তাঁর জীবনের গল্প বিভীষিকাময়। সুস্থ-সবলভাবে পৃথিবীর আলো দেখলেও জীবনের একটি পর্যায়ে এসে পঙ্গু হয়ে যান আবু সাঈদ। তবে ভাগ্যাহত তিনি দমে যাননি। অদম্য ইচ্ছার জোরে হোটেল দিয়ে এখন তিনি জীবনের চাকা ঘোরানোর চেষ্টা করে চলেছেন। বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার পন্ডিতপুকুর গ্রামের আবু সাঈদ একসময় বাস চালাতেন। অনেক টাকা আয় করতেন। কিন্তু গত ২০০২ সালে একটি দুর্ঘটনা বদলে দিল সবকিছু। গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কমলপুরে এলাকায় বাস- ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে গুরুতর আহত হন তিনি। আবু সাঈদ বলেন, ‘দুর্ঘটনার পর বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আমার দুই পায়ের হাঁটু থেকে কেটে ফেলা হয়। অনেক ধার-কর্জ হয়ে যায় চিকিৎসায়। ভিক্ষা তো করতে পারব না। তাই কিছুদিন বেকার থাকার পর নন্দীগ্রাম উপজেলার পন্ডিতপুকুর বাজারে একটি দোকান ভাড়া নিয়েছেন। প্রতিমাসে দিতে হয় তিন হাজার টাকা দোকান ভাড়া। সেই দোকান ভাড়া নিয়ে হোটেল দিয়ে তার স্ত্রী, এক ছেলেকে নিয়ে ব্যবসা করছেন। দীর্ঘ ২১ বছর ধরে একটু একটু করে টাকা জমিয়ে কোনো রকমে তিন শতক জায়গা কিনে সেখানে টিনের ছাউনি তুলে জীবন-যাপন করছেন আবু সাঈদসহ তার পরিবার। আবু সাঈদের অসহায় এই জীবনে শুধুমাত্র প্রতিবন্ধী ভাতা ছাড়া সরকারি আর কোন আর্থিক সহায়তা মেলেনি। ছোট্ট এই ভারার হোটেল দিয়েই চলছে আবু সাঈদের সংসার। সমাজের বিত্তবানদের নিকট ও সরকারি সহায়তা পাওয়ার জন্য অনুরোধ জানান অসহায় সাঈদের পরিবার। ভিক্ষা না করে নিজে কিছু করে খাচ্ছি এটাই হয়তো সবার ভালো লাগে। এবিষয়ে নন্দীগ্রাম উপজেলা সমাজ সেবা অফিসার গোলাম মোস্তফা বলেন, আবু সাঈদ এর দুই পা নেই, সে প্রতিবন্ধী ভাতা পান। শুনেছি তিনি পন্ডিতপুকুর বাজারে হোটেল দিয়েছেন। মো ফিরোজ কামাল ফারুক, নন্দীগ্রাম,বগুড়া।