ক্রসফায়ারে নিহত খুলনার রূপসার মিনা কামালের দেহরক্ষী শীর্ষ সন্ত্রাসী সাগর বয়াতি বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল। তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছিলো রামপালের গৌরম্ভা এলাকার সাধারণ মানুষ। তার বিরুদ্ধে ঢাকার (ডিএমপির) শ্যামপুর থানা ও রামপাল থানাসহ খুলনার বিভিন্ন থানায় প্রায় এক ডজন মামলা রয়েছে। সে রামপাল উপজেলার গৌরম্ভা ইউনিয়নের আদাঘাট এলাকার সাত্তার বয়াতির ছেলে। এদিকে, সন্ত্রাসী সাগর দীর্ঘদিন ঘাপটি মেরে থাকার পরে অবশেষে (১৯ জানুয়ারি) রাত আনুমানিক সাড়ে ১০ টায় রামপাল উপজেলার ১নং গৌরম্ভা ইউনিয়নের আদাঘাট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠ থেকে তাকে খুলনা র্যাব-৬ আটক করে। ওইদিন র্যাব সন্ত্রাসী সাগরকে রূপসা থানা পুলিশকে সোপর্দ করে। পরে ২০ জানুয়ারি খুলনার জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ। সন্ত্রাসী সাগর গ্রেফতার হওয়ায় এলাকার সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১০ সেপ্টেম্বর রাত আনুমানিক সাড়ে ৮ টারদিকে গ্রেফতারকৃত সন্ত্রাসী সাগর বয়াতি ও তার সহযোগিরা রূপসা উপজেলার নৈহাটী ইউনিয়নের ইলাইপুরস্থ ফ্রেস-সি ফুডের সন্নিকটে মেসার্স রাজ এন্টার প্রাইজ নামক একটি চিংড়ি মাছ সরবরাহকারী এজেন্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সামনে অবস্থান নেয়। সেখানে তারা একটি মটরসাইকেলের গতিরোধ করে তাদের হাতে থাকা ককটেল নিক্ষেপ করে দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে। তবে নিক্ষেপকৃত ককটেলটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। ওই মামলায় সাগরকে গ্রেফতার করা হয়। এছাড়া এই সন্ত্রাসী সাগরের বিরুদ্ধে ২০১৭ সালের ৮ জুলাই রামপাল থানার মাদক আইন মামলা নং, ৪, ২০১৯ সালের ৩০ ডিসেম্বর খুলনার বটিয়াঘাটা থানার অস্ত্র আইন মামলা নং-১০, ২০০৯ সালের ৩০ আগষ্ট বটিয়াঘাটা থানার মামলা নং-২৩, ২০২২ সালের ১৮ মে রামপাল থানার মামলা নং-১৬/৮৬, ২০২২ সালের ৬ জুন রামপাল থানার মামলা নং-৫/৯৫, একই বছরের ২৫ জুন রামপাল থানার মামলা নং-২২/১১২, ১ অক্টোবর রামপাল থানার মামলা নং-১, ওই বছরের ৬ জুলাই রামপাল থানার মামলা নং-৩/১১৮, ২০২৪ সালের ৮ মার্চ ডিএমপি’র শ্যামপুর থানার মামলা নং-১১ রয়েছে।এদিকে, র্যাবের ক্রসফায়ারে নিহত রূপসার সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মিনা কামালের একসময়ের দেহরক্ষী ছিল সন্ত্রাসী সাগর। এই সাগরের মিনা কামালের সাথে ছিলো দহরম-মহরম সম্পর্ক। এমনকি সন্ত্রাসী সাগর মিনা কামালের অবৈধ সবকিছু দেখভাল করতেন। মিনা কামাল সাগরকে যখন যেটা হুকুম করতো তখন সেটা চোখের নিমিষেই করে তার মন জয় করে তার কাছে বিশ্বস্ত এবং প্রিয় ওয়ে ওঠে। এই মিনা কামাল অনেক সময় সাগরকে আব্বা সম্মোধন করতেন। এছাড়া বাগেরহাট ও রামপালের শীর্ষ সন্ত্রাসী নিহত শান্ত’র আপন ভাগনে। সাগরের বিরুদ্ধে ওই এলাকায় সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদা নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি তার বিরুদ্ধে গরু চুরি, অর্থের বিনিময়ে পক্ষপাতিত্ব করে অন্যের জমি জোরপূর্বক দখল করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। সে অর্থের বিনিময়ে ভাড়াটে খুনি হিসেবেও কাজ করে বলে সূত্র জানিয়েছে।এ ব্যাপারে রূপসা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, ১নং আসামি সাগরকে ককটেল বিস্ফোরণ মামলায় র্যাবের সহযোগিতায় আটক করা হয়েছে। পরে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।