বাগেরহাটের মোল্লাহাটে চতুর্থ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে চড় মেরে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে আনিস আহসান নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনার পর তাৎক্ষণিক মুখ দিয়ে রক্তপাত হয় এবং আঘাত প্রাপ্ত বাম কানে গত ১৫ দিনেও কিছুই শুনতে পাচ্ছেনা শিশুটি। গত ১৩ জানুয়ারী উপজেলার উদয়পুর উত্তরকান্দী ২১ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওই ঘটনা ঘটে। ভিকটিম জুবায়ের ওই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র।
ওই ঘটনায় যথাযথ আইনী প্রতিকার দাবিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে।
ভিকটিম শিশু শিক্ষার্থীর মা রানু খানমের লিখিত অভিযোগে প্রকাশ, আমার একমাত্র পুত্র জুবায়ের ভূঁইয়া উদয়পুর উত্তরকান্দী ২১ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। গত ১৩/০১/২০২৫ ইং তারিখে সমাবেশ চলাকালে এক ম্যাডাম জুবায়েরকে বলেন, তুমি স্কুল ড্রেস পারোনি ? তখন উত্তরে জুবায়ের বলে আমার ড্রেস ভিজা থাকার কারণে পরে আসতে পারিনাই। তখন হঠাৎ করে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আনিস আহসান হিংসাত্মক মনোভাব নিয়ে এসেই কান ও মুখ লক্ষ করে প্রবল বেগে চপেটাঘাত করে। সাথে সাথে জুবায়েরের মুখ দিয়ে প্রচুর রক্ত বের হতে থাকে। এমতাবস্থায় তাকে বাড়ি যেতে না দিয়ে কান্নারত অবস্থায় জোর করে শপথবাক্য পাঠ করান ওই শিক্ষক। পরে টিফিনের সময় গুরুতর যখমী অবস্থায় বাড়ি ফিরলে পরিবারের পক্ষ থেকে মোল্লাহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। এরপর অসহনীয় কানের যন্ত্রণার কারণে গোপালগঞ্জ মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়।
ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকগণ জানান, সমাবেশের সময় ওই ছাত্রকে ড্রেস না পরে আসার কারণ জানতে চাইলে, সে জানায় তার ড্রেস ভিজা। এরইমধ্যে শিক্ষক আনিস আহসান এসেই জুবায়েরকে চড়মারে। এতে তার মুখ দিয়ে রক্তপাত হয়, এছাড়া তার কানে সমস্যা হয়েছে। এটা অত্যন্ত ন্যক্কারজনক ঘটনা, এর বিচার হওয়া উচিত বলেও উল্লেখ করেন তারা।
প্রধান শিক্ষক মোঃ সুক মিয়া শিকদার জানান, ঘটনার সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না, পরবর্তীতে বিষয়টি জানতে পারি, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা।
সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ খান জানান, আমার ক্লাস্টারের ২১ নং উদয়পুর উত্তরকান্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী জুবায়েরকে ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আনিস আহসান কর্তৃক চপেটাঘাতের অভিযোগের তদন্ত চলছে। তদন্তের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আতিকুর রহমান জুয়েল বলেন, ওই ঘটনার অভিযোগ পেয়ে সরেজমিনে তদন্ত করা হয়েছে, বাস্তবতার নিরিখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সহকারী শিক্ষক আনিস আহসান মুঠোফোনে জানান, ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষক গণ অনিয়ম দুর্নীতি করেন, কেবল আমি নিয়ম-কানুন মেনে চলার কারণে আমার বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ভাবে এই অভিযোগ করা হয়েছে।