জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলায় মেরুরচর ইউনিয়নের ফকিরপাড়া গ্রামে সরকারি নীতিমালা লংঘন করে দুটি গায়েবি বিদ্যালয় স্থাপনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে বকশীগঞ্জ উপজেলার ফকিরপাড়া গ্রামে।
বকশীগঞ্জ উপজেলার ফরাজীপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শফিকুল ইসলাম বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ বিভিন্ন দপ্তরে ওই ঘটনার প্রতিকার দাবী করে অভিযোগ দায়ের করেছেন। ওই অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দূরত্ব সনদ, চতুর্দিকে চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনাপত্তিপত্র জাল করে উত্তর ফকিরপাড়া পূর্ব কলকিহারা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও চর পশ্চিম ফকিরপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে দুটি গায়েবি বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। ওই গায়েবি বিদ্যালয় স্থাপনের জন্য মহলগিরি গ্রামের দূর্নীতিগ্রস্থ প্রতারক আব্দুল মালেকের নের্তৃত্বে একটি প্রতারক চক্র
জমির দলিল, খাজনার রশিদ, মিউটেশন সহ সমস্ত ডকুমেন্ট জাল ও ভুয়া তৈরি করে শিক্ষা বোর্ডে জমা দিয়ে গায়েবি দুটি টিনসট বিদ্যালয় স্থাপন করেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেরুরচর ইউনিয়নের ফকিরপাড়া গ্রামে ফারাজিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় ও ফকিরপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় নামে দুটি এমপিওভূক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই ওই এলাকার শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। অপর দিকে উক্ত গ্রামের মধ্যবর্তী স্থানে সরকারি নিয়ম নীতি লংঘন করে আরো দুটি বিদ্যালয় স্থাপনের ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে । ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের একটি প্রতিনিধি দল উত্তর ফকিরপাড়া পূর্ব কলকীহারা নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও চর ফকিরপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপনের ঘটনাটি পরিদর্শন কালে পার্শ্ববর্তী চার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গের তোপের মুখে পরেন ওই পরির্দশ দল । এসময় পরিদর্শন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী চারটি বিদ্যালয়ের দূরত্ব নিয়ে কথা হয়। এখানে দেখা যায় সম্ভাব্য বিদ্যালয় দুটির উত্তরে ০১ কিমি দূরত্বে মেরুরচর হাছান আলী উচ্চ বিদ্যালয়, দক্ষিনে ৩০০ থেকে ৩৫০ গজ দূরত্বে ফকিরপাড়া নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, পূর্বে ৪০০ গজ দূরত্বে ফারাজিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় এবং পশ্চিমে ০১ কিমি দূরত্বে তিলকপুর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় অবস্থান বিদ্যমান রয়েছে । এসব বিদ্যালয়ের মধ্যবর্তী স্থানে আরো দুটি বিদ্যালয় স্থাপন সরকারি বিধি বহির্ভূত ও নিয়মনীতির চরম লংঘন বলে উল্লেখ করা হয়। তাছাড়া অভিভাবক সমাজের অনেকেই বলেন এই গ্রামের শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম। এক্ষেত্রে আশেপাশে চারটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকা সত্ত্বেও মধ্যবর্তী স্থানে আরো দুটি বিদ্যালয় স্থাপন করা হয় তাহলে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই শিক্ষার্থীর সংকটে পড়বে।
ফকিরপাড়া গ্রামের আঃ রাজ্জাক নামের এক অভিভাবক জানান অত্র এলাকায় শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম থাকায় নতুন করে আরো দুটি বিদ্যালয় স্থাপনের কোনই প্রয়োজনীয়তা নেই।
এ প্রসঙ্গে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসের একাডেমিক সুপারভাইজার শ্যামল কুমার রায় বলেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যাচাই-বাছাই সাপেক্ষেই অনুমোদন দিবেন। এটা আমাদের করার কিছু নাই।
বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ রানা বলেন অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে গায়েবি বিদ্যালয় স্থাপনের অভিযোগ প্রমাণিত হলে পরবর্তীতে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের ময়মনসিংহ অঞ্চলের পরিদর্শক আব্দুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এফ এন এস প্রতিনিধি কে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসারের দূরত্ব সনদ না পাওয়ায় এৰং স্কুল স্থাপনের যাবতীয় শর্ত পুরনে ব্যর্থতার কারণে ওই বিদ্যালয় দুটি অনুমোদন পাবে না মর্মে আমার প্রতিবেদনে উল্লেখ করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছি।