদের মধ্যে কবিতায় মাসুদ খান, কথাসাহিত্যে সেলিম মোরশেদ, নাটক ও নাট্যসাহিত্যে শুভাশিস সিনহা, প্রবন্ধ/গদ্যে সলিমুল্লাহ খান, শিশুসাহিত্যে ফারুক নওয়াজ, অনুবাদে জি এইচ হাবীব এবং মুক্তিযুদ্ধে মোহাম্মদ হাননান ছিলেন।
বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারের উদ্দেশ্য ছিল বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের জীবিত লেখকদের মৌলিক অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া, তবে পুরস্কারের তালিকায় কোনো নারী লেখকের নাম না থাকায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা করা হয়, যা পরবর্তীতে পুরস্কারের স্থগিতের সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলেছিল।