আইন-শৃঙ্খলার অবনতি

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

এফএনএস | প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারী, ২০২৫, ০৭:৩০ পিএম
নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

দেশে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে। প্রতিদিনই ঘটছে একাধিক খুনের ঘটনা। পথেঘাটে হানা দেওয়ার পাশাপাশি বাসায়ও হানা দিচ্ছে দুর্বৃত্তরা। অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার বাড়ছে। বাড়ছে খুনখারাবি, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ, রাহাজানি, লুটতরাজের মতো ঘটনা। ফলে মানুষের মধ্যে নিরাপত্তার অভাববোধ ক্রমেই তীব্র হচ্ছে। সারা দেশেই অপরাধ কর্মকাণ্ড বাড়ছে। প্রায় প্রকাশ্যে অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করা হচ্ছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে বলা হয়েছে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় গত বছরের ৫ ও ৬ আগস্ট দেশের বিভিন্ন থানা ও কারাগার থেকে লুট হওয়া অস্ত্র চলে গেছে ডাকাতদের হাতেও। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের সময় সারা দেশে অনেক থানায় হামলা হয়। অস্ত্র, গোলাবারুদ লুট হয়। কয়েকটি কারাগারেও হামলা হয়। অস্ত্র লুটের পাশাপাশি অনেক অপরাধীও বের হয়ে যায়। সম্প্রতি কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে জরুরি সেবা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র ও কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.) জানিয়েছিলেন, গণ-অভ্যুত্থানের সময় দেশের বিভিন্ন কারাগার থেকে দুই হাজারের বেশি বন্দি পালিয়েছিল। এর মধ্যে দেড় হাজারের মতো পলাতক বন্দিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কারাগার থেকে পালানো ৭০০ জন এখনো পলাতক। এদিকে অন্য খবরে জানা যায়, বেওয়ারিশ লাশ দাফনকারী সেবামূলক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলাম ২০২৪ সালে বেওয়ারিশ ৫৭০টি লাশ দাফন করেছে। ওদিকে দস্যুমুক্ত ঘোষণার ছয় বছর পর ফের দস্যুদের আবির্ভাব দেখা দিয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে। সমপ্রতি বনের বিভিন্ন এলাকা ও বনসংলগ্ন সাগরে জেলে অপহরণ, লুটপাটসহ বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটেছে। লুট হওয়া ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী যেমন তোড়জোড় শুরু করেছিল, সেটির গতি অনেকটাই কমে গেছে। অনেক ক্ষেত্রে মাঠ পর্যায়ের পুলিশ চেইন অব কমান্ডও মানছে না। মানছে না সদর দপ্তরের নির্দেশনাও। বিভিন্ন অজুহাতে তারা থাকছে নিষ্ক্রিয়। এমনিতেই গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর একটি দীর্ঘ সময় পুলিশের নিয়মিত কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। পুলিশের বহু গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ায় তাদের চলাচলেও সমস্যা রয়েছে। আর এই সুযোগে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ডাকাত, ছিনতাইকারী ও দস্যুরা। দিন দিন অপরাধ বাড়ছে। এ অবস্থা মানুষের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। মানুষ নিরাপদে মান-সম্মান নিয়ে বাঁচতে চায়। তাই সারা দেশে পুলিশি কর্মকাণ্ড দ্রুত স্বাভাবিক করতে হবে। প্রয়োজনে আবার যৌথ বাহিনীর অভিযান চালাতে হবে।